২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গল্প লিখতে গিয়ে

-

কোনো দিন গল্প লিখিনি। লিখব ভাবিনি। লেখা গল্পগুলো ২০০৫ সালের। ১৯৭১ সালের শুরুতে তখনকার পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহে যোগদান করেছিলাম রসায়নের লেকচারার হিসেবে। ২০০৬ সালে প্রফেসর হিসেবে অবসর নেয়ার পূর্বে এক বছরের প্রাক-অবসরকালীন ছুটিতে আসি। পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে সিঁড়িতে বসে ভাবছিলাম কিভাবে কাটাই এ এক বছর। অথচ কাজের মাঝে কেটেছিল ১৯৭১-২০০৫ সালÑ পঁয়ত্রিশটি বছর।
একদিন এ নদে লঞ্চ চলত। নদের সে জৌলুস আর নেই। তেমনি নেই আমার জীবনের জৌলুস। নদের বুক এখন বালিতে ভরা। নদ এখন মরা। সে নদে এখন জলের প্রবহমান ক্ষীণধারা। নদের ওপর দিয়ে ‘পার হয়ে যায় গরু পার হয় গাড়ি, দুই ধার উঁচু তার ঢালু তার পাড়ি’।
এপারে শহর বিশ্ববিদ্যালয়। ওপারে কখনও কাশবন কখনও দিগন্তজুড়ে হলদে সরষে ফুলের ক্ষেত ডাকে আমাকে হাতছানি দিয়ে। অবসরে এমনি নিঃসঙ্গ পরিবেশে কখনও দ্বিপ্রহরের ভরদুপুরে কখনও জ্যোৎস্নাস্নাত নিশুতি রাতে বাসা থেকে বের হতাম একা।
তাকাতাম উপরের দিকে। দেখতাম আকাশ ভরা তারা। আকাশে চাঁদ আর হাজারো তারার এক মিলনমেলা। কখনও মেঘের কোলে চাঁদ-তারার যেন এক লুকোচুরি খেলা।
আমার প্রিয় লেখক সে যুগের অমর কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আর এ যুগের মাহবুব তালুকদার। মনে পড়লো তাঁর এক গল্পের কথা। গল্পের নাম জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে। এসব ভাবতে ভাবতে আমি তখন মরা ও ভরা নদ ব্রহ্মপুত্রের তীরে।
মন গেয়ে উঠল গুন গুন করে। আমার পকেটে ছিল কাগজ ও কলম। সে রাতে জোছনার সাথে আমার যেনো গলাগলি আর কোলাকুলি হলো। সাদা কাগজের বুকে কালো অক্ষরে সে রাতে আমি যা আঁকাআঁকি করলাম, বাসায় এসে তা পড়ার চেষ্টা করলাম। মোটামুটি একটা গল্প বলে মনে হলো। নাম রাখলাম শূন্যে দাঁড়িয়ে। সে রাতে চাঁদের আলো জোছনার সাথে আমার গভীর মিতালি হলো। তাই শূন্যে দাঁড়িয়ে গল্পটির কল্পিত নায়িকার নাম রাখলাম জোছনা শব্দের সাথে মিল রেখে জোছনা।
আমার গল্পগুলো রঙবেরঙের, নানা রঙের ও নানা ঢঙের। কোনোটি অতি ক্ষুদ্রাকারের অনুগল্প, কোনোটি একটু বড় আকারের ছোট গল্প, কোনোটি আবার আকারে মাঝারি তাই মাঝারি গল্প। এভাবে ত্রিধাবিভক্ত গল্পগুলো নিয়ে ‘কাজল কালো চোখে’ নামের এ ক্ষুদ্র গল্পগ্রন্থ আজ থেকে তিন বছর আগে অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত।
প্রতিটি গল্পের নামকরণ করেছি গল্পের শেষ ক’টি একগুচ্ছ শব্দ দিয়ে। গুচ্ছখানেক শব্দ দিয়ে গল্পের শিরোনামের আবরণে বিষয়বস্তুকে পাঠকের নজরবন্দি করার চেষ্টা করেছি।
আমি মনে করি বাংলা সাহিত্যে ছোট গল্প রচনার ক্ষেত্রে আমার দিক থেকে হয়তোবা এক অভিনব প্রচেষ্টা। এতে আমি সফল না বিফল হয়েছি সে বিচারের ভার সহৃদয় পাঠকের কাছে রইল।
গল্প লিখতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে নায়ক-নায়িকার সংলাপই গল্পের প্রাণ। অক্ষর নিয়ে গঠিত যে শব্দ, আমাদের চার পাশের বায়ুমণ্ডলে সে শব্দগুলো সব সময় যেন উড়ে উড়ে, ঘুরে ঘুরে ও ভেসে ভেসে বেড়ায়।
বায়ুমণ্ডল থেকে কুড়িয়ে শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে সংলাপের আকারে কথার মালা গেঁথে আকুলতা নিয়ে প্রতীক্ষারত পাঠকদের মন ভরানোর ও ব্যাকুলতা নিয়ে তৃষ্ণার্ত পাঠকের প্রাণ জুড়ানোর চেষ্টা করেছি। এতে যদি কারো মন ভরে ও প্রাণ জুড়ায় তাহলে মনে করব আমার এত কালের অপূর্ণ জীবন আজ কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে, সামান্য জীবন অসামান্য ও নগণ্য জীবন ধন্য হয়েছে।
গল্পে কোনো ঘটনা নেই। আছে শুধু কল্পনা। যদি কারো জীবনের সাথে মিলে যায় তাহলে বলব এটি ঘটনা নয়, এ যেন এক দুর্ঘটনা। এ দুর্ঘটনার জন্য আমি মোটেও দুঃখ প্রকাশ করব না। বরং বলব গল্প বাস্তব ও জীবনমুখী হয়েছে। গল্প লেখার চেষ্টা কিছুটা হলেও সার্থক হয়েছে এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও বিজ্ঞানীর জীবন কর্মক্লান্ত ও কর্মহীন হয়ে থেমে যায়নি। কর্মক্লান্ত শিক্ষকের জীবন কর্মময় হয়েছে। কর্মহীন বিজ্ঞানীর জীবন কর্মকোলাহলে সম্প্রসারিত হয়ে কর্মমুখর হয়েছে। হ


আরো সংবাদ



premium cement
পাঁচবিবিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক ব্যক্তির মৃত্যু স্পেশাল অলিম্পিকে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, প্রশংসিত দেওয়ানগঞ্জের রবিন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরো ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা থাই-মিয়ানমার সীমান্ত শহরের কাছে আবারো সংঘর্ষ শুরু : থাই সেনাবাহিনী পাঁচবিবিতে মোটরসাইকেল ও ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল চুয়াডাঙ্গায় ১৪০তম দেশ হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলো বার্বাডোস সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে আছে : রিজভী কুষ্টিয়ায় অস্ত্রসহ যুবলীগ নেতা আটক পাকিস্তানে একসাথে ৬ শিশুর জন্ম, সবাই সুস্থ ৪০ বছর ধরে মুসল্লিদের ফ্রি চা খাওয়ানো মদিনার সেই বৃদ্ধের ইন্তেকাল

সকল