১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সবার ঈদ হোক আনন্দের

-


ঈদ মানে খুশি। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা আল্লাহর পক্ষ থেকে মুসলমানদের জন্য প্রাপ্ত বিশেষ উপহার। রাসূলুল্লাহ সা: মদিনায় হিজরত করার পর দেখতে পান, মদিনাবাসী বছরে দু’দিন উৎসব-আনন্দে মেতে ওঠে। তখন রাসূলুল্লাহ সা: আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আদিষ্ট হয়ে মুসলমানদের মধ্যে ঘোষণা করেন, ‘আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে এ দু’টি দিবসের পরিবর্তে এর চেয়ে আরো উত্তম দু’টি উৎসবের দিবস দান করেছেন- ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা’ (সুনানে আবু দাউদ)।

এ জন্য রাসূলুল্লাহ সা: ঈদের দিনে উপবাস যাপন-সিয়াম পালনের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
ঈদের উৎসব ধনী-গরিব সবার। সামর্থ্যবান লোকেরা সদকায়ে ফিতর ও জাকাত আদায় করে তা গরিবদের মধ্যে বিতরণ করে দেবে। এতে ঈদের খুশি ছড়িয়ে পড়বে সবার মধ্যে। তেমনিভাবে সামর্থ্যবান ব্যক্তি কোরবানির সময় জবাইকৃত পশুর গোশত গরিবদের মধ্যেও বণ্টন করবে, আনন্দে সবাই শরিক করবে সবাইকে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: সাদাকাতুল ফিতরকে অপরিহার্য করেছেন। অর্থহীন, অশালীন কথা ও কাজে রোজার যে ক্ষতি হয় তা পূরণের জন্য এবং নিঃস্ব লোকের আহার জোগানোর জন্য (সুনানে আবু দাউদ-১/২২৭)।

তাই সদকায়ে ফিতর আদায় করলে অসহায় বান্দাদের খেদমত করা হয় এবং রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতির ক্ষতি পূরণ হয়।
সদকায়ে ফিতরের বাইরে মানুষকে সাহায্য করা চাই। ঈদের দিনে ভালো পোশাক পরা ও দুই বেলা ভালো খাবার খাওয়ার প্রত্যাশা থাকে সবার। কিন্তু সামর্থ্য থাকে না অনেকের। এ জন্য ধনীদের উচিত সবার মধ্যে ঈদের খুশি বিলিয়ে দেয়া। সাধ্যমতো মানুষের প্রয়োজন পূরণ করা। যারা অন্যের প্রয়োজন পূরণ করে, আল্লাহ তায়ালাও তাদের প্রয়োজন পূরণ করেন। হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূল সা: বলেছেন, ‘যতক্ষণ একজন মানুষ অন্য মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে, আল্লাহ তায়ালাও তার কল্যাণে নিয়োজিত থাকবেন’ (মুসলিম)।
অন্য হাদিসে আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন- হে আদম সন্তান! তুমি ব্যয় করো, আমিও তোমার জন্য ব্যয় করব’ (বুখারি)।

অপর এক হাদিসে নবী সা: বলেছেন, ‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কাজেই সে তার ওপর নির্যাতন করবে না এবং তাকে অসহায় অবস্থায়ও ছেড়ে যাবে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন মিটাবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন মিটাবেন। একইভাবে যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন রাখবেন’ (বুখারি)।
তাই সাধ্যমতো পরস্পরের প্রয়োজন পূরণ করতে হবে। সবার মধ্যে ঈদের খুশি ছড়িয়ে দিতে হবে। তবেই ঈদ হবে সবার আনন্দের ও খুশির।
লেখক : তরুণ আলেম ও প্রাবন্ধিক


আরো সংবাদ



premium cement