২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

একটি না হয়ে ওঠা রহস্য গল্প

-

ঝিঝিক ঝিক ঝিক ঝিক...ঝিক... যেন বা নীল কোনো নক্ষত্রের পুঞ্জীভূত মেঘপাড় থেকে ট্রেন বের হয়ে এলো, দুপুর দেড়টায়, ময়মনসিংহ রেলজংশনে, দরবারি কানাড়ার ধীর তাল সমাপ্তির ছন্দে সে এসে দাঁড়াল প্ল্যাটফর্মে, যা ২ নং।
যেনবা বৈচিত্র্যের সৌরভে মাতাল অভিজ্ঞতার একটি মহাদেশ থেকে নামলাম, ট্রেনের তৃতীয় শ্রেণীর কামরা থেকে সিঁড়িটা বেয়ে পা রাখলাম খণ্ড খণ্ড পাথরের গায়ে, ওরা না না করে উঠল ভয়ে, ময়মনসিংহের মাটি, বিমোহিতের চোখে ওদিকে চেয়ে দেখি আমাকে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছে প্রমিথিউস রাফি।
খাদ্যের ঘ্রাণে নাড়ি মোচড়াচ্ছে। তখন পূর্ণ দুপুর বিদীর্ণ জনপদে শ্বাস ছাড়ছে চৈত্র মাসের সূর্য।
জামবাটি ভরা দুধের সরপড়া মালাই চা তে তাজা পাউরুটি ভেজালে যেরকম মিঠা একটা গন্ধ ছড়ায়, বাতাস ম ম করছে সেই সুগন্ধে।
গতকাল টিউশনির বেতন পাওয়া হাজার দেড়েক ঝনঝন করে উঠল পকেটে, নিজেদের অস্তিত্বের ভরসাময় জানান দিচ্ছে।
আমরা ঢুকে পড়ি একটা হোটেলে। জ্যোৎস্নার মতো সাদারঙ এক থাল ভাত আসে, তার ওপর দেশি কই মাছের লাল ঝাল সুরুয়া ছড়ানো গোল অনুপাতে।
লেবুর টুকরা পেঁয়াজের কুচি মরিচে ঝোলে ভাত মেখে পরিশ্রান্ত কৃষকের মতো তৃপ্তিদায়ক ভঙ্গিতে ভাতের নলা মুখে তুলতে তুলতে প্রমিথিউস রাফি আহ্লাদ জানালেন;
ফাইনালি আমরা তাইলে তেপান্তর যাইতেছি!
যেকোনো প্রকার খাওয়ার সময়েই ‘কথাবলা’ নাপছন্দ।
কচ করে পেঁয়াজে একটা কামড় পড়েছে আমার, আমি ভাবছি অন্য। জায়গাটার বাস্তব অস্তিত্ব আদৌ প্রমাণিত নয় আমাদের কাছে। প্রফি কোথায় যেন পড়েছে বাড়িটার কথা, এখন আনুমানিক একটা ম্যাপ এঁকে বনজংলা ঠেলে স্থানটা আবিষ্কার করতে যাওয়া। একটা ছোট্ট তপ্তশ্বাস উঁকি দিলো আমার বুক থেকে, হুহ, অবশেষে!
রেলস্টেশনের পাশে একটা টঙঘর। র চা, দুধ চা বিক্কিরি হয়। লাল ডিসপ্লে বক্সের পুরু কাচের ভেতরে সাজানো সারিতে সারিতে সিগারেটের সুসজ্জিত নকশাদার প্যাকেট। তার ওপরে একটা বড় ডালায় পান সুপারি চুন জর্দার আয়োজন আগলে যিনি অধিষ্ঠিত আছেন, এক প্রবীণ পুরুষ। ফকির সাধুর নাহানই বেশভূষা। চুল ছাড়িয়েছে কাঁধ, দাড়ি, সমস্তই সফেদ, সাদা।
প্রফি (প্রমিথিউস রাফি) তার সেখান থেকে একটা সিগারেট মুখে ধরিয়ে পার্স বের করার মধ্যে যেন বা কিছুটা আনমনেই জিজ্ঞাস করল, যেহেতু পুরানা কালের লোক, চেহারায় ওই ধরনের একরূপী আধ্যাত্মিক জেল্লাই, তেপান্তর বাড়ি যাওয়ার পথঘাট জানা থাকলে আমাদেরকে তিনি তা নির্দেশ করতে পারেন কি না।
লোকটার চোখ দুটি কোটরের মধ্যে অবস্থিত ছিল দারুণ সৌম্যবান, পরিত্যক্ত চুলার ছাই দিয়ে যেন লেপা।
তেপান্তর বাড়ির কথা কানে কানে পৌঁছতেই তার চোখের জ্যোতিতে যেন বন পোড়ানো তীব্র আগুন দপ করে জ্বলে উঠল। সে দৃশ্যের উত্তাপে আমাদের ঘোর অস্বস্তি শুরু হলো।
কী হলো, কেন লোকটি আচমকা অকারণে ফুঁঁসল, কিছুই বুঝতে না পেরে হতভম্বের মতো সেখান থেকে দূরে সরে এলাম আমরা, যেন বা মাইল মাইল শূন্য মাঠের ওপারে শ্বাসাচ্ছে কোনো আগ্নেয়গিরি, তার আওয়াজে ভেসে এলো গর্জনশীল শব্দ; মরবে, খান্নাসের হাতে সব!
কালো পর্দায় সিন ক্লোজড হয়ে যেতে যেতে ব্যাকগ্রাউন্ডে শোনা গেল বুড়োকে উদ্দেশ করে আমাদের তাচ্ছিল্যের হাসি।

দ্বিতীয় পোশাক
প্রমিথিউস রাফি। যাপনে মননে পুরোদস্তুর কবি, পার্টটাইম গল্পকার। গদ্যের হাত সচেতন। আছে আরো যা যা থাকে, গুণাগুণ।
শহরের বাইরে কোথাও গড়িয়ে না পড়লে গল্পের পোকা নড়ে না মগজে।
রাতের নিরালা পুরনো রাজবাড়ি ধরনের তার একটি স্থাপনা দরকার, থিম হিসেবে। একটা হন্টেড প্লেস।
একটু ভৌতিক কিন্তু ভৌতিক নয় শৈল্পিক, রবীঠাকুরের মতো একটা ছমছম ঘোরের কাহিনী সে লিখবে। আমাদের তেপান্তর যাত্রা সেই মতলবে।
রাজা হেমকান্ত চৌধুরী। এ অঞ্চলের জমিদার, কতকাল আগের বিগত সেসব দিন শ্যাওলাজমা দেয়ালের মতো মলিন।
বিশ বিঘে জমির মধ্যবিন্দুতে বটগাছের মতো প্রকাণ্ড নাকি সেই বাড়ি।
গল্পে বর্ণিত ইতিহাসের সব জমিদারের মতো এই বিলীন রাজাটিও অত্যাচারের উপাধি থেকে মুক্তি পাননি।
এক নিরীহ প্রজা সেই প্রাসাদের দূর দূর এক সীমানাজ্ঞাপক দেয়ালের পাশ দিয়ে জুতো পরে হেঁটে যাচ্ছিল। কোনোক্রমে হেমকান্তও তখন পায়চারি করছিলেন ওদিকটায়। দৃশ্যটা চোখে খট করে পড়ল তার। জল্লাদ ডেকে প্রজা গোবেচারার পায়ের গোড়ালি দু’টি কাটিয়ে জুতাজোড়া রেখে দেন। পরিষ্কার জলে পোনামাছের সাঁতারের মতো বাড়িটির চতুর্দিকে সেসব আর্তচিৎকার আজো হামেশা সন্তরণ করছে, যুগের পর যুগ বেয়ে।
সন্ধ্যা পড়ে এসেছে। পৌঁছুতে পৌঁছুতে।
এক নির্জন হাইওয়েতে বাস আমাদেরকে নামিয়ে দিয়ে সাঁই সাঁই বাতাস হয়ে গেল। বৃহস্পতিবারের শূন্যতা আমাদেরকে জাঁকিয়ে ধরল যেন।
এখান থেকে হাঁটতে হবে তিন মাইলে। হাঁটা আমাদের ধরে না।
কাঁচা রাস্তা। জংলার মাঝ দিয়ে, নদীর ওপর চরের পথ ধরে।
একসময়ের রাজধামকে অনস্তিত্ব করেছে কালের র্যাঁদা, পথঘাট প্রতিবেশ সব কিছুকে অধিকার করেছে বন, হিজল শাল বৃক্ষ তমাল।
আমরা নেমে পড়ি, হাঁটি। ঝিঁঝিঁ আর কোলা ব্যাঙের গুঞ্জনে সমস্ত বনপথ ঝিমঝিম করছে। বেশ কিছুক্ষণ আগেই বৃষ্টি ঝরে গেছে। পায়ের তলায় পেলব মাটি ক্ষীরের মতো সৌরভ ছড়াচ্ছে। কতক্ষণ হাঁটলাম?
ছয় কিলোমিটার অনেক দূর। মনে হচ্ছে অনন্তকাল ধরে সময়ের রেখাপথ ছুঁয়ে আমরা শুধু হেঁটেই চলছি... যাদের কোনো গন্তব্য নেই, পথই লক্ষ্য।
পায়ের গোড়ালিতে চিনচিন একটা ব্যথা হঠাৎ জেগে উঠে না না করল। মাথার ভেতর প্রচণ্ড শব্দে যেন পাহাড়ের পাথরপ্রপাত ঘটল, ধপ করে বসিয়ে দিলো। প্রমিথিউস, এইখানে একটু থামেন। তিনি দাঁড়ালেন। দীর্ঘ পথচলার বিরতিতে মস্তিষ্ক খানিক আলস্য পেয়ে হয়তো বা চার পাশটা সুস্থির পর্যবেক্ষণের অবকাশ পেলো। হঠাৎ রাফি কী ভেবে চমকে উঠলেন, ভাবনাটা আমার মধ্যেও দুলছিল। আচ্ছা আমরা কি পথ হারালাম? কোনো গোলকধাঁধায় পড়ে ঘুরছি না তো?
তড়িন্ময় উত্তেজনায় দাঁড়িয়ে পড়লাম দুজনই। আমি চাপা স্বরে ফিস ফিস করে বললাম, রাফি দা, জামাটা খুলে উল্টিয়ে পরতে হবে আরেকবার। অন্ধকারের আলেয়া ভর করেছে আমাদের।
অবিশ্বাসী প্রমিথিউস রাফি বনের নিঝুম পরিবেশের অবিচ্ছিন্ন নৈঃশব্দ্যের জাল ফাটিয়ে হা হা করে উঠলেন। আজেবাজে কথা ছাড়েন। গান শুনতে শুনতে হাঁটতে থাকি আসেন। ব্রেনকে এসব ভাবতে ছাড় দিলে সে এসবই দেখাবে।
দুটোই হাঁটছি পাগল। তরলীভূত আঁধারের আঠায় জমাট বেঁধে আছে পথপাশের গাছের জঙ্গল।
হয়তো কোনো এক ঝোপ পাতার ফাঁক দিয়ে দেখি, একটা টিমটিমে আলো জ্বলছে অদূর নিচে। আলোটাই শুধু, তার ওপাশ অস্পষ্ট। কুঁজো হয়ে কেউ কি বসে আছে ওখানে?
সোজা পথটা থেকে নেমে পড়লাম, গাছগাছড়ার ঝোপ ছাড়িয়ে প্রাচীন গাছের শেকড় মাড়িয়ে মোটামুটি প্রশস্ত পরিসরের একটা জায়গায় এসে পড়লাম আমরা।
বড় উঠান, বুনো ঘাস আর জংলায় ছাওয়া। বেড়ার ওপর একটা পুরনো ডাকবাক্সের কঙ্কাল। একপাশে একটা মরা দীঘি। লতায় পাতায় ধুলো ময়লায় ক্লিষ্ট। মাঠের ওপারে একটা সেরকমই প্রাচীন রাজকীয় বাড়ি। আমরা হয়তো এসে গেছি। এটাই কি? সেই তেপান্তর বাড়ি?
কিন্তু এত চকচকে নতুনের মতো কেন?
সভ্য নগরজীবন থেকে বহু দূরের এক পরিবেশে এমন একটা বাড়ি, যেন কেউ আঙুলের মাথায় ধরে তুলে এনে বসিয়ে গেছে।
মোলায়েম আলোয় মৌচাক প্রতীম ম্লান রহস্যময়তায় জ্বলছে সুন্দরতম বাড়িটা। সর্বত্র বাতি। এমন দৃশ্য বিক্ষিপ্ত মনে স্বস্তি এনে দেয়।
কড়া নাড়তে কাঠের দরজার হাতলে স্পর্শ করব যেই... তার কাচের একটা অংশ খুলে গিয়ে ওপাশ থেকে উঁকি দিলো কেউ মোমের আলোয় প্রতিভাত হলো বয়সরেখায় আজীর্ণ একটি মুখ।
তৃতীয় পোশাক
তিন ইঞ্চি পুরু পশমের কার্পেটের আরাম পায়ের তলায়। চোখ ধাঁধা করছে সুরম্য ঝাড়বাতির সোনালি জৌলুসে। কোথাও এসি নেই, কিন্তু তেমনই প্রশান্ত মহাসাগরীয় হাওয়ায় বিশালাকার হলকক্ষটা ঘুম ঘুম নীল। একটা পাশের দেয়ালে পুরোটা জুড়ে আছে পেইন্টিং। বিখ্যাত। সালভাদর দালির দ্য টেম্পটেশন অব সেইন্ট এন্থনি।
রাতের খাবারে যেন ডালা নেমে এলো আসমান বেয়ে। রুপোর পাত্র বের হলো পুরনো কাঠের আলমিরা থেকে। সত্তর পদে ঝলমল করছে দস্তরখানা ভরা সোনার বাটি।
দারোয়ানজি, আমি রাফি। আহারান্তে বারান্দায় এসে বসেছি। শীত নেমে এসেছে এই পূর্ণিমাপ্লাবিত চরাচরে। টিনের চালায় বেঠোফেনের মুনলাইট সোনাটার মতো ছন্দে ঝরছে টুপটাপ শিশিরবিন্দু।
দিব্যি পরিবেশ প্রতিবেশ। বুড়ো ভদ্রলোকটি একটা সিগারেট চেয়ে নিয়ে আগুনের চিমটি ধরাতে ধরাতে রহস্য ঘনীভূত স্বরে বললেন, রাতে এ ঘর ও ঘর অদৃশ্য কারো খড়মের খটখট পায়চারির আওয়াজ শুনলে ভয় পাবেন না যেন!
আমরা বুঝলাম, রাতের আতিথেয়তা উপভোগ্য করতে এ-ও আরেকটি চমৎকার অংশ।
সমন্বিত তিনটি স্বরে মৃদু হাসির শব্দ, তারপর নাটকীয় নীরবতা কিছুক্ষণ, হঠাৎ কোথাও ঘণ্টা বেজে উঠল ঢং... রাত্রি বাজল একটা।
খরগোশের শরীরের মতো মসৃণ সোফার কুশন বালিশ করে আমরা গা ছাড়লাম পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কার্পেটে।
চোখের পাতায় ঘুমের মেঘ নেমে আসতে আসতে শুনলাম প্রমিথিউস রাফির ঘুমজড়ানো গলার স্বগতোক্তি, জংলা হন্টেড প্লেসে বসে রহস্যগল্পটা লেখা বুঝি এই যাত্রায় আর হলো না।

শেষ পোশাক
ক্লান্তির ঘুমে কোনো স্বপ্ন হয় না।
দীর্ঘ একটি অবচেতনার অনুভূতিহীন মৃত অন্ধকারের পর হঠাৎ বোধ হলো, মুখের ওপর বুঝি ঘনিয়েছে আগুনের হল্কার উত্তাপ।
চোখ খুলল, বিস্ময়ে পিলে চমকাল, দেখি সূর্যের দিকে চেয়ে আছি। তার বিকিরণ আমার মুখপর্যন্ত পথ করেছে।
কাঁধের তলায় বালিশের বদলে পাথরশক্ত এটা কী? ধড়ফড় করে উঠে বসি। চারপাশের সেই রাজকীয় দেয়াল, মাথার ওপরের ছাদ কই গেল?
কোথায় সে রাজপ্রাসাদ। একটা রুক্ষপ্রকৃতি টিলার ওপর নিজের অস্তিত্ব আবিষ্কার করি। দৃষ্টিসীমার ভেতর শুধু বিরান মাঠ আর ঝোপঝাড়ের। খোলা আকাশ, বিরান নির্জন এ কোন অঞ্চল?
এ যে একটু নিচেই পাশ ঘেঁষে রাতের সেই জঙ্গলপূর্ণ পথটা।
ব্যাপারটা কী ঘটল, কিছুক্ষণ ভাবতেই শিরদাঁড়া বেয়ে ঠাণ্ডা একটা সাপ নেমে যায়।
ডান দিকে চেয়ে দেখি অদূরেই আরেকটি টিলার ওপর বসে বিস্ময়ে চোখ-মুখ ডলছে, গায়ে চিমটি কাটছে উ™£ান্তের মতো, প্রমিথিউস রাফি।
তার কপাল ঘামছে। সে কি নতুন আরেকটি গল্প পাবে?

 


আরো সংবাদ



premium cement
আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপির হাল ধরার কেউ নেই : ওবায়দুল কাদের পাবনায় ভারতীয় চিনি বোঝাই ১২টি ট্রাকসহ ২৩ জন আটক স্বচ্ছতার সাথে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী মিয়ানমার বিজিপির আরো ১৩ সদস্য পালিয়ে এলো বাংলাদেশে শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক মন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তুলে ২ ভাইকে হত্যা ইরানে ইসরাইলি হামলার খবরে বাড়ল তেল সোনার দাম যতই বাধা আসুক ইকামাতে দ্বীনের কাজ চালিয়ে যাবো : ডা: শফিকুর রহমান দৌলতপুরে জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি কোনো কাজেই আসছে না ৪১৩ কোটি টাকার গাজনার বিল বহুমুখী প্রকল্প রাজশাহী ও কক্সবাজারে চার মোটরসাইকেল আরোহীসহ নিহত ৬

সকল