২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

খুরশীদ আলম বাবুর গুচ্ছ কবিতা

-

জিয়ন কাঠি

থাকনারে ভাই থাক না,
বুকের ভেতর ভয় তাড়ানো
জিয়ন কাঠির ঢাকনা।
চোখের কোলে বারুদ জ্বলে,
জ্বলতে থাকুক মায়ের কোলে,
সাপতো নই, কামড়ে দেবো
মেলে বিষের পাখনা।

দু’দিন আগে পরে
ঝড়ের পাখি গান শোনাবে
শীর্ণ কুঁড়েঘরে।
আমরা কি আর থাকব বসে
এগিয়ে চলা দারুণ রোষে
গুঁড়িয়ে দেবো আপন তালে
মৌমাছিদের চাকমা।

আমরা যে ভাই গানের পাখি
সুরের সাথে তাল মিলিয়ে
পরিয়ে দিলাম রাখি।
তোমার আমার চোখের তারায়,
বিপন্ন এ দেশের কারায়
শুনছি কত ডাকনা।


ভাবতেই ভয় লাগে

মহাকালের বুকে তুড়ি মেরে বগল বাজাতে বাজাতে
যেসব কবিরা লিখেছেন অমর কবিতা,
তারাও কি আমার মত বারবার খাতার উপরে
কলম ফেলে রাস্তায় একাকী ঘুরত।
কি জানি আজকাল এসব নিয়ে ভাবতেই ভয় লাগে।

কোথায় সহজ হবো তা নয়, জটিল চিন্তার নেকাব খুলে
তোমার মুখকে বানালাম গোধূলি
কেন বানালাম? সাধারণ পাঠক কি জানে
গোধূলির সৌন্দর্য কত আকর্ষক!
এই যে রাস্তায় যেতে যেতে দাঁড়িয়ে দেখছি ছাদের উপরে
একজন তন্বী তরুণী
ঠিক জোছনার মতো
অথচ কেউ কি তাকে কখনো জোছনা আপা বলে ডেকেছে?
আমি তার নাম দিলাম গোধূলির জোছনা।
অহো কবি, গোধূলির জোছনা নামে কোনো তরুণীকে
তুমি কখনো পাবে না,

তোমার শব্দ যোজনার ডালে শকুন্তলার তপোবনে
দুষ্মন্তেরা অনেক আগেই প্রতারক হয়ে আছে।
সব কবির মুখে ঝুলছে এখন আব্দুল মার্কা হাসি।
সব কবির চোখে খেলা করছে তীব্র ধূর্ততার ছায়া।
তাদের কারো তুড়ি মারার অভ্যেস নেই।
তারাও কি আমার মতো বারবার খাতার উপরে কলম
দুমড়ে মুচড়ে রাস্তায় একাকী ঘুরছে!
কি জানি আজকাল এসব নিয়ে ভাবতেই ভয় লাগে।

 

কবির হাঁস

কী হবে কবিতা লিখে?
তার চেয়ে ভালো দেখা বিকেলের নদীটিকে।
কবিতার জন্য অযথা কঠোর পণ্ডশ্রম দিয়ে
শব্দ ছন্দের সমস্ত দায় মিটিয়ে
থাকে না কিছুই। কবিও হয়ে পড়ে চলচ্ছক্তিহীন,
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে কবিতার দিন
আসছে, কিন্তু কিছুতেই আসছে নাÑ
তবুও কবি মিটিয়ে যাচ্ছে শিল্পের দেনা।

কী হবে কবিতা লিখে?
বড়ই কঠিন কবিতার পথ।
কে শোনে কবির কৈফিয়ত!
কত যন্ত্রণাবোধে জেগে ওঠে
জেগে ওঠে ভবিষ্যৎ ভয়Ñ
কবিতার আসন্ন বিজয়
পঙ্ক্তিমালা লিখেও কবিও
হতাশায় মাথা কোটে।
তবুও কবি কবিতাই লিখে।
যেহেতু কবির হাঁস সাঁতরে চলে
বুটিদার আলোর দিকে।


মনেরও ক্ষুব্ধতা আছে

মনেরও ক্ষুব্ধতা আছে। মনকে বারবার বোঝায়Ñ
পথগুলো ভাল নয়- চলছে না সোজায়।
রয়েছে পথের বাঁকে বাঁকা চোরা কত গলি।
দিনকাল ভালো নয়, সামলে চলো।
কে কোন পন্থী? কারা কালো-ধলো?
এসব বাছবিচার করে আজ আর কোনো লাভ নেই।
বিচারের আগেইÑ
জেনে রেখো তুমি
তুমি যদি হও প্রতিবাদী
বেঘোরে কেবল পিটুনিই খাবে।
পিঠের চামড়াও ছিলে যাবে।
মনেরও মুগ্ধতা আছে; মনকে আজো নিরিবিলি
শোনায়Ñযেখানে যাও,
সামনে তোমার সেই চোরাভূমি।
অতএব সাবধান
মনের মনোগত জাদু টোনায়
হৃদয়েশ্বরীর জন্য রেখো না কোনো আজগুবি চোরাটান।
হায় যন্ত্রণা! কেউ বোঝে না মনের এই পদাবলি।


আরো সংবাদ



premium cement