ইসলামে যেভাবে নিষিদ্ধ হলো মাদক
- শাহাদাত হোসাইন
- ০৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
নেশার উদ্রেককারী এমন সব বস্তু যা সেবনে মানুষের বিবেক-বুদ্ধি আচ্ছন্ন হয়। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বিনষ্ট হয়- ইসলামে তা মাদক হিসেবে পরিচিত। মাদকের ভয়ঙ্কর থাবায় বিশ্বব্যাপী বিপন্ন আজ মানব সভ্যতা। মাদকের সর্বনাশা মরণ ছোবল কেড়ে নিচ্ছে যুবকদের সদ্য-পরিস্ফুটিত জীবন-যৌবন। এতে কলুষিত হচ্ছে পারিবার ও সমাজব্যবস্থা। বিঘিœত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় শান্তি ও নিরাপত্তা। লঙ্ঘিত হচ্ছে আইনকানুন, যা দেশ ও জাতির জন্য বয়ে আনছে ঘোর অমানিশা।
ওমরের দোয়া ও মাদক নিষিদ্ধ : ইসলাম মানবতার ত্রাণকর্তা, যা মানুষকে শারীরিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক, সামাজিক ও নৈতিক অধঃপতন মুক্ত করে। মানুষের সুস্থ বিবেক-বুদ্ধি সংরক্ষণ করে। মাদক সেবন মানুষের সুবোধকে ধ্বংস করে। ইসলামপূর্ব সমাজ ব্যবস্থায় মাদক সেবন সাধারণ পানির মতো ছিল। মাদক সেবন আভিজাত্যের পরিচায়ক বলে বিবেচিত হতো। হজরত ওমর রা: মাদকের অনিষ্টতা থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলেন, হে আল্লাহ! মদের ব্যাপারে আমাদেরকে সুস্পষ্ট বিধান দিন। বলা হয়, শিশুদেরকে মায়ের দুধ ছাড়ানো যেমন কষ্টকর, তার থেকেও অধিক কষ্টকর ব্যক্তির খারাপ স্বভাব ছাড়ানো। ইসলাম তার অনুসারীদেরকে এই খারাপ স্বভাব মুক্ত করতে ধাপে ধাপে সুনিপুণ ও কার্যকরী পন্থা অবলম্বন করে।
উপকারের তুলনায় অপকার বেশি : ইসলাম মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম, যা মানুষের স্বভাব ও চরিত্র স¤পর্কে স¤পূর্ণ ওয়াকিবহাল। যেহেতু, ইসলামপূর্ব সমাজে মাদক সেবন সিদ্ধ ছিল। তাই হঠাৎ নিষিদ্ধ করলে তাদের বিদ্রোহ কিংবা কষ্টে নিপতিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। তাই ইসলাম প্রথমে মাদকতার ক্ষতি স¤পর্কে মানুষকে সতর্ক করেন। কুরআনে এসেছে- ‘তারা তোমাকে মদ ও জুয়া স¤পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলে দাও, উভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্য উপকারিতাও রয়েছে, তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়’ (সূরা বাকারা-২১৯)।
মাদকাশক্ত অবস্থায় নামাজ নিষিদ্ধ : মাদক সেবন সুস্থ মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটায়। হিতাহিত বিবেক-বুদ্ধি লোপ করে। কথাবার্তায় স্খলন আনে। বর্ণিত আছে, একবার সাহাবিরা মদপানের পরে মাগরিবের নামাজে দণ্ডায়মান হন। তাদের ইমাম কেরাত পাঠে এমন ভুল করেন, যাতে সূরার অর্থে মারাত্মক বিকৃতি সাধিত হয়। তখন নেশাবস্থায় নামাজ পড়তে নিষেধ করা হয়। কুরআনে এসেছে- ‘হে ঈমানদারগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা নামাজের কাছেও যেও না’ (সূরা নিসা : ৪৩)।
নিষিদ্ধতার সিলমোহর : মাদকের ক্ষতি যেহেতু সর্বব্যাপী তাই আল্লাহ তায়ালা এটিকে শয়তানি কাজ বলে আখ্যায়িত করেন এবং মাদক সেবনে নিষেধাজ্ঞার চূড়ান্ত মোহর অঙ্কিত করেন। আল্লাহ বলেন- ‘হে ঈমানদারগণ! নিশ্চিয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি এবং তীর নিক্ষেপ- এ সবই নিকৃষ্ট শয়তানি কাজ। কাজেই এসব থেকে স¤পূর্ণভাবে বিরত থাকো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো’ (সূরা মায়েদা : ৯০)। হাদিসে এসেছে, নবীজী সা: বলেছেন, ‘প্রত্যেক নেশাজাত দ্রব্য হারাম’ (মুসলিম-২০০৩)। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত মদ ও মাদক সেবন থেকে বিরত থাকা। কেননা, মাদক সেবন করে আল্লাহর হুকুম অমান্য করার মাধ্যমে ব্যক্তি নিজেকে জাহান্নামের উপযুক্ত করছে।
লেখক : খতিব, বায়ল আজিম জামে মসজিদ, রংপুর
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা