২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

একজন লেখকের দায়বদ্ধতা

-

লেখকের আবার দায় কী? লেখক লিখবেন এটাই তার একমাত্র দায়িত্ব। এই কাজ যদি তিনি সফলভাবে করতে পারেন তাহলেই হলো। কথাটা মিথ্যে নয়। কিন্তু ব্যাপারটা অনেকটা নামাজ পড়ার মতো। নামাজ পড়া ফরজ অর্থাৎ অবশ্য কর্তব্য। কিন্তু নামাজ পড়ার জন্য অজু করা পূর্বশর্ত। তো অজু করতে পানি দরকার, আর সেই পানি হতে হবে পাক পবিত্র। তারপর নিয়ম মতো কাপড় পরো, মাথায় টুপি দাও, জায়নামাজ বিছাও, ইত্যাদি এবং নামাজের মধ্যেও কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলা আবশ্যক। অর্থাৎ নামাজ পড়া মানে শুধু নামাজ পড়া নয়, তার আগে, মধ্যে ও পরে আরো আনুষঙ্গিক বিষয়ও এর সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। সেরকম লিখতে গেলেও অনেক কিছু মানতে হয়। খাতা-কলম বা কম্পিউটার-ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়লাম আর লেখা হয়ে উঠতে থাকল ব্যাপারটা তা হয় না। কী লিখব, কেন লিখব, কিভাবে লিখব, কাদের উদ্দেশে লিখব, তারা লেখাটিকে কিভাবে নেবে, লেখাটি কেমন হবে, সে লেখা কে ছাপবে, এসব প্রশ্ন লেখার শুরুতেই লেখককে জেরবার করে ছাড়ে। তার মানে লেখকের লেখার সাথে কেবলই তার লেখা নয়, আরো অনেক কিছু জড়িত। এখান থেকেই লেখকের দায়-দায়িত্বের প্রশ্নটি সামনে আসে।
প্রথমেই আসে লেখাটির লেখা হয়ে ওঠার প্রশ্ন। লেখককে এখানে প্রধানত দাঁড়াতে হয় তার সাহিত্যিক ঐতিহ্যের ওপর। তার আগের এবং সমকালের লেখকরা যে অবস্থানে ছিলেন এবং আছেন তাকে চেষ্টা করতে হয় তার চেয়ে অগ্রবর্তী থাকার, অন্তত একই অবস্থানে না থাকতে পারলে তাকে ব্যর্থতার গ্লানি বইতে হয়। সে জন্য তাকে বেছে নিতে হয় নতুনতর বিষয় ও চেতনা, আয়ত্ত করতে হয় নিজস্ব শিল্পকৌশল। সেটা আসমান থেকে নাজিল হয় না। সেটা তাকে আবিষ্কার করতে হয় তার নিজের সাহিত্যের ঐতিহ্য থেকে। এখন অবশ্য বিশ্বায়নের যুগ, একজন লেখক বিদেশী সাহিত্য থেকেও তা গ্রহণ করতে পারেন, তবে সেটাকে নিজস্বকরণ করা আবশ্যক, তা না হলে সেটা নকলনবিশি বা অনুকরণ হবে মাত্র। দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশের সাহিত্য থেকে বাংলাদেশ হারিয়ে যাচ্ছেÑ বিষয়, শব্দ, ঐতিহ্য, এবং ইতিহাস ব্যবহারের বিবেচনায়। অথচ লেখকের একটি প্রধান দায় হচ্ছে তিনি তার লেখায় তার দেশ, মাটি ও মানুষের কথা বলবেন। মানুষের কথা মানে তার আকিদা-বিশ্বাস, আশা-আকাক্সক্ষা, দুঃখ-বেদনা, উৎসব-আনন্দ, তার দৈনন্দিনতা, তার ভাষা, পোশাক, চাষ-বাস-জীবিকা ইত্যাদি। কোনো আরোপিত বা কৃত্রিম বিষয় আমদানি করা লেখকের কাজ হতে পারে না। লেখক নতুন শিল্প-কৌশল সৃষ্টি করতে পারলে ভালো, না পারলেও ক্ষতি নেই। তিনি তা অন্যের থেকে ধার করতেও পারেন, তবে তাকে আত্তীকরণ করার বিষয়টি ভাবা উচিত। কিন্তু বিষয়, জীবনচর্যা এবং সৌন্দর্যচেতনার ক্ষেত্রে আমদানি-নির্ভর হওয়া আত্মঘাতী কাজ।
লেখকের একটা বড় দায়িত্ব হচ্ছে, তিনি তার কাল ও সমাজকে উপস্থাপন এবং ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করবেন। আরো ভালো হয় যদি তিনি তার মধ্য দিয়ে সমাজের জন্য অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করতে পারেন, দিকনির্দেশনা পেশ করতে পারেন, সর্বোপরি জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাহস সঞ্চার করতে পারেন।
লেখক কেবল তার সমকালকে ধারণ করেন না, তিনি বর্তমানকে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে অতীতকেও বিশ্লেষণ করেন এবং তার মধ্যে রোপণ করে দেন ভবিষ্যতের বীজ। এই সক্ষমতার ওপর লেখকের মহত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। হ


আরো সংবাদ



premium cement
পিরোজপুরে বাসের ধাক্কায় নদীতে ৪ মোটরসাইকেল ফরিদপুরে নিহতদের বাড়ি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী টিকটকে ভিডিও দেখে পুরস্কার, প্রভাব ফেলছে মানসিক স্বাস্থ্যে পাট শিল্পের উন্নয়নে জুট কাউন্সিল গঠন করা হবে: পাটমন্ত্রী মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেও নেতাকর্মীরা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে : সালাম নবায়নযোগ্য জ্বালানি ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে কাজ করছে সরকার : পরিবেশ সচিব সৌরশক্তি খাতে আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে চায় জার্মানি ‘সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই বিচার প্রক্রিয়ার ধীর গতি’ মোদি কি হিন্দু-মুসলমান মেরুকরণের চেনা রাজনীতিতে ফিরছেন? টাঙ্গাইলে বৃষ্টির জন্য ইসতেসকার নামাজ ফুলগাজীতে ছাদ থেকে পড়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

সকল