২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বুকার প্রাইজ শর্টলিস্ট এবারো নারীদের প্রাধান্য

-

যা ভাবা হয়েছিল তাই হলো শেষ পর্যন্ত। সম্প্রতি বুকার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজের শর্টলিস্ট প্রকাশিত হয়েছিল নিয়মমাফিক। কিন্তু ব্রিটেনে করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে ওঠায় চূড়ান্ত বিজয়ীর নাম ঘোষণা স্থগিত করে দেয়া হয়েছে। আর এ নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা জল্পনা-কল্পনার হয়েছে আপাত অবসান। এর আগে করোনা প্যানডেমিকের কারণে বাতিল হয়েছে ঐতিহ্যবাহী লন্ডন বইমেলা। ধারণা করা হচ্ছিল, বুকার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজও স্থগিত করা হবে। নিয়ম মেনে ২ এপ্রিল ১৩টি বইয়ের লংলিস্ট থেকে ছয়টি বইয়ের শর্টলিস্টও প্রকাশিত হয়েছিল। আর এই খবর দিয়ে গার্ডিয়ান পত্রিকা বলেছিল, ১৯ মে বুকার ইন্টারন্যাশনাল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। কিন্তু ২০ এপ্রিলের গার্ডিয়ান বলছেÑ বুকার আন্তর্জাতিক পুরস্কার পিছিয়ে দেয়া হয়েছে করোনার কারণে।
লংলিস্টে থাকা বইগুলো তেমন বিক্রি হচ্ছিল না লকডাউনের ফলে বইয়ের দোকান বন্ধ থাকায়। সাধারণত দেখা যায় লং ও শর্টলিস্টে আসা বইগুলোর বিক্রি বহুগুণে বেড়ে যায়। শর্টলিস্টে থাকা বইও তেমন বিক্রি হচ্ছিল না বলে জানাচ্ছিলেন প্রকাশকরা। নোবেল ও বুকার ইন্টারন্যাশনাল জয়ী লেখিকা ওলগা টোকারজুকের বইয়ের প্রকাশক সংস্থা ফিজকারাল্ডোর জ্যাকুইস টেস্টার্ড বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরে শাটডাউনের কারণে বইয়ের বিক্রিও বন্ধ আছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে মে মাসে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হলে বিজয়ীর জন্য তা সুখকর হবে না, পুরস্কার জয়ের পর অন্যান্য বছরে যে আনন্দ থাকে তা থেকে তিনি বঞ্চিত হবেন। পুরস্কার স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়ায় বুকার ফাউন্ডেশনের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’ বুকার ফাউন্ডেশনের সাহিত্য বিভাগের পরিচালক গ্যাবি উড পুরস্কার স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আমরা সতর্ক বিবেচনায় দেখেছি, যখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সবাই যখন বইগুলো সহজে পেতে পারবেন সেই সময়ে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে, যাতে করে বিজয়ী আনন্দটা উপভোগ করতে পারেন। পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণার নতুন তারিখ পরে জানানো হবে।’ অন্য দিকে ‘ওমেন্স প্রাইজ ফর ফিকশন’ -এরও বিজয়ীর নাম ঘোষণাও জুন মাসের বদলে সেপ্টেম্বরে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।
শর্টলিস্টে কারা আছেন এবার দেখে নেয়া যাক। ১৩টি বইয়ের দীর্ঘ তালিকায় ছিলেন ইরান, স্পেন, ফরাসি, আর্জেন্টিনা, নরওয়ে, জার্মানি, জাপান, নেদারল্যান্ডস ও দক্ষিণ আফ্রিকার লেখক-লেখিকারা। দেশের দিক থেকে এই তালিকা বেশ বৈচিত্র্যময়ই ছিল বলতে হবে। বিশেষ করে নামী দামি প্রকাশকের বই কম থাকায় সমালোচনাও হচ্ছিল। ছয়টি বইয়ের শর্টলিস্টে দেখা যাচ্ছে এবারো নারীদের প্রাধান্য। ছয়জনের চারজনই নারী। আর এ নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। এ বছর ২৮ বছর বয়স্ক একজন লেখক স্থান পেয়েছেন তার প্রথম উপন্যাস নিয়েই। তিনি হলেন নেদারল্যান্ডসের মেরিক লুকাস রিনেভেল্ড। এর আগে ২৭ বছর বয়সী ব্রিটিশ লেখিকা ডেইজি জনসন ২০১৮ সালে এই পুরস্কারের শর্টলিস্টভুক্ত হয়েছিলেন। শর্টলিস্টে রয়েছেন ইরান, নেদারল্যান্ডস, জাপান, জার্মানি, আর্জেন্টিনা ও মেক্সিকোর লেখক-লেখিকারা। বিদেশী লেখক-লেখিকাদের ইংরেজিতে অনূদিত ও যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ড থেকে প্রকাশিত বই এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত। প্রতি বছর এই পুরস্কার দেয়া হয়। আর এই পুরস্কারে অনুবাদককেও যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়। পুরস্কারের ৫০ হাজার পাউন্ড মূল লেখক ও অনুবাদককে ভাগ করে দেয়া হয়। এ বছর বিচারকমণ্ডলীতে চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন লেখক গবেষক টেড হডকিনসন। সদস্যরা হলের জিত থাইল, লুসি ক্যাম্পোস, জেনিফার ক্রফট ও ভ্যালেরিয়া লুসেলি। শেষোক্ত তিনজন নারী। আর তারা সবাই লেখক-লেখিকা-গবেষক হিসেবে সুপরিচিত।
শর্টলিস্টে আছেন ইরানের লেখিকা শকোফেহ আজর তার বই ‘দ্য এনলাইটেনমেন্ট অব দ্য গ্রিনগেজ’ নিয়ে। অনুবাদকের নাম অজ্ঞাত, প্রকাশক ইউরোপা। আর্জেন্টিনার লেখিকা গ্যাব্রিয়েলা সেবেজন কামারার বইয়ের নাম ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চার অব চায়না আয়রন’। স্পেনিশ ভাষা থেকে অনুবাদ করেছেন লোনা মেকিনটায়ার ও ফিওনা ম্যাকিনটস। প্রকাশক চারকো প্রেস। জার্মান লেখক ড্যানিয়েল কেহলম্যানের বই হচ্ছে ‘টাইল’। অনুবাদক রস বেঞ্জামিন। প্রকাশক কুয়ারকাস। মেক্সিকোর লেখিকা ফারনান্ডো মেলকরের বইয়ের নাম ‘হারিকেন সিজন’। স্পেনিশ থেকে অনুবাদ করেছেন সোফি হিউজ। আর প্রকাশ করেছে ফিজকারাল্ডো। জাপানের ইয়োকো ওগাওয়ার বইয়ের নাম ‘দ্য মেমোরি পুলিশ’। অনুবাদক স্টিফেন ¯œাইডার আর প্রকাশক হারভিল সেকার। নেদারল্যান্ডসের মেরিক লুকাস রিনেভেল্ডের বই হচ্ছে ‘দ্য ডিসকমফোর্ট অব ইভনিং’। অনুবাদ করেছেন মাইকেলি হাচিসন। আর প্রকাশ করেছে ফেবার অ্যান্ড ফেবার।
বুকারের দীর্ঘ ইতিহাসে দেখা যায় বহু নামী দামি লেখক ব্রিটেনের এই মর্যাদাবান পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। নতুন নতুন লেখকও পেয়েছেন এই পুরস্কার। নোবেল পুরস্কারের পর বুকার পুরস্কারকেই সবচেয়ে মর্যাদা ও আর্থিক দিক থেকে মূল্যবান মনে করা হয়। গত বছর এ পুরস্কারের ৫০ বছর পূর্তি লন্ডনে জাঁকজমকের সাথে উদযাপিত হয়। মাঝখানে স্পন্সর পরিবর্তনের ফলে এই পুরস্কারের নাম হয়েছিল ম্যান বুকার। আবার স্পন্সর পরিবর্তন হওয়ায় গত বছরের জুনে স্বনামে অর্থাৎ বুকার নামে ফিরেছে এই পুরস্কার। নতুন স্পন্সর পুরস্কারের নামে তাদের নাম যুক্ত করেনি, যেমনটা করেছিল ম্যান গ্রুপ পিএলসি। তারা ১৮ বছর এই পুরস্কারের সফল স্পন্সর ছিল। নতুন স্পন্সর হলো ক্র্যাংকস্টার্ট। এটি একটি চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন।
দেখা যাচ্ছে যারা এবার তালিকায় আছেন সেসব দেশের মধ্যে বেশির ভাগ দেশেরই কোনো লেখক-লেখিকা এই পুরস্কার পাননি। ফলে এ বছর নতুন কোনো দেশ পুরস্কার পেতে পারে। দেশ না বলে নতুন কোনো দেশের লেখক-লেখিকা বলাই ভালো। কে পাবেন এই পুরস্কার তা জানতে আরো কিছুকাল অপেক্ষা করতে হবে। তবে টাইমলাইন বলা যাচ্ছে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ধুনটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বৃদ্ধের মৃত্যু বাকৃবির এক্স রোটারেক্টরর্স ফোরামের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত পাবনায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট স্ট্রোকে মৃত্যু ১ দাগনভুঞায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির ঘটনায় আ’লীগ নেতাকে শোকজ দখলে থাকা ৪ গ্রাম আজারবাইজানকে ফিরিয়ে দেবে আর্মেনিয়া স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রীর আত্মহত্যা! কুলাউড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর মৃত্যু যেসব এলাকায় রোববার ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে পলাশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মনা, সম্পাদক রনি তীব্র গরমে আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না বগুড়া পশ্চিম সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের উদ্যোগে ভার্চুয়ালি রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সকল