২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

একজন প্রকৃত আলিম ও তার মর্যাদা

-

একজন প্রকৃত আলিমের মর্যাদা নবী সা:-এর কাছে অনেক বেশি! সহজেই কেউ একজন বিজ্ঞ আলিম হতে পারে না। তার জন্য অনেক ত্যাগ শিকার করতে হবে, রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটাতে হবে। আমল-আখলাকে অতুলনীয় হতে হবে। বাংলা কুরআন তরজমা পড়ে, বাংলায় বুখারি-মুসলিম পড়ে একজন বিজ্ঞ আলিম হওয়া যায় না।

একজন বিজ্ঞ ডাক্তার হওয়ার আগে তাকে কতজনের কাছেই না যেতে হয়েছে পড়ার জন্য। প্রথমে প্রাথমিক, কলেজ, ভার্সিটি। কত শিক্ষকের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। তারপর আলাদা করে করে ডাক্তারি পড়তে হয়েছে। এরপর পরীক্ষা, পরীক্ষার রেজাল্ট ইত্যাদি।

তারপর আবার বিজ্ঞ ডাক্তারের সংস্পর্শে থাকতে হয়। তাকে সেই ডাক্তারের কর্ম অনুসরণ করতে হয়। মেডিক্যালে যদি কখনো যান দেখবেন, একজন ডাক্তারের পেছনে কয়েকজন সাদা পোশাকের খাতা-কলম হাতে পুরুষ ও মহিলার আনাগোনা। এরা মূলত বিজ্ঞ ডাক্তার কোন রোগীকে কী ওষুধ দিচ্ছেন তা নোট করে। এতদিন তো বইয়ে পড়ে আসছে। এবার প্রাকটিক্যালি করতে হয়।

সাধারণত যেমন কিছু ডাক্তারি বই পড়ে একজন ডাক্তার বনতে পারে না, পেসক্রিপশন দিতে পারেন না। ঠিক তেমনি বাংলায় কুরআন তরজমা পড়ে, বুখারি-মুসলিম পড়ে একজন বিজ্ঞ আলিম-মুফতি হওয়া যায় না, ফতোয়া দিতে পারে না।
অথচ আমাদের দেশে জেনারেল শিক্ষিত মুফতির অভাব নেই। তারা এতটাই পারদর্শী যে, যে কাউকে কাফির বানিয়ে দিতে পারে। সাথে সাথে পবিত্র কুরআন ও হাদিস উদ্ধৃতিও দিতে পারে। তাদের যাচাই করতে হয় না, এই হাদিসটি কতটুকু জাল, দুর্বল বা সহিহ। এই হাদিসের রাবি কে? রাবিকে কতটুকু ভরসা করা যায়। কারোর সংস্পর্শেও থাকতে হয় না। মূলত হাদিসটি তার মতের পক্ষে হলেই যথেষ্ট!

আলিমের আভিধানিক অর্থে সবাই আলিম। সবাই জানে। কিন্তু পারিভাষিক অর্থে সবাই আলিম না এবং সবাই রাসূল সা:-এর বলা মর্যাদার অধিকারী হতে পারে না। জুব্বা, টুপি পরলেও কেউ আলিম হয়ে যায় না। কেউ জুব্বা টুপি পরে কুকর্মে লিপ্ত হলে গণহারে আলিমকে দোষারোপ করা যাবে না। একজন আলিমের মর্যাদা নবী সা:-এর নিকট কেমন?

নবীজী সা: বলেন, ‘আবেদের ওপর আলিমের মর্যাদা ঠিক তেমন, যেমন তোমাদের সাধারণ ব্যক্তির ওপর আমার মর্যাদা।’ (তিরমিজি-২৬৮৫) একবার চিন্তা করুন, একজন সাধারণ ব্যক্তির ওপর আমাদের নবীজীর মর্যাদা কেমন? আসমান-জমিনকে এক করে দিলেও কখনো বরাবর হবে না! একজন সাধারণ ব্যক্তির কথা বাদই দিলাম, একজন সাহাবির মর্যাদা কী নবীজী সা:-এর সমান হবে? কখনো হবে না। ঠিক তেমন মর্যাদা একজন আলিমের আবেদের ওপর!

আলিমের মর্যাদার কথা বলতে গিয়ে নবীজী সা: বলেন, ‘আবেদের ওপর আলিমের ফজিলত ঠিক তেমনি, যেমন সমগ্র নক্ষত্রপুঞ্জের ওপর পূর্ণিমার চাঁদের ফজিলত। উলামা সম্প্রদায় পয়গম্বরদের উত্তরাধিকারী।’ (আবু দাউদ-৩৬৪১)
অন্য হাদিসে নবীজী সা: বলেন, ‘আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের ইলম দান করেন। আমি তো বিতরণকারী মাত্র, আল্লাহই (জ্ঞান) দাতা।’ (মুসলিম-১০৩৭) ইলম অর্জন যে কেউ করতে পারে না, আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত সম্ভবও নয়। জ্ঞান সবাই অর্জন করতে পারে, ইলম অর্জন সবাই করতে পারে না। আল্লাহ তাকেই এই ইলম দান করেন, যাকে আল্লাহ মহব্বত করেন। আর আমি-আপনি সেই আলিমকে হেয় প্রতিপন্ন করি!

এ ছাড়া আরো অনেক ফজিলতের কথা হাদিসে উল্লেখ আছে। যে এখনো আলিম হয়নি, শুধু ইলম অর্জন করতে বের হবে, সে পথেই যদি ইন্তেকাল হয়, তার জন্য রয়েছে শহীদী মর্যাদা। আমি-আপনি আলিমদের স্বাভাবিক মনে করছি, অমতে যাওয়াই গালি-গালাজ করছিÑ দেখা গেল তাদের মর্যাদা আকাশচুম্বী!

একজন রোগীকে যেমন ডাক্তারকে অনুসরণ করতে হয়, তার দেয়া প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চলতে হয়, ঠিক তেমনি একজন ব্যক্তি দ্বীনের পথে চলতে হলে আলিমকে সম্মান করতে হবে, তার কথানুযায়ী দিনাতিপাত করতে হবে। যারা বলেন, আমি কোনো আলিমের কথা মানব না, কুরআন ও হাদিস থেকে আমল করব, তারা ওই লেভেলের মূর্খ কৃষকের মতো, যে বলে, ‘আমি কোনো ডাক্তারের কথানুযায়ী চিকিৎসা করাব না। আমি স্বয়ং ডাক্তারি পড়ে, নিজের রোগ উপলব্ধি করে নিজেই চিকিৎসা করব। তা কি কখনো সম্ভব? আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে বোঝার তাওফিক দিন-আমিন!

 


আরো সংবাদ



premium cement
তামাক পণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের দাবিতে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে ২৫ সংসদ সদস্যের চিঠি প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীতে মহিষের আক্রমণে বাবা-ছেলেসহ আহত ৪ গফরগাঁওয়ে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার তীব্র মাত্রায় হিংস্র হয়ে উঠেছে সরকার : মির্জা ফখরুল মিরসরাইয়ে মৃত্যুর ১৫ দিন পর ব্যাংক কর্মকর্তার কবর থেকে লাশ উত্তোলন দেশে দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ রংপুরে মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করায় ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি, অনলাইনে ক্লাস চালুর চিন্তা বিশ্বের অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা হবে বাংলাদেশে : ধর্মমন্ত্রী সিলেটে ৪৪ লাখ টাকার ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার ৪ অবৈধ সম্পদ : এস কে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৬ জুন

সকল