২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
যে ক থা হ য় নি ব লা

সৃজনশীল রচনাকে সবসময় জীবন ঘনিষ্ঠ হতে হবে : মাহমুদ শাহ্ কোরেশী

-

যে প্রতিবন্ধকতা জয় করে লেখক হলেন?
মূলত আমি ছিলাম পাঠক। কখনো লেখক হবো এমন স্বপ্ন দেখিনি। তবু কখনো কখনো ছোটখাটো কিছু লিখে ফেলেছি। শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন লেখক বন্ধুদের আগ্রহে ও উৎসাহে আমিও লেখক হয়ে গেলাম।
কেন লিখতে এলেন?
আমার বন্ধুদের কয়েকজন বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদনার সাথে জড়িত ছিল। তাদের আগ্রহে আমাকে কিছু না কিছু লিখতে হতো। এদের মধ্যে আব্দুল গাফফার চৌধুরী, আল মাহমুদ ও আহমেদুর রহমান অন্যতম। আমার লেখালেখিতে এগিয়ে আসার ব্যাপারে একজনের অনুপ্রেরণা আছে।
লেখক না হলে কী হতেন?
লেখক না হলে আমি লাইব্রেরিয়ান হতাম। ছোটবেলায় আমার ধারণা ছিল আমি একজন গ্রন্থাগারিক হবো। সম্ভব হলে পেশা হিসেবে পুস্তক ব্যবসায়ী হবো। পরে উচ্চশিক্ষার জন্য প্যারিসে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসর হওয়াতে সবচেয়ে বড় সম্মাননা বলে মনে হলো।
সৃজনশীল রচনা শিল্পসম্মত হওয়ার পূর্বশর্ত কী?
সৃজনশীল রচনাকে সবসময় জীবন ঘনিষ্ঠ হতে হবে এবং একই সাথে শিল্পসম্মত নতুন আঙ্গিক অভিমুখী হতে হবে।
নিজের সম্পর্কে যে অভিযোগ মিষ্টি মনে হয়?
লেখালেখির চাইতেও পড়াশোনায় বেশি নিবিষ্ট থাকিÑ এই অভিযোগ আমি বিভিন্ন সময় আমার নিকটজনদের কাছ থেকে শুনেছি। তবে শেষ পর্যন্ত দেখা গেল এখন আমার অসংখ্য রচনা গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রয়ে গেছে।
এখনো অপূর্ণ যে স্বপ্ন?
বহু বিষয়ে আমার গবেষণা করার স্বপ্ন ছিল। নানা কারণে এখন সেগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়।
জীবনের ব্যর্থতার কথা বলুন!
আমার জীবন যথেষ্ট সার্থক। তবে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে প্রকাশন এবং কূটনৈতিক ক্ষেত্রের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারলে আমি খুশি হতাম।
কোন জীবন বেশি উপভোগ্য লেখক নাকি জাগতিক জীবন?
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অধ্যাপনা ও গবেষণা পরিচালনায় আমি দক্ষতা অর্জন করেছি এবং ছাত্রদের তা দিতে পেরে নিজে আনন্দ পেয়েছি।
কোন বই বারবার পড়ার ইচ্ছে এখনো তাড়িত করে?
কিছু উপন্যাস এবং প্রবন্ধের বই আমি বারবার পড়তে উদ্বুুদ্ধ হয়েছি বিশেষ করে এই করোনাকালীন সময়কে সে কাজে সদ্ব্যবহার করেছি। এই বইগুলোর বেশির ভাগ ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায় লেখা।
সাহিত্যে কেমন অবদান রেখেছেন বলে মনে করেন?
সাহিত্যে আমার অবদান খুব বেশি আছে বলে আমার মনে হয় না। তবে, ভাষা এবং চিন্তাধারায় নতুনত্ব আমদানির ক্ষেত্রে আমি কিছু অবদান রাখতে পেরেছি বলে মনে হয়।
লেখক জীবনের শেষ ইচ্ছে কী?
অনেকে আমাকে আত্মজীবনী লেখায় উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন। আমি কিছু কিছু রচনায় নিজের বিশেষ বিশেষ অভিজ্ঞতাগুলো লেখার প্রয়াস পেয়েছি। কিন্তু বহু কিছু বাদ দিয়ে ছেপেছে। দেখা যাক আরো কিছু সংযোজন করতে পারি কি না।
খ্যাতির তৃষ্ণা একজন লেখকের জন্য ক্ষতিকর নয় কি?
অবশ্যই ক্ষতিকর। এতে লেখক তার নিজের চরিত্রের অবমূল্যায়ন ঘটায় এবং চরিত্র বিকৃতির কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়।
কবিতা যেমন উন্নত হতে হবে, কবিকেও হতে হবে উন্নত মানুষ, আমাদের কবিরা কি এ কথা ভাবেন?
মনে হয় না। তবে কবিকে মহৎ চিন্তায় অভিষিক্ত হতে হবে তার অভিপ্রায় ও মননকে প্রায়শ মহৎ ভাবনায় উদ্বেলিত করে তুলতে হবেÑ নতুবা তার পক্ষে একজন মহৎ কবি হিসেবে উচ্চমার্গে ওঠা সম্ভব নয়।
পাঠকের ভালোবাসা কেমন পান?
আমার লেখা খুব বেশি পাঠক পড়েন কি না জানি না। তবে অপ্রত্যাশিতভাবে অনেক সময় কারো কারো কাছ থেকে প্রশংসাসুলভ যেসব মন্তব্য শুনি তাতে অভিভূত হয়ে পড়ি।
এখনো উজ্জীবিত রাখে যে বাণী?
সত্যের অনুসন্ধিৎসাকে আমার জীবনবাণী বলে আমি গ্রহণ করেছি এবং এটা করতে গিয়ে বিগত ৬০ বছর ধরে সৈয়দ আলী আহসান আমার জীবন বাণীরূপে গৃহীত হয়েছে।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : মেজবাহ মুকুল

 


আরো সংবাদ



premium cement