২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
যে ক থা হ য় নি ব লা

লেখার মাধ্যমে আগামী প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে : এনায়েত রসুল

-

যে প্রতিবন্ধকতা জয় করে লেখক হলেন?
আব্বা ছিলেন স্বনামধন্য শিশুসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলী। আমার কৈশোর থেকেই তিনি আমাকে অন্যের লেখা বই পড়ার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন। আর আমি যখন লিখতে চেষ্টা করেছি, আব্বা এবং আমার বড় বোন তাতে প্রয়োজনীয় উপদেশ দিয়েছেন। পত্রিকার শিশুপাতার সম্পাদকদের কাছ থেকেও উৎসাহ পেয়েছি। তাই আমাকে কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়নি।
লেখক না হলে কী হতেন?
লেখক না হলে আরো মনোযোগী পাঠক হতাম। ছোটবেলা থেকেই আমি নানান বিষয়ের ওপর লেখা বই পড়েছি। এখনো সময় পেলেই কোনো না কোনো বই খুলে বসি। বই থেকে আমি অনেক কিছু জানতে পারছি।
শিশুসাহিত্যকে কিভাবে দেখছেন?
শিশুদের মন কাদার মতো নরম। এ বয়সে সেই মনের ওপর যে দাগ পড়বে চিরদিন সে তার দ্বারা প্রভাবিত হবে। তাই আমি বিশ্বাস করি, শিশুসাহিত্য নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের নিজের আদর্শ ও সৃষ্টির প্রতি সৎ থেকে শিশুসাহিত্য রচনা করে যেতে হবে। তবেই আমরা ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য ইতিবাচক কিছু রেখে যেতে পারব।
সৃজনশীল রচনা শিল্পসম্মত হওয়ার পূর্বশর্ত কী?
সৃজনশীল রচনাকে শিল্পসম্মত করার জন্য লেখাটির প্লট ও বাক্য সহজবোধ্য হতে হবে। সমসাময়িক কোনো বিষয় নিয়ে লেখার সময় শিশু-কিশোরদের মন-মানসিকতা ও ধারণ ক্ষমতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আদর্শ ও চরিত্র গঠনে বাধার কারণ হতে পারে, এমন লেখা তৈরি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
খ্যাতির তৃষ্ণা একজন কবির জন্য ক্ষতিকর নয় কি?
অবশ্যই ক্ষতিকর। খ্যাতির তৃষ্ণা একজন কবি বা সাহিত্যিকের সৃজনশীলতাকে দুর্বল করে দেয়। কবি-সাহিত্যিকদের এই আত্মবিশ^াস থাকা প্রয়োজন যে, তিনি ভালো কিছু সৃষ্টি করলে আজ না হলেও আগামীকাল তা স্বীকৃতি পাবেই। এ জন্যে নীতি-আদর্শ বিসর্জন দেয়া বোকামি।
শিশুসাহিত্যিক হয়ে ওঠার কারণ কী?
আমাদের পরিবারে আব্বা ও ভাইবোন প্রায় সবাই কমবেশি লেখালেখির সঙ্গে জড়িত। সৌভাগ্যক্রমে ছোটবেলা থেকে আমি আমাদের বাসায় সুরসম্্রাট আব্বাস উদ্দীন, জসীমউদ্দীন, কবি গোলাম মোস্তফা, কবি ফররুখ আহমদ, আহসান হাবীবসহ বহু কবি-সাহিত্যিক ও শিল্পীকে আমাদের বাসায় আসতে দেখেছি। তাদের দেখে দেখে এবং লেখার মধ্য দিয়ে আগামী প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবেÑ এই বোধ আমাকে শিশুসাহিত্যিক হতে অনুপ্রাণিত করেছে।
নিজের সম্পর্কে যে অভিযোগ মিষ্টি মনে হয়?
এত লেখালেখি আর বইপত্র নিয়ে পড়ে থাকলে অন্য কাজ করবে কখন?Ñ এ অভিযোগটি প্রতিদিন আমাকে শুনতে হয়। আর এমন অভিযোগের মুখোমুখি হতে আমার ভালো লাগে।
জীবনের ব্যর্থতার কথা বলুন?
প্রয়োজনের সময় পরিস্থিতি বুঝে নিজের আদর্শ ও সততাকে বিকিয়ে দিতে পারি না। অন্যভাবে বলা যায়, হাওয়ার অনুকূলে কেমন করে পাল খাটাতে হয়, আমি তা আজো শিখে উঠতে পারিনিÑ এ আমার ব্যর্থতা।
লেখক জীবনের সাথে সাথে ব্যক্তিজীবনে কতটা সফল হয়েছেন?
আলহামদুলিল্লাহ। আমি সততার সঙ্গে বিভিন্ন দৈনিকে বিভাগীয় সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। সাংসারিক জীবনেও আল্লাহ আমাকে সুখী রেখেছেন।
শিশুসাহিত্যের প্রতি একজন শিশুসাহিত্যিকের কী দায়?
শিশুসাহিত্যের মধ্য দিয়ে সততা ও কর্তব্যনিষ্ঠা সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা।
আমাদের শিশুসাহিত্য কেমন হওয়া উচিত?
আমাদের শিশুসাহিত্যের বাক্য হওয়া প্রয়োজন সহজ-সরল। শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা গল্প-ছড়া-কবিতার ভেতর আনন্দ দেয়ার পাশাপাশি ঈমান ও পরোপকারের প্রতি উৎসাহ জোগানোর বার্তা থাকা উচিত। লেখা পড়ে শিশুদের ভেতর যেন নিজ নিজ ধর্মের প্রতি আনুগত্য এবং অপরের ধর্মের প্রতি সহনশীলতার মনোভাব গড়ে ওঠে, তেমন লেখা নিয়ে শিশুসাহিত্য গড়ে তুলতে হবে।
শিশুসাহিত্য লিখে আমাদের শিশুদের কি শেখাতে পেরেছি?
শিশুদের আমরা পরিবার ও সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল হতে উৎসাহিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
কোন জীবন বেশি উপভোগ্যÑ লেখক নাকি জাগতিক জীবন?
দুটো জীবনই আমার কাছে সমান উপভোগ্য। জাগতিক জীবন থেকে আমি সুন্দর একটি পরিবার, ভাইবোন আর অন্তরঙ্গ বিশ^স্ত বন্ধুদের পেয়েছি। এ জীবন থেকে আমি পারলৌকিক জীবনের জন্য সঞ্চয় করে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছি। লেখক জীবন থেকে পাচ্ছি পাঠকদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা।
এখনো অপূর্ণ যে স্বপ্ন?
এখন সবকিছুকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। এটা আমাকে খুব বিচলিত করে। অন্তত সৃজনশীলতা ও প্রতিভাকে রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচার করা হবে না, আমি এমন একটি সময়ের স্বপ্ন দেখি। আমার এই স্বপ্ন এখনো অপূর্ণ রয়েছে।
আপনার শিশু-সাহিত্য দর্শন কী?
ইতিবাচক বার্তা প্রচার করা। শিশু-কিশোরদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলবেÑ এমন কিছু না লেখা।
বারবার কোন বই পড়ার ইচ্ছে এখনো তাড়িত করে?
যে কোনো ইতিহাস আশ্রিত বই আমার খুব ভালো লাগে। যেমন ‘কেরি সাহেবের মুন্সী’, ‘মুর্শিদাবাদ কাহিনী’, ‘ভারতে সশস্ত্র বিপ্লব’, ‘দ্য টিনটেড থ্রোন’, ‘মোগল ব্রাদার্স অ্যাট ওয়ার’ এই জাতীয় বই।
পাঠকের ভালোবাসা কেমন পান?
আলহামদুলিল্লাহ। আমি পাঠকদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পাই। পাঠকদের ভালোবাসার কারণেই গত বইমেলা পর্যন্ত আমার ১৮৭টি বই প্রকাশিত হয়েছে।
এখনো উজ্জীবিত রাখে যে বাণী?
নিন্দা ও প্রশংসাÑ কোনোটাতেই বিচলিত হবে না।

সাক্ষাৎকার গ্রহণ : মেজবাহ মুকুল


আরো সংবাদ



premium cement
গণকবরে প্রিয়জনদের খোঁজ কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা

সকল