১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হাঁচি সম্পর্কে ইসলাম ও চিকিৎসাবিজ্ঞান

-

মহামারী করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে এর সংক্রমণ রোধে মানুষকে সচেতন করতে যেসব বিষয় বিশ্বব্যাপী ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে তার মধ্যে একটি হলো হাঁচি দেয়ার সময় আমরা কী করব : চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলেন, টিস্যু, রুমাল বা হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরবে। যাতে করে হাঁচিদাতার হাঁচির সাথে বের হওয়া জীবাণুু অন্যের মধ্যে সংক্রমিত না হয়। এই হলো আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের বক্তব্য। এবার আসুন দেখি এ ক্ষেত্রে ইসলাম কী বলে।
আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত হজরত মুহাম্মদ সা: বলে গেছেন, কানা ইজা আতছাগত্তা ওয়াজ্বহাহু বিয়াদিহি আও বিছাও বিহি ওয়াগদ্দাবিহা ছাওতাহুÑ অর্থ হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলে পাক সা: যখন হাঁচি দিতেন তখন হাত বা কাপড় দিয়ে মুখ ডেকে ফেলতেন এবং হাঁচির আওয়াজ নিচু রাখতেন (জামে তিরমিজি, অধ্যায় আবওয়াবুল আদব)।
প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ হাফেজ ইবনে হাজার রহ: এই হাদিসের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে হাঁচিদাতার জন্য করণীয় কিছু আদবের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন ১. হাঁচি দেয়ার সময় আওয়াজ ক্ষীণ করার চেষ্টা করা ২. হাঁচি দিয়ে উচ্চস্বরে আলহামদুলিল্লাহ পড়া ৩. হাঁচি দেয়ার সময় কোনো রুমাল, কাপড় বা হাত দ্বারা মুখ ডেকে নেয়া ৪. হাঁচি দেয়ার সময় চেহারা ডানে বামে না ঘুরানো।
ইবনে আরাবি রহ: এগুলোর হেকমত বর্ণনা করে বলেন, আওয়াজকে এ জন্য নিচু করতে হবে যে, উঁচু আওয়াজে হাঁচি দিলে এতে দেহের অঙ্গ-প্রত্যেঙ্গ কম্পিত হয়ে যায়। আর মুখ এ জন্য বন্ধ রাখতে হবে যে, যাতে মুখ থেকে কোনো কিছু বের হয়ে অন্যের জন্য কষ্টের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। চেহারা ডানে বামে করলেও অনেক সময় অন্য মানুষ কষ্ট পায়।
আল্লাহু আকবার : সম্মানিত পাঠকবৃন্দ লক্ষ করুন, সামান্য হাঁচি দেয়ার সময় করণীয় আদবটা পর্যন্ত দেড় হাজার বছর আগে আমাদের প্রিয়নবী সা: আমাদেরকে শিক্ষা দিয়ে গেছেন। আর আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান ঘুরে ফিরে রাসূল সা:-এর সুন্নতের কাছে ফিরে এসে এটাই প্রমাণ করেছে যে, করোনাসহ সব ধরনের রোগ-ব্যাধি ও বিপদ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হলো আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে রাসূলের সুন্নাহ ও আদর্শের ওপর চলা এবং সর্বদা এর ওপর অটল ও অবিচল থাকা।
আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুনÑ আমীন।
ইমাম, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল-২, সেগুনবাগিচা, ঢাকা

 


আরো সংবাদ



premium cement