মুমিনরা পবিত্র পথের পথিক
- নাজমুল হুদা মজনু
- ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
আল্লাহ তায়ালা যাকে ভালোবাসেন তার প্রতি দয়ার্দ্র হয়ে তাকে দ্বীনের সঠিক জ্ঞান দান করেন; হেদায়েতের মাধ্যমে অবিরাম অবিচল পবিত্র পথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ তায়ালা মহা পবিত্র এবং পবিত্রতাকে তিনি পছন্দ করেন।
ইবনু উমার রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেন : কেউ অজু করে রাত যাপন করলে তার কাছাকাছি একজন ফিরিশতা রাত যাপন করেন। সে জাগ্রত হওয়ার আগ পর্যন্ত (বা জাগ্রত হলে) ওই ফিরিশতা তার জন্য এই বলে দোয়া করেন : হে আল্লাহ! আপনার এই বান্দাকে ক্ষমা করে দিন, কেননা সে পবিত্রতা অর্জন করে রাত যাপন করেছে। (ইবনু হিব্বান-১০৫৭)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআন মাজিদে পবিত্র জীবন প্রত্যাশী কিছু তরুণের কীর্তিগাথা বর্ণনা করেছেন, (ঘটনাটি এমন হয়েছিল) যুবকরা যখন গুহায় আশ্রয় নিলো, অতঃপর তারা (আল্লাহর দরবারে এই বলে) দোয়া করল, হে আমাদের মালিক, একান্ত তোমার কাছ থেকে আমাদের ওপর তুমি অনুগ্রহ দান করো, আমাদের কাজকর্ম (আঞ্জাম দেয়ার জন্য) তুমি আমাদের সঠিক পথ দেখাও। (আল-কাহাফ : ১০)
অতঃপর একপর্যায়ে আসহাবে কাহাফের তরুণরা আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত জ্যোতির্ময় হেদায়াতের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে পবিত্র জীবন লাভ করে। তাদের সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ জাল্লা শানুহু বলেন, (হে নবী) আমিই তোমার কাছে তাদের বৃত্তান্ত সঠিকভাবে বর্ণনা করছি; (মূলত) তারা ছিল কিছু নওজোয়ান ব্যক্তি, যারা তাদের মালিকের ওপর ঈমান এনেছিল, আমি তাদের হেদায়াতের পথে এগিয়েও দিয়েছিলাম।
আমি তাদের অন্তকরণকে (ধৈর্য দ্বারা) দৃঢ়তা দান করেছি, যখন তারা (আল্লøাহর পথে) দাঁড়িয়ে গেল এবং ঘোষণা করল, আমাদের মালিক তো হচ্ছেন তিনি, যিনি আসমানসমূহ ও জমিনের মালিক, আমরা কখনো আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর কাউকে ডাকব না, যদি (আমরা) এমন (অযৌক্তিক) কথা বলি তাহলে (তা হবে মারাত্মক) দ্বীনবিরোধী কাজ। (আল-কাহাফ : ১৩-১৪)।
আল্লাহ তায়ালার পথে চলতে গিয়ে প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখীন হতে হয় বটে; কিন্তু ধৈর্য ধরে আল্লাহর সাহায্যের আশায় বুক বেঁধে যারা এগিয়ে যায় মহান প্রতিপালক আল্লাহর সাহায্য তাদের জন্য অবধারিত।
উল্লেখিত সূরার ১৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, (অতঃপর জোয়ানরা পরস্পরকে বলল,) আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্যদের যারা মাবুদ বানায় তাদের কাছ থেকে তোমরা যখন বিচ্ছিন্ন হয়ে চলেই গেলে, তখন তোমরা (এখান থেকে বের হয়ে বিশেষ) একটি গুহায় গিয়ে আশ্রয় নাও, (সেখানে) তোমাদের মালিক তোমাদের ওপর তাঁর রহমতের (ছায়া) বিস্তার করে দেবেন এবং তোমাদের বিষয়গুলো তোমাদের জন্য সহজ করে দেবেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পথে পা বাড়ালে তিনি বান্দাকে সামনে চলার শক্তি জোগান; কার্যত সব ধরনের সাহায্য দান করেন। এক হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, বান্দা যখন আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে, আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে যাই, আর সে যখন আমার দিকে এক হাত এগিয়ে আসে, আমি তার দিকে দুই হাত পরিমাণ এগিয়ে যাই, আর যদি সে আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।
এ ক্ষেত্রে মুমিনের মনে রাখতে হবে আল্লাহর পথে অগ্রসর হতে হলে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা:-এর ভালোবাসা এক পরম পাথেয়।
একদা ‘উমার ইবনুল খাত্তাব রা: বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনাকে আমার নিজের আত্মা ব্যতীত সব চাইতে ভালোবাসি। তখন নবী সা: বললেন : ওই সত্তার কসম করে বলছি, যার হাতে আমার প্রাণ। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তোমার কাছে তোমার আত্মার চাইতে প্রিয় না হবো, ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন নও। তখন উমার রা: বললেন : এখন আপনি আমার আত্মার চেয়েও অধিক প্রিয়। (বুখারি)
আল্লাহ তায়ালার হাবিবকে ভালোবাসলে আল্লাহ তায়ালা তাকেও ভালোবাসেন। তাই তো দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ লাভ করতে হলে আল্লাহর হাবিবের অনুকরণ-অনুসরণ অপরিহার্য।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরো বলেন, (হে নবী) তুমি বলো, তোমরা যদি আল্লাহ তায়ালাকে ভালোবাসো, তাহলে আমার কথা মেনে চলো, (আমাকে ভালোবাসলে) আল্লাহ তায়ালাও তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তিনি তোমাদের গুনাহখাতা মাফ করে দেবেন; আল্লাহ
তায়ালা অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়াবান। (আলে-ইমরান : ৩১)
লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা