২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লুইস গ্লুক-এর দুটি কবিতা

-

অনুবাদ : সায়ীদ আবুবকর
প্রতিধ্বনি

একটা সময় ছিল যখন আমার আত্মাকে আমি
কল্পনা করতে পারতাম,
কল্পনা করতে পারতাম আমার মৃত্যুকে।
যখন কল্পনা করতাম আমার মৃত্যুকে,
তখন আমার আত্মা মরে যেত।
এটা আজও স্পষ্ট স্মরণ করতে পারি আমি।

আমার শরীর সংগ্রাম করে টিকে গিয়েছিল;
এটা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোনো বেড়ে ওঠা নয়.
স্রেফ টিকে যাওয়া;
কেন, তা আমার জানা নেই।

২.
যখন ছিলাম আমি খুব ছোট,
চলে গিয়েছিলেন আমার মাতা-পিতা
একটি পাহাড়ঘেরা ছোট উপত্যকায়;
যাকে বলা হতো সেখানে ‘হ্রদের দেশ’।
আমাদের সবজি-বাগান থেকে
দেখা যেত পাহাড়গুলোকে, যা গ্রীষ্মকালেও
থাকত তুষারে ঢাকা।

আমার স্মরণে আছে এক ধরনের শান্তি
যা আর কখনো দেখতে পাইনি আমি।

পরবর্তীকালে এটাই আমাকে শিল্পী করেছিল,
বেজে উঠেছিল এর কণ্ঠই আমার মধ্যে।

৩.
বাকি কথা তো আমার হয়ে গেছে বলাÑ
কয়েক বছর সাবলীলভাবে, তারপর দীর্ঘ
নীরবতা, পাহাড়ের সামনের সেই
হ্রদের দেশের নীরবতার মতো, যা
মানুুষের কণ্ঠকেও প্রকৃতির কণ্ঠ করে তোলে।

এ নীরবতাই এখন আমার সঙ্গী।
আমি প্রশ্ন করি : ‘কিভাবে আমার আত্মা
মরে গিয়েছিল?’
এবং জবাবে নীরবতা বলে,
‘যদি আত্মা তোমার মরেই গিয়ে থাকে,
কোন্ সে জীবন তুমি করছ যাপন
এবং কখন তুমি হয়ে উঠেছিল এ-মানুষ?’


শুকতারা

অনেক বছর পর আজ রাতে প্রথমবারের মতো
পৃথিবীর ঐশ^র্যের দৃশ্য ধরা পড়ল আমার কাছে।

সন্ধ্যার আকাশে প্রথম তারাটি মনে হলো
দারুণ ঔজ্জ্বল্য নিয়ে বড় হতে আরম্ভ করেছে
যখন পৃথিবী অন্ধকার হয়ে পড়েছিল
যাতে না সে আরো বেশি অন্ধকার হয়ে পড়ে।

এবং এ আলো, যে-আলো মূলত
মৃত্যুর, আমার মনে হলো, তার শক্তি
সে আবার প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে মর্ত্য।ে

আর কোনো তারা ছিল না আকাশে। শুধু
একটাই তারা, যার নাম আমি জানতাম
যেহেতু আমার অন্য জীবনে একদা তাকে
করেছিলাম আহত : শুকতারা, সন্ধ্যার তারা সে।

তোমাকেই, হে নক্ষত্র,
আমি উৎসর্গ করে গেলাম আমার ম্বপ্ন
যেহেতু এ বিশাল মহাশূন্যে তুমি
ফেলেছ বিপুল আলো
আমার চিন্তাকে দৃশ্যমান করার জন্য।


আরো সংবাদ



premium cement