১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দিগন্ত সাহিত্যিক কবিতা

-


জহীর হায়দার
খুলে যাক শান্তির অহিংস দরোজা

হিংস্রতার এ জীবনবিনাশী বর্বর যুদ্ধ
আর নয় আর নয়--

যুদ্ধ নয় যুদ্ধ নয়
মানবতা মানবতা--
বেদনাবিধুর এ পৃথিবীর মাটি চায় শান্তি
চায় নিবিড় পদ্ম-শোভিত আলোকিত মনুষ্যজীবন--

হিংস্র মানুষের রক্তক্ষয়ী কাল
দ্রুত বিলুপ্ত হোক চৈতন্যের উদার মানবজমিন থেকে :
মুহূর্তে নিভে যাক শান্তি-খেকো নরপিশাচের নির্মম আগুন

জ্বল জ্বলে রওজার পবিত্র অভ্যন্তর থেকে বলুন ও রাসূল-- বলে উঠুন :
‘প্রাণ-ধ্বংসী আইয়্যামে জাহিলিয়াতের বীভৎস আগুন
দূর হোক দূর হোক দূর হোক-- ’
উদয়াস্তের মানবিক পৃথিবী থেকে
দূর হোক দূর হোক

খুলে যাক শান্তির অহিংস দরোজা--
বলে উঠুন হজরত-- বলে উঠুন আপনি
বলে উঠুন...

 


মুস্তফা হাবীব
পাথর কেটে নহর

মেঘ গলিয়ে রুহ আফজা শরবত তৈরি করো
অথবা ঝরাপাতার বিষণ্নতা চোখের আড়ালে রেখে
যৌবনের রঙ মননে ধরে রাখো, তবেই তুমি কবি!

রবীন্দ্র নজরুল জীবনানন্দকে অগ্রাহ্য করো,
এ কথা কাউকে বলি না,
কবিতায় আরেক দিগন্ত নির্মাণে দুঃসাহসী যোদ্ধা হতে বলি;
সহজ শব্দরসে জীবনের কঠিন রূপছবি অঙ্কন করতে বলি।

একই সঙ্গে আকাশ দেখে
সমুদ্র তলায় ঝিনুক কুড়ানো যায় না
যে তুমি আকাশে ময়ূর নীলিমার ওড়াওড়ি দেখবে, দ্যাখো,
যে কাগুজে মুদ্রায় পাহাড় আর
মঙ্গলগ্রহে বাড়ি বানাতে চাও, বানাও . ... .

বন্ধুরা, কখনো নাচতে নেমে ঘোমটা টেনো না,
কথা বলতে গিয়ে দাঁতে এঁটো না খিল;
দ্বৈতসত্তা লালনে জীবন সৌন্দর্যের বিলুপ্ত ঘটে নিশ্চিত।

পাথর কেটে নহর বানাতে পারলেই প্রশান্তি লাভ,
তবেই সমৃদ্ধ সৃষ্টির জন্য বাঁচবে কাল কালান্তর ;
অমৃতধারায় ভাসবে তুমি।

 


মোস্তফা হায়দার
কুমড়োডগায় মধ্যবিত্ত!

জলপাই রঙের গ্রেনেড আমার-পছন্দের
শিল্পের শোকেস ভাঙতে এসেছে কবিতার!
মানুষের সংসারে আকাশের বিশালতায়
দেহের কার্নিশ ভেঙে চলে হিংসার বসবাস!

জাগতে আর জাগাতে লাগে অঙ্গুলির নির্দেশ
সবুজের মায়ায় জাগে রাতের অপার সংসার
প্রকৃতির আস্তর খসে জন্ম নেয় মায়াহীনতার
কুমড়োডগায় দেখি মধ্যবিত্তের রঙহীন শোকেস!

সময়ে ডেকে যাওয়া কাকগুলো একেকটা প্রতিবন্ধী
চশমার ফ্রেম খোলে দেখতে যদি জলহীন আর্তনাদ!
দাঁতে দাঁত চেপে হিসেব পেতে বেহায়া সময়ের ছন্দে
কুঁড়েঘরগুলো জড়ো হচ্ছে ভেঙে দিতে সব দুরভিসন্ধী!

রাতের শরায় দিনের বিজয়, সকাল হাসে বিকেল চোখে
গাছেরা নীরব হলে সময় ধেয়ে আসে প্রতিশোধী বুকে!

 


মিজান ফারাবী
স্বাধীনতা

স্বাধীনতা,
মার্চ মাসেরই, গহিন কালো রাত,
স্বাধীনতা,
বীর জনতার, আগলে রাখা হাত।

স্বাধীনতা,
দিন পেরিয়ে, হাসে নতুন প্রাণ,
স্বাধীনতা,
মাঠ পাথারে, ছড়ায় ফুলের ঘ্রাণ।

স্বাধীনতা,
রাঙা আলোয়, সোনায় মাখা রেশ,
স্বাধীনতা,
স্বপ্নে আঁকা, বর্ণালি এক দেশ।

স্বাধীনতা,
আমার ভাইয়ের, রক্তে মাখা টান,
স্বাধীনতা,
গর্জে ওঠা, লাল সবুজের গান।

স্বাধীনতা,
স্বাধীন দেশের, বাড়ায় যে সম্মান,
স্বাধীনতা,
এক হয়ে আজ, বাঁচাই দেশের মান।

 

 

ইমামুল ইসলাম মুরাদ
স্বাধীনতা

আমি মাটির দেয়ালে লেখা স্বাধীনতা দেখেছি,
সদ্যোজাত শিশুর রক্তে লেখা স্বাধীনতা;
আমি দেখেছি পথচারীর দেহ থেকে
টপটপ করে ঝরে যেতে, স্বাধীনতা!

আমি দেখেছি, প্রতিটি কুমারীর চোখে বিভীষিকায়,
বিধবার কাতর হাহাকারে;
সীমহীন ভয় ও বেদনায় বিমূর্ত স্বাধীনতা!

আমি ক্ষয়িষ্ণু দেহ থেকে স্বাধীনতার সঙ্গীত শুনেছি,
শির-েদ করা আত্মাদের কণ্ঠে গাওয়া স্বাধীনতার গান।

এসব রক্তপাত দেখে আমি বলেছিলাম,
‘হে স্বাধীনতা, এবার তুমি, তোমার ঐশ্বর্যময় শক্তি দেখাও!’

অতঃপর ডুবে যাওয়া বিভ্রান্ত ছায়ার মতো স্বাধীনতা
আমার দিকে ঘুরে বলল,- ‘আমার শক্তির বীজ বপন করো

তোমাদের উর্বর সাহসী হৃদয়ে।’

 


নাদিরা বেগম
জীবন কাল

জীবনের তিনকাল পেরিয়ে
থেমে গেছে জীবন শেষাকলে এসে
চার দেয়ালের বন্দী জীবনে
জীবন এখন শূন্যতায় ভাসে।
জীবনে কি পেয়েছি কি পাইনি
যোগ, বিয়োগ পূরণ, ভাগ করি
হিসেবে ফলাফলটা আসে শূন্য।
শিশুকাল, কিশোর কাল কেটেছে
বাবা মায়ের আদরে, সোহাগে শাসনে
যৌবন কেটেছে জীবন যুদ্ধের ময়দানে
জীবন, জীবিকার অন্বেষণে।
সৃষ্টি কর্তা সৃষ্টি করেছেন দেহখানি
নানা রকম কল কব্জা দিয়ে
মরিচা ধরেছে সেই কল কব্জায়
বয়সের পরন্ত বিকালে।
অচল শরীরে বিকল যন্ত্র
কার্যক্ষমতা হারিয়ে গেছে,
স্মৃতির পাতায় খুঁজে বেড়ায়
ঝাঁপসা হয়ে স্মৃতি ভাসে।
জীবন কালের শেষ বেলা
সাঙ্গ হল সব খেলা
যেতে হবে মরণ বেলা
ডাকবে যখন উপর ওয়ালা।

 


পাপেল কুমার সাহা
অনেক বৃষ্টি হবে একদিন

রেওয়াজ লাল বর্ণে বর্ণিল
প্রার্থনায় সূর্যশক্তি
বেদনায় বিধ্বস্ত আবেগ
আপনা থেকেই তৃষ্ণার্ত থাকে
সবুজকে কালো মনে হয়;
কমলাকে কালো মনে হয়;
নীলকে বিরক্ত লাগে;
গোলাপীকে সাদা লাগে;
সাদাকে কালো;
কালার ব্লাইন্ড চক্ষুদ্বয়!
উপরোধের উপলব্ধি উপচে ভিন্নপথে
মশাল নেই
কণ্ঠেও কণ্টক দূর হয় না
আহ্! কি করি!
আশার দিশারী পাখির ডানা ভাঙ্গা
জলশূন্য সমুদ্র,
প্রকম্পিত হওয়ার বাসনায়
আকাশ অপেক্ষা করছে
সে যে বিশালতা দেখতে চায়
দাবানলের দহনে
পরিশিষ্ট ছাইও বাসনায় মত্ত
সবুজ আরাধনায়
‘সু’ সত্যিই কঠিন ইস্পাত খাড়া মানদণ্ডে!
মুখশ্রী মনের ভাষায়
অবলীলায় নোঙর করে
চাহনিতে আকাক্সক্ষা স্পষ্ট
একদিন অনেক বৃষ্টি হবে

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল