জাকাত না দেয়ার শাস্তি
- মুফতি আইয়ুব নাদীম
- ২৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০৫
ইসলাম যে পাঁচটি স্তম্ভের ওপর যুগ যুগ ধরে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত আছে তার অন্যতম জাকাত। সঠিকভাবে জাকাত আদায় করলে, একদিকে যেমন সম্পদশালী ও বিত্তবানদের সম্পদ পরিশুদ্ধ ও পবিত্র হয়, অন্যদিকে সমাজ ও রাষ্ট্রে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়েপড়া, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত বিশাল এক জনগোষ্ঠীর দরিদ্রতা ও অসচ্ছলতা দূর হয়ে শান্তি ও সচ্ছলতা ফিরে। বিপরীতে যারা দুনিয়ার লোভ-লালসা ও অর্থকড়ির মোহে পড়ে, গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান জাকাতকে বর্জন করে, তারা জাকাত আদায়ের যাবতীয় সুফল ও কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয় এবং পরকালীন জীবনে অত্যন্ত নিকৃষ্ট ও কঠিন শাস্তিতে নিপতিত হবে। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে জাকাত অনাদায়কারীর ব্যাপারে নানা ধরনের শাস্তি ও নিন্দার ভয়াবহতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।
যাদের ওপর জাকাত ফরজ : ‘সুস্থ মস্তিষ্ক, আজাদ, বালেগ, মুসলমান, নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে জাকাত আদায় করা তার ওপর ফরজ হয়ে যায়।’ (বাদায়েউস সানায়ে-২/৭৯, ৮২)
জাকাতের খাত : যাদের ওপর জাকাত ফরজ হয়েছে, তারা কাদের জাকাত প্রদান করবেন, এ প্রসঙ্গ পবিত্র কুরআনের একটি দীর্ঘ আয়াত বর্ণিত হয়েছে-‘জাকাত তো কেবল ফকির, মিসকিন, আমিলিন (জাকাত-সংক্রান্ত কাজে নিযুক্ত ব্যক্তি) দাস মুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের জন্য এবং মুসাফিরদের জন্য। এ হলো আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’ (সূরা তাওবা : ৬০)
জাকাত না দেয়ার পরিণতি : জাকাত শরিয়তের অকাট্য ফরজ বিধান। যারা জাকাত আদায় করে না তারা শরিয়তের দৃষ্টিতে কঠিন অপরাধী এবং আখিরাতে ভীষণ শাস্তির সম্মুখীন হবে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, যারা সোনা-রুপা পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাময় শাস্তির ‘সুসংবাদ’ দাও। যেদিন সে ধন-সম্পদ জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, তারপর তা দিয়ে তাদের কপাল, তাদের পাঁজর ও পিঠে দাগ দেয়া হবে (এবং বলা হবে) এই হচ্ছে সেই সম্পদ, যা তোমরা নিজেদের জন্য পুঞ্জীভূত করতে। সুতরাং তোমরা যে সম্পদ পুঞ্জীভূত করতে, তার মজা ভোগ করো।’ (সূরা তওবা : ৩৪-৩৫)
জাকাত বর্জন করায় সাপের শাস্তি : হজরত আবু হুরায়রা রা: সূত্রে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, ‘যাকে আল্লাহ তায়ালা সম্পদ দিয়েছেন এবং সে তার জাকাত দেয় না; কিয়ামতের দিন ওই সম্পদ বিষাক্ত সাপে পরিণত করা হবে, যার উভয়ই চোখের উপর দু’টি বিন্দু থাকবে। (এমন সাপ অত্যধিক বিষাক্ত হয়) এবং তার গলায় বেড়ির মতো পেঁচিয়ে দেয়া হবে। সাপ তার উভয় চোয়ালে কামড় দেবে এবং বলবে, আমি তোর সম্পদ, আমি তোর সঞ্চয়।’ (বুখারি-১৪০৩)
জাকাত বর্জন করলে জাহান্নামে যেতে হবে : হজরত আনাস বিন মালিক রা: সূত্রে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, ‘যে জাকাত দেয় না; কিয়ামতের দিন সে জাহান্নামে যাবে।’ (কানজুল উম্মাল-১৫৮১১)
জাকাত বর্জনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রকাশ পায় : হজরত আবু বুরাইদা রা: সূত্রে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে জাতি জাকাত দেয়া বন্ধ করে, আল্লাহ তায়ালা তাদের দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত করেন, অপর বর্ণনায় এসেছে যে, আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর বৃষ্টি বন্ধ করে দেন।’ (আল মুজামুল আওসাত)
জাকাত বর্জনকারী মুনাফিক : হজরত ইবনে ওমর রা: সূত্রে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘নামাজ তো এমন একটি বস্তু যা সবার সম্মুখে প্রকাশ পায়, তা গ্রহণ করেছে। আর জাকাত গোপন জিনিস তা নিজে খেয়ে ফেলেছে। হকদারকে দেয়নি। এমন লোক মুনাফিক।’(মুসনাদুল বাজ্জার-৪৭১)
লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলুম মাদরাসা, মধুপুর, টাঙ্গাইল
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা