১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আলিঙ্গন ও সম্ভাষণের বাইরে

-

প্রকৃতি উন্মাতাল হয়ে আছে, অদৃশ্য বজ্রপাতে ছারখার হচ্ছে সব
আলিঙ্গন ও সম্ভাষণের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে স্থাণু মানুষেরা

দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে সময়ের সুতো
বৃশ্চিকের মতো অসংখ্য পোকা হেঁটে যাচ্ছে শিরদাঁড়া বেয়ে
কারা যেন কোরাসের মতো গাইছে কবর খোঁড়ার গান
যদিও এরই মধ্যে উজবুকের মতো উজিয়ে উঠছে
টিউলিপের বাগান।

ওই বাগানটি হতে পারে শুশ্রƒষা আর নিরাময়ের
কারুকার্যখচিত দরজা কিংবা দক্ষিণের জানালা
যেখানে হাত বাড়িয়ে ছুঁতে পারি বৃষ্টি
নিঃশব্দ সম্পর্কের গাঢ় বিষাদ
যা আটকানো শিকলের মতো আটকে থাকে
পৃথক করা যায় না।

তবু বিপন্ন বোধ এসে হামা দেয়, প্রায়ান্ধকার একটি গুহা
খুব অর্থবহ হয়ে ওঠে
অসংখ্য বাদুড়ের ডানা ঝাপটানোর শব্দে
প্রতিধ্বনি জাগে
দেয়ালে দেয়ালে, যেন একটি অনুচ্চারিত ঢেউ
ভেঙে পড়ছে জলে।

জলে জলে আলোড়ন
প্রাণোচ্ছল ডলফিনগুলো উড়ছে আকাশে
মানুষের বিষণœতা জাঁক হয়ে বসে
যেন হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন অণু ভেঙে যাচ্ছে
জলের সন্ত্রাসে।

তবু মানুষ অনুগামী হয়, জলগামী হয়
অবলম্বনের নিরালম্বতায় রম্বসের মতো উপুড় হয়ে থাকে
বালুতট ধরে নিষণœ ছায়ায় হাঁটে যেন কোনো
পৌরাণিক মানুষ
অনঙ্গ ছায়াসঙ্গীর মতো খুঁজে পাথর যুগের
কোনো নিষাদ।
অস্তিত্বের পরম্পরা খোঁজে
যেন দূর থেকে ডেকে যায় কোনো হোমোসেপিয়ান
যেন বাঁকা হতে হতে ভেঙে যায় ব্যাধের ধনুক, আর
হরিণের ছাল কাঁধে হাঁটে পূর্বপুরুষ।

কাত হয়ে পড়ে থাকে কেলাসিত বোধ
অস্তগামী সূর্যের মতো রঙ পাল্টাতে থাকে সভ্যতা
পরিযায়ীবোধে পাখাহীন পাখা মেলে মানুষেরা
ছেড়ে যায় ভিটেমাটি, চেনা প্রতিবেশ
চঞ্চু থেকে নিক্ষিপ্ত বীজের মতো বৃক্ষ হয়ে ওঠে।

তবু হাতড়ায় আজীবন, হাতড়াতেই থাকে
কী যেন ছিল, কী যেন নেই
এক অনন্ত অন্বেষণে পাথর থেকে পাথরে
শিলালিপি থেকে শিলালিপিতে
খুঁজে ফেরে এক লিখিত কি অলিখিত জীবনের ইতিহাস।

 


আরো সংবাদ



premium cement