দোয়া কবুলের সময়
- মো: লোকমান হেকিম
- ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০, আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪৮
আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সা: বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদত’। আল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টি করেছেন। মানুষের প্রয়োজনীয় অনেক কিছু মানুষ না চাইতেই আল্লাহর কাছ থেকে পেয়ে থাকে। এটি আল্লাহর অশেষ রহমত। আর মানুষের প্রয়োজনীয় এমন অনেক কিছু আছে যার জন্য মানুষকে আল্লাহর কাছে সর্বদা চাইতেই হয়, এই চাওয়ার নামই হচ্ছে দোয়া। মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনে অনেক বিপদাপদ, অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়, যা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে। এই দোয়া হাত তুলে করতে হবে এমন কোনো কথা নেই, যখন যা দরকার ছোট-বড় সব প্রয়োজনের জন্য আল্লাহর কাছে একাগ্রচিত্তে চাওয়াই দোয়া।
আল্লাহ বলেন- ‘তোমরা আমার কাছে চাও আমি তোমাদেরকে দেবো’। আল্লাহর কাছে বান্দা কিছু চাইলে আল্লাহ তাতে খুশি হন। হাদিসে আছে, ‘আল্লাহর কাছে দোয়া অপেক্ষা অধিক প্রিয় জিনিস আর কিছুই নেই।’ অতএব দোয়া থেকে বিরত থাকা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আল্লাহ তায়ালা অসীম দয়ালু। আমরা তাঁর কাছ থেকে অসংখ্য নিয়ামত পাচ্ছি প্রতিদিন। তার মধ্যে অন্যতম হলো দোয়া কবুল হওয়া। আমরা যেকোনো সমস্যায় পড়লেই মহান রাব্বুল আলামিনকে ডাকি। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের দোয়া কবুল করার জন্য বিভিন্ন রকম সুযোগ খোঁজেন। সেজন্য দিন-রাতের কিছু মুহূর্ত ঠিক করে রেখেছেন যখন দোয়া কবুল হয়।
আজান ও ইকামতের সময় : হজরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত- হজরত সা: বলেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না।’ (তিরমিজি-১৯৬)
রাতের শেষ তৃতীয়াংশ : প্রতিটি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দোয়া কবুল হয়। আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে, ‘প্রত্যেক দিন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ সবচেয়ে নিচের আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আমাকে ডাকছ, আমি তোমার ডাকে সাড়া দেবো। কে আমার কাছে চাইছ, আমি তাকে তা দেবো। কে আছ আমার কাছে চাইছ, আমি তাকে তা দেবো। কে আছ আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেবো।’ (মুসলিম-১২৬৩)
শেষ রাতে : সাহাবি হজরত জাবের রা: থেকে বর্ণিত- হজরত সা: ইরশাদ করেন, ‘শেষ রাতের যেকোনো সময় কোনো মুসলিমের এমনটা হয় না যে, সে পৃথিবী বা পরকালের জন্য আল্লাহর কাছে কিছু চাইল আর তাকে তা দেয়া হলো না। আর এটি প্রতিটি রাতেই ঘটে।’ (মুসলিম-১২৫৯)
জমজমের পানি পান : মহানবী সা: বলেন, ‘জমজমের পানি যে নিয়তে পান করা হবে তা কবুল হবে।’ (ইবনে মাজাহ-৩০৫৩)
রাতে ঘুম থেকে জেগে : সাহাবি হজরত উবাদা বিন সামিত রা: থেকে বর্ণিত- হজরত সা: বলেন, ‘যে কেউ রাতের বেলা ঘুম থেকে জাগে আর বলে- ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। আলহামদুলিল্লাহি ওয়া সুবহানাল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা-হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’-এবং এরপর বলে, ‘আল্লাহুম্মাগফিরলি (আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন) অথবা আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করে, তাহলে কবুল করা হবে।’ (বুখারি-১০৮৬)
সেজদার সময় : মহানবী সা: বলেন, ‘যে সময়টিতে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী অবস্থায় থাকে তা হলো সেজদার সময়। তোমরা সে সময় আল্লাহর কাছে বেশি চাও।’ (মুসলিম-৭৪৪)
ফরজ নামাজের পর : সাহাবি হজরত আবু উমামা রা থেকে বর্ণিত- হজরত সা:-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি বলেন, ‘রাতের শেষ সময়ে এবং ফরজ নামাজের পর।’ (তিরমিজি-৩৪২১)
বৃষ্টি ও আজানের সময় : হজরত সা: বলেন, ‘দুই সময়ের দোয়া ফেরানো হয় না। আজানের সময়ের দোয়া ও বৃষ্টি পড়ার সময়কার দোয়া।’ (আবু দাউদ-২১৭৮) আল্লাহ তায়ালা আমাদের দোয়া কবুলের যে সুযোগ দিয়েছেন সেটা অনেক বড় প্রাপ্তি। আমাদের সেটা কাজে লাগানো উচিত। দোয়া হলো ইবাদতের মগজ। যারা সুখে-দুঃখে, বিপদাপদে সর্বাবস্থায় দোয়ার হস্ত সম্প্রসারিত করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদের খালি হাত ফিরিয়ে দেন না। কুরআনে ও হাদিসে আল্লাহ আমাদের এমন অনেক দোয়াই শিখিয়ে দিয়েছেন যা আমাদের প্রতিদিন পড়তে হয় এসব দোয়া দ্বারা দুই ধরনের উপকার হয়, যেমন- দোয়া চাওয়াতে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন, অন্যটি হলো এই দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর শোকরানা আদায় হয়ে যায়।
লেখক : চিকিৎসক, কলামিস্ট
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা