২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাসূল সা:-এর চিকিৎসা পদ্ধতি

-

অসুস্থতা আমাদের জীবনের একটি অংশ। করোনা মহামারীর এহেন পরিস্থিতিতে আমাদের জেনে রাখা উচিতÑ সমগ্র মানবজাতির রহমত হিসেবে প্রেরিত হজরত মুহাম্মদ সা:-এর চিকিৎসা পদ্ধতি কেমন ছিল? আমাদের জ্বর হলে কী খাবার খাওয়া উচিত? তা রাসূল সা:-এর হাদিস থেকে আমরা পাই। এখানে রাসূল সা:-এর চিকিৎসা পদ্ধতির কিছু অংশ তুলে ধরা হলো-
দুধ ও ময়দার মিশ্রণ : আয়েশা রা: থেকে বর্ণিতÑ রাসূলুল্লাহ সা:-এর পরিবারের লোকেদের জ্বর হলে, তিনি দুধ ও ময়দাসহযোগে তরল খাবার তৈরি করার নির্দেশ দিতেন। আয়েশা রা: বলেন, তিনি বলতেন, ‘এটি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনে শক্তি জোগায় এবং রোগীর মনের ক্লেশ ও দুঃখ দূর করে, যেমন তোমাদের কোনো নারী পানি দ্বারা তার চেহারার ময়লা দূর করে’ (সুনানে ইবনে মাজাহ-৩৪৪৫)।
এ ছাড়া আয়েশা রা: থেকে বর্ণিতÑ নবী সা: আরো বলেছেন, ‘অপ্রিয় কিন্তু উপকারী বস্তুটি তোমরা অবশ্যই গ্রহণ করবে। তা হলো তালবিনা অর্থাৎÑ হাসা (দুধ ও ময়দাসহযোগে প্রস্তুত তরল পথ্য)। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা:-এর পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসার পাতিল চুলার ওপর থাকত, যতক্ষণ না রোগী সুস্থ হতো অথবা মারা যেত’ (সুনানে ইবনে মাজাহ-৩৪৪৬)।
কালোজিরার ব্যবহার : আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিতÑ রাসূলুল্লাহ সা:কে বলতে শুনেছেন, ‘কালিজিরায় মৃত্যু ব্যতীত সব রোগের নিরাময় আছে। ‘আস-সাম’ অর্থÑ মৃত্যু, হাব্বাতুস সাওদা অর্থ কালিজিরা’ (সুনানে ইবনে মাজাহ-৩৪৪৭)।
খালিদ বিন সাদ রা: থেকে বর্ণিতÑ আমরা রওনা হলাম এবং গালিব বিন আবজারও আমাদের সাথে ছিলেন। রাস্তায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তিনি অসুস্থ থাকতেই আমরা মদিনায় পৌঁছে গেলাম। ইবনে আবু আতিক রা: তাকে দেখতে এলেন। তিনি আমাদের বললেন, তোমরা এই কালো দানাগুলো ব্যবহার করবে। তা থেকে পাঁচটি বা সাতটি দানা নিয়ে সেগুলো পিষে তেলের সাথে মিশিয়ে নাকের এপাশে ওপাশে অর্থাৎ উভয় ছিদ্রপথে ফোঁটা ফোঁটা করে দাও। কেননা, আয়েশা রা: তাদের কাছে হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সা:কে বলতে শুনেছেন, “এই কালো দানা ‘সাম’ ব্যতীত সব রোগের ওষুধ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘সাম’ কী? তিনি বলেন, মৃত্যু” (সুনানে ইবনে মাজাহ-৩৪৪৯)।
মধু ব্যবহার : আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিতÑ রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন ভোরবেলা মধু চেটে চেটে খেলে সে মারাত্মক কোনো বিপদে আক্রান্ত হবে না’ (সুনানে ইবনে মাজাহ-৩৪৫০)।
রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেছেন, দুই আরোগ্য দানকারী বস্তুকে অবশ্যই তোমাদের গ্রহণ করা উচিতÑ মধু ও কুরআন মাজিদ (সুনানে ইবনে মাজাহ-৩৪৫২)।
ছত্রাক ও আজওয়া খেজুরের ব্যবহার : আবু সাঈদ ও জাবির রা: থেকে বর্ণিতÑ তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, “ছত্রাক হলো ‘মান্ন’ নামক আসমানি খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত এবং তার পানি চক্ষুরোগের নিরাময়। ‘আজওয়া’ হলো জান্নাতের খেজুর এবং তা উন্মাদনার প্রতিষেধক’ (সুনানে ইবনে মাজাহ-৩৪৫৩ )।
নামাজ রোগমুক্ত করে : আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিতÑ তিনি বলেন, নবী সা: হিজরত করলেন, আমিও হিজরত করলাম। আমি নামাজ পড়ার পর তাঁর পাশে বসলাম। নবী সা: আমার দিকে দৃষ্টিপাত করে বলেন, ‘তুমি উঠে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো। কেননা, সালাতের মধ্যে রোগমুক্তি আছে’ (সুনানে ইবনে মাজাহ-৩৪৫৮)।
সোনামুখী গাছের পাতার ব্যবহার : আসমা বিনতে উমায়স রা: থেকে বর্ণিতÑ রাসূলুল্লাহ সা: আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কিসের জোলাব নাও? আমি বললাম, শুবরুম (ছোলা সদৃশ এক প্রকার দানা) দিয়ে। তিনি বলেন, তা তো খুব গরম ওষুধ। অতঃপর আমি সোনামুখী গাছের পাতা দিয়ে জোলাপ নিলাম। তখন তিনি বলেন, ‘কোনো ওষুধ যদি মৃত্যু থেকে নিরাময় দিতে পারত তবে তা হতো সোনামুখী গাছ। সোনামুখী যেন মৃত্যু থেকে নিরাময় দানকারী’ (সুনানে ইবনে মাজাহ-৩৪৬১)।
রোগব্যাধি মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নিয়ামত। তাই আমাদের উচিত ধৈর্যের পরিচয় দেয়া। আমরা যেন জ্বরকে গালি না দেই। কেননা, রাসূল সা: বলেন, ‘জ্বরকে মন্দ বলো না। এটি বনি আদমের গুনাহকে এভাবে দূর করে দেয়, যেভাবে আগুন শুকনো লাকড়িকে জ্বালিয়ে শেষ করে দেয়’ (মুসলিম-২৫৭৫)।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশে নতুন করে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা হিট অ্যালার্ট নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা ভান্ডারিয়ায় পিকআপ চাপায় বৃদ্ধ নিহত হোচট খেল লিভারপুল, পিছিয়ে গেল শিরোপা দৌড়ে যোদ্ধাদের দেখতে প্রকাশ্যে এলেন হামাস নেতা সিনওয়ার! ফের পন্থ ঝড়, ঘরের মাঠে গুজরাটকে হারাল দিল্লি ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র গ্রেফতারের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ আরো বেড়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে দুর্নীতি, পুতিনের নির্দেশে গ্রেফতার রুশ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী!  আমেরিকানরা কি ধর্ম থেকে সরে যাচ্ছে? গাজায় রিজার্ভ ব্রিগেড মোতায়েন ইসরাইলের

সকল