২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রকৃত ধনী

-

দুনিয়ায় চলতে গেলে দুনিয়াবি আসবাবপত্র প্রয়োজন। যেমন নদীতে নৌকা চালাতে পানি লাগে। নদীর পানি নৌকার জন্য ততক্ষণ উপকারী যতক্ষণ তা নৌকার নিচে থাকে। পানি নৌকার উপরে উঠে গেলে তা আর উপকারী হয় না; বরং তা সেই নৌকার জন্য ডেকে আনে এক অনিবার্য ধ্বংস। হালাল পন্থায় টাকা পয়সা আয়-রোজগার করা দোষণীয় নয়; বরং অন্যান্য ফরজের মতো এটিও একটি ফরজ। যেমন- রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘অন্যান্য ফরজ বিধান পালন করার পর হালাল পন্থায় উপার্জন করাও একটি ফরজ।’ (ঈমাম বায়হাকি রহ: রচিত সুনানে কুবরা-১২৮/৬)
টাকা-পয়সা উপার্জন করুন, তবে তা উপার্জন করতে গিয়ে একেবারে দুনিয়ামুখী হওয়া যাবে না। সাহাবিদের মধ্যেও অনেকে প্রচুর ধনসম্পদের মালিক ছিলেন; কিন্তু তারা সারাক্ষণ দুনিয়া নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকতেন না। মনে রাখবেন, আপনার ভাগ্যে যা লিখে রাখা হয়েছে তা আপনি অবশ্যই পাবেন। অতিরিক্ত পাওয়ার আশা বর্জন করুন। নতুবা আপনি কোটি কোটি টাকা অর্জন করলেও আত্মিক তৃপ্তি লাভ করতে পারবেন না। এটা লাগবে, ওটা লাগবে সবসময় মনের মধ্যে এমন একটি অস্থিরতা বিরাজ করবে। ধনী হতে হলে খুব বেশি ধনসম্পদ লাগে না। অন্তরের ধনাঢ্যতাই এ ক্ষেত্রে মূল। রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘ধনের আধিক্য হলে ধনী হয় না, অন্তরের ধনীই প্রকৃত ধনী।’ (সহিহ বুখারি-৬৪৪৬)
অতিরিক্ত সম্পদের নেশা মানুষকে আল্লাহবিমুখ করে। সার্বক্ষণিক সম্পদ অর্জনের চিন্তায় সে বিভোর থাকে। সম্পদশালী ব্যক্তি নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে এবং সম্পদের মাধ্যমে সে তার যাবতীয় সমস্যার সমাধান করতে চায়। বিপদাপদে সে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা না করে তার ধনসম্পদের দ্বারস্থ হয়।
সম্পদশালীরা মাল অর্জন করে এবং তা গুনে গুনে রাখে এবং মনে মনে ভাবে, এই মাল বা ধনসম্পদ তাকে চিরস্থায়ী করে রাখবে। এসব লোকের সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা অর্থ জমা করে ও তা গুনে গুনে রাখে। সে ধারণা করে যে, তার অর্থ তাকে অমর করে রাখবে।’ (সূরা হুমাজাহ : ২-৩)
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হালাল পন্থায় সম্পদ অর্জন করার তাওফিক দান করুন এবং আমাদের রিজিকে প্রাচুর্যতা দান করুন। আমিন।
লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া আরাবিয়া মাখযানুল উলুম, ময়মনসিংহ সদর


আরো সংবাদ



premium cement