১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিজরি
`

রাসূলের জন্মলাভ

-

৫৭১ খ্রিষ্টাব্দ। জীর্ণশীর্ণ একটি পুরনো ঘর। ৯ হাত উঁচু, ছাদবিহীন দেয়াল। ঘরকে ঘিরে গড়ে উঠেছে সুবিশাল জনবসতি। ঘরটির সেবায় সর্বদা নিয়োজিত থাকেন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা। ঘরের জন্য হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে দূর থেকে আসা আগন্তুকের আপ্যায়ন করার তাদের মতো অন্য কারো জুড়ি ছিল না। তা হলো আল্লাহর ঘর কাবা। তাকে ধ্বংস করার জন্য এক ব্যক্তি দুঃসাহস করেছিল। আল্লাহ তাকেও ধ্বংস করে দিয়েছেন। ওই ঘটনার ৫০ কিংবা ৫৫ দিন পর সেখানে আমাদের নবী মুহাম্মদ সা: জন্মলাভ করেন।
ইয়েমেনের গভর্নর আবরাহা যখন দেখল যে, আরবরা কাবাগৃহে হজব্রত পালন করছে এবং বিভিন্ন দেশ থেকে সেখানে লোকসমাগমের সৃষ্টি হয়। তাই সে ইয়েমেনের রাজধানী সানআয় কাবার মতো অবিকল বিরাট গির্জা তৈরি করল এবং আরবদেরকে সেদিকে হজব্রতকে ফিরিয়ে আনার জন্য আহ্বান জানাল। সংবাদ শোনা মাত্রই বনু কিনানাহ গোত্রের এক ব্যক্তি সঙ্গোপনে গির্জায় গিয়ে সামনের দেয়ালটিতে পায়খানা লেপটে দিয়ে নোঙরা করে ফেললেন। সে কারণেই ইয়েমেনের গভর্নর আবরাহা রাগে-ক্রোধে অগ্নিশর্মা হয়ে কাবাকে ধ্বংস করার জন্য সদলবলে তেড়ে আসছে মক্কা অভিমুখে। সাথে ছিল অসংখ্য শক্তিশালী সৈন্য ও অজস্র শক্তির অধিকারী হাতি। হাতিকে কেন্দ্র করে এ বছরের নামকরণ করা হয় আমুল ফিল বা হস্তি বছর। অধিবাসীরা সৈন্যবাহিনীকে সামাল না দিতে পেরে কার্যভার আল্লাহর ওপর ন্যস্ত করে ভয়ে পালিয়েছে। আবরাহা ও তার সৈন্যরা যখন মুজদালিফা এবং মিনার মধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছল তখন হাতিগুলো সামনে অগ্রসর না হয়ে মাটিতে বসে পড়ল।
আল্লাহ তায়ালা ঝাঁকে ঝাঁকে ছোট ছোট পাখি প্রেরণ করলেন। প্রতিটি পাখির ঠোঁটে ও দুই পায়ে তিনটি করে কঙ্কর ছিল। মুহূর্তের মধ্যে আকস্মিকভাবে কঙ্করের আঘাতে সবাই নাস্তানাবুদ হয়ে যাচ্ছিল। কেউ ছুড়ে মারা কঙ্করের আঘাতে মরছে আবার কেউ প্রাণ ভয়ে পালাতে গিয়ে অন্যকে পদতলে পিষে মারছে। আবরাহাও আক্রান্ত হয়ে রাজধানী সানআয় গিয়ে মৃত্যু মুখে ঢলে পড়ল। ওই ঘটনার ৫০ কিংবা ৫৫ দিন পর সেখানে আমাদের নবী মুহাম্মদ সা: জন্মলাভ করেন।
ঘটনাটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ল। তৎকালীন বিশ্বের পরাশক্তি ছিল রোম ও পারস্য। তারা আহলে কিতাব ছিল। তারা পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য অংশের প্রতিনিধিত্ব করত। সেই সুবাদে পুরো পৃথিবীর দৃষ্টি কাবা ঘরের অলৌকিকত্বের প্রতি নিবদ্ধ হলো। আল্লাহর ঘরের সুমহান মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহ প্রদত্ত সুস্পষ্ট আলামত স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করার পর এ কথা তাদের মনে দৃঢ়ভাবে গ্রথিত হলো যে, এ ঘরকে হেফাজত, পবিত্র ও মর্যাদাকে অক্ষুণœ রাখার ব্যাপারেই আল্লাহ তায়ালা এ অলৌকিক ব্যবস্থা অবলম্বন করেছিলেন। অতএব ভবিষ্যতে এখানকার অধিবাসীদের মধ্য থেকে কেউ যদি নবুওয়াত দাবি করে তাহলে তা হবে যথার্থ। কেননা, শেষ নবীর প্রতিশ্রুতির কথা পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবসমূহে সন্নিবেশিত হয়েছে।
ওই অলৌকিক ঘটনার বছরই রবিউল আওয়াল মাসের সোমবারে সুবহে সাদিকের সময় সেই প্রতিশ্রুত নবী মুহাম্মদ সা: পৃথিবীতে আগমন করেন।
লেখক : শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক


আরো সংবাদ



premium cement
পিরোজপুরে দিনমজুরের স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের চেষ্টা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ‘এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন’ নিয়ে বিপাকে ২ পুলিশ কমিশনারসহ ৫ এসপি প্রত্যাহার পেঁয়াজের বাজারে অভিযান : ৮০ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ফেনীতে ম্যাজিস্ট্রেট দেখে ১০০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি আসন ভাগাভাগি নিয়ে বৈঠকে ১৪ দলের নেতারা গাজা যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ১৮ হাজার যতক্ষণ পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মুক্তি না দেয়া হবে আন্দোলন চালিয়ে যাব : আরিফুল হক টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরাই মানবাধিকারের কথা বলে, প্রেসক্রিপশন দেয় : তথ্যমন্ত্রী ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে নেমে আসবে : অর্থসচিব

সকল