২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তারুণ্যের কবিতা চিন্তা

-

কবিতা নিয়ে যে যার ভিন্ন মতে আলোচনা করেছেন। আবার অনেক সাহিত্যক এ নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে আছেন। কবি তার হৃদয়ঙ্গমে শব্দের অসীম ক্ষমতা নিয়ে নিজেকে স্বচ্ছ আয়নার মাঝে তুলে ধরেন এবং আত্মশুদ্ধি লাভের মাধ্যমে প্রতিটি শব্দের বুননে কবিতা সমুদ্রের মতো গর্জন তোলে এবং তেজস্ক্রিয় এই সৌর সংলাপচিত্র পৃথিবীকে সৌন্দর্যময় আলোয় আলোকিত করে। শব্দের চাষাবাদে কবির অন্তরমহলে এমন এক অপূর্ব রূপের ভিন্ন জগৎ তৈরি করে সর্বদা ধ্যানস্থ বিচরণ করেন। কবি নিজেই নিজের সাথে কথা বলেন। শব্দের ভেতর যে ঐশ্বর্যময় লুকিয়ে রাখেন তাহার অন্তর্দৃষ্টিতেই সমগ্র পৃথিবীকে দেখতে পান এবং কবি তার কবিতার মধ্য দিয়ে কখনো তার কোনো নিজস্ব সীমাবদ্ধতায় থাকেন না। এককথায় সমগ্র বিশ্বের সব মানুষের কল্যাণের বার্তা বহন করে বেড়ান। একটা নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে আপনার-আমার এবং দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সময়সীমা বেঁধে দেয়া থাকে; কিন্তু একজন কবির কবিতা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে তার ভৌগোলিক সীমারেখা থাকে না। তিনি হয়ে ওঠেন কাল থেকে মহাকাল। কবি যখন শব্দ নিয়ে খেলা করেন তার তাৎক্ষণিক শব্দের ভাবনা বিস্তৃত হয়ে ভাবনা ছাড়িয়ে যায়, তিনি যে নির্দিষ্ট ইঙ্গিত বহন করতে চান সঠিক বিন্যাসের মধ্য দিয়ে তা অনেক সময় যথাযথ সামর্থ্য জোগায়।
সাহিত্য-শিল্পভাবনায় কবিতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শব্দের মধ্যেই কবিতা, নির্মাণের মধ্যে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৌন্দর্য প্রকাশ হয়। কবিতা হচ্ছে আত্ম-উপলব্ধির প্রধান মাধ্যম এবং আত্মশুদ্ধির বহিঃপ্রকাশ। স্বকীয় ধ্যান ও ভাবনার জাগরণ করে তোলে। কবি শব্দ ও অর্থের মাধ্যমে সৌন্দর্যকে আরো সমৃদ্ধ করেন। চিন্তাচেতনাকে শুদ্ধ কল্পনায় নিজস্ব বুদ্ধির রসায়নে জাগ্রত করে তোলেন। আমরা যদি রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ দাশের উচ্চমানের কবিতা ভালো করে দেখি তাহলে বোঝা যাবে কিভাবে বিখ্যাত হয়েছেন।
কবিতা লেখা ঐশ্বরিক ব্যাপার; ইচ্ছে করলেই কবিতা লেখা যায় না। নিজের সত্তায় প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কখনোই নিজের ভাবনাকে উপস্থাপন করে কবিতা নির্মাণ সম্ভব হবে না। মানুষের মনের ভাব কখনোই সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করা যায় না তবুও ভাষার মাধ্যমে বিভিন্ন শব্দের অলঙ্করণে একটা ভালো কবিতা সৌন্দর্য ও উপমায় নিয়মিত উপস্থাপন করার চেষ্টা করি। আমি সবসময় এ ব্যাপারে সচেতন থাকি মানবসমাজে অর্জিত সব জ্ঞানের ভাণ্ডার একার কোনো সত্তার নয়; এখানে সবাই অংশীদার। প্রকৃতির সব বিষয়বস্তুর উপলব্ধি বুদ্ধিদীপ্ত কল্পনার মাধ্যমে সামাজিক অবস্থান ও চেতনাকে ধারণ করে চিত্রকল্পে তুলে ধরাই আমি বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি।

 


আরো সংবাদ



premium cement