২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিশ্বসাহিত্যের টুকিটাকি

নোবেল বিজয়ীর প্রথম উপন্যাস
-

২০২০ সালের নোবেল বিজয়ী মার্কিন কবি লুইস গ্লুক কবিতার রাজ্য ছেড়ে কথা সাহিত্যের দিকে হাত বাড়িয়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ম্যারিগোল্ড এবং রোজ’ উপন্যাস লুইস গ্লুকের একটি জাদুকরী এবং ভাস্বর কথাসাহিত্য হিসেবে বিবেচিত। এই উপন্যাসে চরিত্রগুলো একাকার হয়ে গেছে জীবনের সাথে। উপন্যাসে স্থান পেয়েছে তার দুই যমজ মেয়ের জীবনের প্রথম বছরের বিস্ময়কর ঘটনাক্রম। একটি রূপকথার গল্পের মতো মনে হতে পারে। যেটি একটি বহু প্রজন্মের গল্পও। উপন্যাসের কাহিনীতে যে উপাদানগুলো রয়েছে তা জীবনেরই সারাৎসার। যমজদের পিতা এবং মা, দাদী, তাদের গোসলের সময় এবং ঘুমের সময় ইত্যাদির কাব্যিক ভাষার গদ্যে উপস্থাপনা। যা পাঠককে মুগ্ধ করে। যমজরা একে অপরের দুর্বলতা খোঁজে এবং আপন লোকদের ভালো হোক এটা কামনা করে। ম্যারিগোল্ড ও রোজ উপন্যাসের এই দুই যমজ। রোজ ম্যারিগোল্ডের অজাগতিকতা নিয়ে চিন্তিত। যমজরা সিঁড়ি বেয়ে উঠতে শিখেছে, তারা একে অপরকে অপরাধীর মতো বিবেচনা করে তাদের পাঁজরের দণ্ড দিয়ে, তারা কথা বলতে শুরু করে। রোজ বাথটাবে স্কুইটিং হাতির সাথে খেলতে খেলতে হাসছিল, যা মায়ের মতে ধৈর্য, ধী-শক্তি, আনুগত্য এবং প্রজ্ঞার প্রতিনিধিত্ব করে। সে এটা কিভাবে করে মেরিগোল্ড ভেবেছিল, পরে সে জানতে পারে। এটি একই সাথে দুঃখের এবং মজার কাহিনী। বিস্ময়ের অনুভূতির সাথে সাধারণ জীবনচিত্র এসেছে। দশটি ছোট অধ্যায়ে বিভক্ত- যদিও কালানুক্রমিক নয় , এই বইতে যমজ মেয়েদের জীবনের প্রথম বছর সম্পর্কে পাঠক জানতে পারে। ম্যারিগোল্ড এবং রোজের দাদি মারা যান, তাদের মা কাজে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে ভাবেন এবং তারা সমস্ত শিশুর মতো বিভ্রান্ত হয়। প্রথমে হামাগুড়ি, তারপর হাঁটা এবং আরোহণ, তারপর কথা বলা সব বিবরণ আছে এতে। বড়দের অসংলগ্ন কিছু আচরণ তাদের পীড়া দেয়, পারিবারিক এক পার্টির বীভৎস চিত্র তাদের আহত করে । যারা তাদের অচেনা তারা তাদের স্পর্শ করছে এবং তাদের ভেড়ার বাচ্চা এবং মুরগি বলে ডাকছে যদিও তারা মানব শিশু। রোজ বইয়ের শেষ দিকে কথা বলতে শিখেছে : যেহেতু সে কথা বলা শুরু করেছিল, রোজ অনুভব করেছিল যে সে একজন অত্যাচারী হয়ে উঠছে। এবং মেরিগোল্ড আগের চেয়ে শান্ত ছিল। তেরোটি কবিতার বই এবং দুটি প্রবন্ধের সংকলন রচনা করে গ্লুক হাত দেন এই বইয়ে। বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা ‘কারকানেট’ । তিনি আগে যা লিখেছেন তার থেকে ভিন্ন, একই সাথে এটি অনিবার্য, অতিক্রান্ত। গ্লুকের জন্ম ১৯৪৩ সালে নিউ ইয়র্ক সিটিতে। বড় হয়েছেন লং আইল্যান্ডে। তিনি পুলিৎজার, ন্যাশনাল হিউম্যানিটিজ মেডেলসহ আরো কিছু পুরস্কার পেয়েছেন। গ্লুুক যখন নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন, তখন সুইডিশ একাডেমি সাইটেশনে বলেছিল, তাকে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে ‘তার অবিশ্বাস্য কাব্যিক কণ্ঠস্বর যে কঠোর সৌন্দর্যের সাথে ব্যক্তি অস্তিত্বকে সর্বজনীন করে তোলে’ সে জন্য। সেই প্রশংসা তিনি এ উপন্যাসেও পেতে পারেন।


আরো সংবাদ



premium cement