২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইউরোপে নজরুল চর্চা

ইউরোপে নজরুল চর্চা -

[গত সংখ্যার পর]

‘নজরুল ফাউন্ডেশন কানাডা’ কয়েক বছর ধরে দেশে-বিদেশে নজরুল চর্চা অব্যাহত রেখেছে। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও কর্ম নিয়ে সরব রয়েছেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান গবেষক কবি নুরুল ইসলাম।
ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মবিজ্ঞান বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফিলিস কে হারমান নজরুলবিষয়ক গবেষকদের অন্যতম। নজরুলের কবিতার চিত্রিত চারুকল্পে বহুরৈখিক সংস্কৃতি র্চচা, মানবতাবাদ, প্রেম, শত বছরের কবিতার বাঁকবদল, দ্রোহ, শোষকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম, উত্তরাধুনিকতা, বৈশ্বিক পরিবেশ চিন্তা, কৃষকের ভাতের অধিকার, নারীর অধিকার, তৃণমূল মানুষের মৌলিক অধিকার সর্বোপরি ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’র অমোঘ দর্শনের যে উপাদান বিদেশী পণ্ডিতরা পেয়েছেন তাতে তারা মোহিত ও আকৃষ্ট হয়েছেন।
বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী উপাচার্য এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উইনস্টন ই ল্যাংলি ইংরেজি ভাষাভাষি মানুষের কাছে নজরুলকে পরিচয় করিয়ে দেয়া জন্য KAZI NAZRUL ISLAM : THE VOICE OF POETRY AND THE STRUGGLE FOR HUMAN WHOLENESS শিরোনামে একটি বিশাল গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন। ২০০৭ সালে এটি বই হিসেবে প্রকাশিত হয়। দুই বছর পর বেরোয় দ্বিতীয় সংস্করণ। অনেকের মতো ল্যাংলিও বিশ্বাস করেন, ইংরেজ কবি শেলির দৃষ্টিভঙ্গি নজরুলের রচনায় প্রকাশ পেয়েছে। ২০০২ সালে লসঅ্যাঞ্জেলসে অনুষ্ঠিত নজরুল কনফারেন্সে প্রফেসর ল্যাংলি নজরুলকে নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন। তিনি তার লেখায় নজরুলকে সমসাময়িক বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ফরাসি ভাষায় কাজী নজরুল ইসলাম : পোয়েমস চয়েসিস KAZI NAZRUL ISLAM : POEMS CHOISIS (French), কাজী নজরুল ইসলাম : চ্যান্সন্স KAZI NAZRUL ISLAM : CHANSONS (French) এবং স্প্যানিশ ভাষায় কাজী নজরুল ইসলাম : পেওমাস এলিগিডোস KAZI NAZRUL ISLAM : PEOMAS ELEGIDOS (Spanish) গ্রন্থগুলো সাম্প্রতিককালে বেশ আলোচিত।
জাপানের ড. কুয়েকার নিউয়া (DR. KUEKER NEUA) নজরুলকে নিয়ে অনেক গবেষণা করেছেন। একইভাবে কবি নজরুলকে নিয়ে কাজ করা বিদেশীদের মধ্যে নেদারল্যান্ডসের লেখক-সাংবাদিক ড. পিটার কাস্টার্স, চীনের ইয়াং উইং মিং প্রমুখের নাম উল্লেখ করতে হয়। তারা নজরুলের সাহসী ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করেছেন।
কাজী নজরুল ইসলামকে মনে করা হয় আদর্শিক ধ্রুব তারার মতো। তার ‘গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নেই, নহে কিছু মহীয়ান...’ এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মানুষ নজরুল বড় হয়ে উঠেছেন। নজরুল মানুষের মহত্ত্বকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। মাত্র ২৩ বছরে তিনি সাড়ে চার হাজার গান রচনা করে গেছেন। নজরুল ইনস্টিটিউট কবির ১৮০০ গানের স্বরলিপি তৈরি করেছে। তিন হাজার ১৬টি গানের একটি সঙ্কলন প্রকাশ করেছে। http://nazrulinstitute.gov.bd/
ইউরোপে নজরুল চর্চায় নতুন আলোচনার বিষয় হচ্ছে সাংবাদিকতায় নজরুল। গবেষণা মতে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এক বাঁধভাঙা প্রতিভা। বিদ্রোহী কবি হিসেবে ভুবনখ্যাত। সাংবাদিক হিসেবে উপমহাদেশে স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষক। ১৯২০ সালের ১২ মে মাসিক মোসলেম পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু করেছিলেন। ১৯৪১ সাল পর্যন্ত ২১ বছরে বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেছেন। আকাশচুম্বী কবি খ্যাতির নিচে কিছুটা হলেও চাপা পড়ে গেছে তার সাহসী সাংবাদিকতার ইতিহাস।
নজরুল ছিলেন বিশ্বযুদ্ধের আপসহীন লড়াকু নৈসিক। একসময় অস্ত্রের বদলে কলম হাতে তুলে নিয়েছিলেন। ‘নবযুগ’ ও ‘ধূমকেতু’র মতো কাগজে কবিতার পাশাপাশি সাংবাদিকতায় ঝড় তুলেছেন। সমকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক যন্ত্রণা লাঘবে সাংবাদিকতায় নব যুগান্তরের জন্ম দিয়েছেন। ঘুমন্ত ভারতবাসীকে জাগ্রত করে সাম্য-মৈত্রী ও স্বাধীনতার বীজ বপন করেছেন। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা সেই বীজের ফসল।
জাতীয় জাগরণের বংশীবাদক কাজী নজরুল আধুনিক বাংলা গানের জগতে ‘বুলবুল’ নামে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। বিশ্বযুদ্ধোত্তর ভারতবর্ষের মানুষ কেন পিছিয়ে পড়েছে, সে কথা তিনিই প্রথম দক্ষতা ও সাহসিকতার সাথে তুলে ধরেছেন। শাসক-শোষক শ্রেণীর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে অদম্য মেধা ও সাহসের পরিচয় দেন। সংবাদ মাধ্যমে জনগণের মনে কথা তিনি যথার্থভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। তার বিদ্রোহ ছিল উপনিবেশের বিরুদ্ধে, জাত-পাত ও বিভাজনের বিরুদ্ধে, অসত্য-অসুন্দরের বিরুদ্ধে।
বিদ্রোহী নজরুলের সংবাদ তৈরি এবং প্রকাশের দক্ষতা ছিল অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও শিক্ষামূলক। বৈশ্বিকভাবে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকতার বর্তমান অবস্থা তখন ছিল না। দেশের সংবাদপত্র কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তা তিনি জানতেন। সাংবাদিকতার ব্যাপারে তার প্রতিভা দেখে সমকালীন সম্পাদকরা তাজ্জব বনে গেছেন।
নজরুল ইসলামের লেখায় অবিচার ও শোষণ বিরোধী গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। নির্যাতিত ও বঞ্চিতদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে শোষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে প্রেরণা জুগিয়েছে। তার ‘জার্নালিজম অব আউটরেজ’ সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছিল। প্রতিটি লেখার প্রতিক্রিয়া দেখে সমকালীন খ্যাতিমান রিপোর্টাররা বিস্মিত হয়েছেন।
নজরুল জানতেন তথ্য কোথায় খুঁজতে হবে এবং কিভাবে এগুলোকে একটির সাথে আরেকটিকে সংযুক্ত করতে হবে। প্রমাণ বিশ্লেষণ, যাচাই ও পটভূমি ব্যাখ্যার মাধ্যমে তিনি অর্থবহ প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। সাংবাদিকতার নৈতিক মান বজায় রাখতে গিয়ে আইনভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়ানোর চেষ্টা করেননি। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় গোয়েন্দা পুলিশের মতো সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণ তুলে ধরতেন। বিজ্ঞানীর মতো প্রমাণ আবিষ্কার করতেন।
‘নবযুগ’ পত্রিকার মাধ্যমে কাজী নজরুল সাংবাদিকতার জগতে নিজস্ব স্বকীয়তা প্রকাশে সক্ষম হন। অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের অর্থায়নে ১৯২০ সালের ১২ জুলাই দৈনিক ‘নবযুগ’ নামে এই দৈনিক প্রকাশিত হয়। সম্পাদক হিসেবে ফজলুল হকের নাম মুদ্রিত হলেও মূলত নজরুল ছিলেন কার্যনির্বাহী সম্পাদক। ‘নবযুগ’ পত্রিকায় কবি লিখেন ‘কোথা থেকে এলো লেখার জোয়ার, তরবারী ধরা হাতে/কারার দুয়ার ভাঙ্গিতে চাহিনু, নিদারুণ সংঘাতে ’।
নবযুগ পত্রিকায় নজরুল ইসলাম স্বাধীনতার ঝড় তুলতে শুরু করলেন। নজরুলই প্রথম কবিতা দিয়ে পত্রিকার সম্পাদকীয় লেখার সূচনা করেন। ‘মেকাপ করিয়া অভিনেতা হয়/নেতা নাহি হওয়া যায়/নিরহংকার নির্লোভ নেতা/কোন কিছু নাহি চায়।/অভিনন্দন মালা চাহে নাকো/চাহে না জ্বয়ধ্বনি/চাকরের মত দেশ সেবা করে/তাহাকেই নেতা জানি।’
নবযুগে ‘ধর্মঘট’ বা ‘উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন’ প্রবন্ধে উপেক্ষিত কৃষক-মজুর সমাজের প্রতি নজরুলের অসাধারণ মমত্ববোধ প্রকাশ পায়। নবযুগে নজরুলের বড় বড় অক্ষরের কাব্যিক শিরোনাম আর জ্বালাময়ী সম্পাদকীয় লেখা ছিল পাণ্ডিত্য ও বৈদগ্ধ্যে সমৃদ্ধ। মৃত্যুভয়কে পেছনে ঠেলে তার অসাধারণ খবর প্রকাশের অসীম সাহসিকতা সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। শক্তিশালী ও শাণিত সম্পাদকীয় লিখে তিনি বিদেশী শোষক ও অত্যাচারী শাসকদের ভিত কাঁপিয়ে তোলেন। ইংরেজ সরকার তার কয়েকটি গ্রন্থ ও পত্রিকা নিষিদ্ধ করে এবং তাঁকে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।
আদালতে নজরুলের রাজবন্দীর জবানবন্দীতে ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। ইংরেজ সরকারের জেল-জুলুমের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রায় চল্লিশ দিন তিনি একটানা অনশন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ তাঁকে গ্রন্থ উৎসর্গ করে ভালোবাসা জ্ঞাপন করেন। অন্য দিকে তদানীন্তন ব্রিটিশ সরকারের শ্যেন দৃষ্টি পড়ে পত্রিকাটির ওপর। সরকার একাধিকবার সতর্ক করেও দমাতে পারেনি। অবশেষে ‘মুহাজিরিন হত্যার জন্য দায়ী কেদ শীর্ষক প্রবন্ধের জন্য ‘নবযুগ’ পত্রিকার জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করে।
১৯২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মওলানা আকরম খাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় দৈনিক মোহাম্মদী। পরবর্তীতে দৈনিক সেবক। উভয় পত্রিকায় নজরুল সম্পৃক্ত ছিলেন। কিন্তু নজরুলের প্রদাহজনক লেখা প্রকাশের হিম্মত তিনি বেশি দিন দেখাতে পারেননি। নজরুলের লেখা সেন্সর করায় রাগ করে এটি ছেড়ে দেন।
১৯২২ সালের ১১ আগস্ট নজরুলের সম্পাদনায় অর্ধ সাপ্তাহিক ‘ধূমকেতু’ প্রকাশিত হয়। পত্রিকার অভিনন্দন জানিয়ে রবীন্দ্রনাথ আশীর্বাণীতে লিখেন- আয় চলে আয়, যে ধূমকেতু,/আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু,/দুর্দিনের এই দুর্গ শিরে/উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।/অলক্ষণের তিলক রেখা/রাতের ভালো হোক না লেখা/জাগিয়ে দে রে চমক মেরে,/আছে যারা অর্ধচেতন।
‘ধূমকেতু’ প্রথম সংখ্যায় নজরুল লেখেন, দেশের যারা শত্রু, দেশের যা কিছু মিথ্যা, ভণ্ডামি, মেকি তা সব দূর করতে ‘ধূমকেতু’ হবে আগুনের সম্মার্জনী। ধূমকেতু ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা চায়। ভারত বর্ষের এক পরমাণু অংশ ও বিদেশীর অধীন থাকবে না। ভারতবর্ষের সম্পূর্ণ দায়িত্ব, সম্পূর্ণ স্বাধীনতা-রক্ষা, শাসন ভার, সমস্ত থাকবে ভারতীয়দের হাতে। তাতে কোন বিদেশীর মোড়লী করবার অধিকারটুকু পর্যন্ত থাকবে না।’
‘বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা’, ‘ঘর শত্রু বিভিষণ’, ‘দুঃশাসনের বস্ত্রহরণ’, ‘চালাও যুদ্ধ চালাও’ ইত্যাদি সংবাদ সরস অথচ তীক্ষ্ণ শিরোনাম দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পত্রিকাটি ছাপা হবার সাথে সাথে বিক্রি হয়ে যেত। রাস্তার মোড়ে মোড়ে তরুণের দল কাগজটি কেনার জন্য দাঁড়িয়ে থাকত। কাগজের বান্ডিল নিয়ে হকার আসার পর হুড়োহুড়ি কাড়াকাড়ি লেগে যেত। আগ্রহী পাঠকরা হকারকে আগাম টাকা দিয়ে রাখত। চায়ের দোকানে পাঠকদের ভিড়, ছাত্রদের হোস্টেলে, বৈঠক ঘরে সর্বত্র আলোচনা চলত।
ধূমকেতুর প্রকাশকে স্বাগত জানিয়ে ১৯২২ সালের ৩০ আগস্ট অমৃতবাজার পত্রিকায় আশাবাদ ব্যক্ত করে লেখা হয় “সৈনিক কবির হাতে ‘ধূমকেতু’ শুধু ধ্বংসের প্রতীক না হয়ে সুন্দর স্থায়ী ও পবিত্র কিছু সৃষ্টি করতে সমর্থ হবে।” ‘ধূমকেতু’ দ্বাদশ সংখ্যায় প্রকাশিত নজরুলের ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ শীর্ষক কবিতার জন্য তিনি কারারুদ্ধ হন।
পরবর্তীতে নবযুগ আবার প্রকাশিত হয়। সম্পাদক নিযুক্ত হন কাজী নজরুল ইসলাম। ১৯২২ সালে মওলানা আকরম খাঁ কারারুদ্ধ হলে কাজী নজরুল ইসলাম তার সম্পাদিত ‘দৈনিক সেবক’-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯২৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর লেবার স্বরাজ পার্টির একটি মুখপত্র ‘লাঙল’ প্রকাশিত হয়। কাজী নজরুল ইসলাম সেটির পরিচালক নিযুক্ত হন এবং সম্পাদক হন তার বন্ধু মণিভূষণ মুখোপাধ্যায়। মণিভূষণ ছিলেন নাম মাত্র সম্পাদক। সব কিছুই করতেন নজরুল। ১৯২৬ সালের ১২ আগস্ট ‘গণবাণী’ প্রকাশিত হয়। গণবাণীতেই তিনি লেখেছেন অনেক দিন।
১৯২২ সালের নভেম্বরে কবি গ্রেফতার হন। ১৯২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর তাকে জেলখানায় পাঠানো হয়। কারাগারে থেকেও বিদ্রোহের আগুন নেভেনি কবি নজরুলের।
ব্যাপক বাধাবিপত্তি আর চড়াই উতরাই পেরিয়ে ১৯২৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশ করলেন লাঙ্গল পত্রিকা। এই পত্রিকার সব কাজকর্ম তিনি একাই করতেন। লাঙ্গলে এবার তিনি আরো বেশি জ্বালাময়ী লেখা লিখতে থাকলেন। কবি লিখলেন- ‘দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা/শুধিতে হইবে ঋণ।’
ইউরোপে এখন সাংবাদিকতায় যে মানদণ্ডের কথা কথা বলা হচ্ছে, বহুকাল আগে কবি নজরুল তা বাস্তবে প্রমাণ করে গেছেন। তাই কবিতার পাশাপাশি সংবাদিকতায় নজরুল এখন বেশ আলোচিত বিষয়। বছরের হিসেবে ক্যালেন্ডারের পাতায় এক শ’ বছর অতিক্রম করেছে। সে সাংবাদিকতার হালখাতা মিলাতে গেলে অবাক হতে হয়। নজরুল সংবাদপত্রের সব ধারণা পাল্টে দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন অনুসন্ধানী ও সৃজনশীল সাংবাদিকতার কিংবদন্তি। নজরুলকে আধুনিক বাংলা সাংবাদিকতার জনক বা ফাদার অব দ্য জার্নালিস্ট বলা যায়। যে জন্য আগামীর ইতিহাসে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।


আরো সংবাদ



premium cement