২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সালাম ইসলামের সৌন্দর্যময় একটি দিক

-

সালাম ইসলামের সৌন্দর্যময় একটি দিক। সালাম আদান-প্রদানের ফলে শত্রু থেকে বন্ধুতে পরিণত হয়। দুই ব্যক্তির মাঝে ভালোবাসা ফয়দা হয়। চেনা পরিচিতদের মাঝে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। অচেনা মানুষকে আপন করে নেয়া যায়। এই মনোহর রূপমাধুরী শুধু ইসলামেই রয়েছে।
জনৈক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সা:কে জিজ্ঞেস করলেন, ইসলামে কোন জিনিসটি উত্তম? তিনি বললেন, ‘তুমি খাদ্য খাওয়াবে ও চেনা-অচেনা সবাইকে সালাম দেবে (সুনানে আবু দাউদ-১২)।
‘সালাম’ মানেই শান্তি কামনা করা। আমি খুব অবাক হই মাদরাসার ছাত্রদের দেখে! তাদের মাঝে রয়েছে সালামের প্রচার-প্রসার। ছোট-বড় সবাইকে সালাম দেয়। ছোট-বড় কোনো ভেদাভেদ নেই। অধুনা আমাদের সমাজে এর বড়ই অভাব। আমি বড় বলে ছোটরা আমাকে সালাম দেবে। আমি বড়, আমি কেন ছোটদের সালাম দেবো? আর একটু নাম করা ব্যক্তিত্ব হলে তো কথাই নেই। না দিলে পেছনে গিয়ে বলে অমুকের ছেলে বড় বেয়াদব। আমি পাশ দিয়ে আসছি দেখা সত্ত্বে¡ও সালাম দেয়নি। রাসূল সা: এরকম ভেদাভেদ করতেন না। রাসূল সা: ছোট-বড় সবাইকে সালাম দিতেন। আমরাও এই অভ্যাসকে নিজেদের মাঝে ফিট করে নেয়ার প্রয়াস চালাব ইনশা আল্লাহ!
কোনো মুসলমান ভাইকে দেখামাত্র বললাম, ‘আসসালামু আলাইকুম’। অর্থ হলোÑ ‘আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক’। সালামের উত্তরে বলল, ‘ওয়ালাইকুমুস সালাম’। অর্থ হলোÑ ‘আপনার ওপরেও শান্তি বর্ষিত হোক’। এভাবে পরিচিত অপরিচিত সবার জন্য শান্তি কামনা করা একমাত্র ইসলামেই রয়েছে।
যে আগে সালাম দেয়, সে অহঙ্কারমুক্ত হয়। কারণ, অহঙ্কারী ব্যক্তিরা আগে সালাম দিতে লজ্জাবোধ করে। বরং তারা অন্যের সালামের প্রতি মুখাপেক্ষী। আমি একজন নামকরা ব্যক্তি। আমি কিভাবে দিনমজুরকে সালাম দেবো? অহঙ্কারীরা সর্বসাধারণ জনগণকে তুচ্ছ মনে করে। কিন্তু, ইসলাম এই ভেদাভেদকে দূরীভূত করতেই সালামকে প্রাধান্য দিয়েছে। হাদিসে আছেÑ
রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক উত্তম ওই ব্যক্তি, যে আগে সালাম দেয়।’ (সহিহ বুখারি-৫১৯৭)
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যখন তোমাদের সালাম দেয়া হবে, তখন তোমরা তার চেয়ে উত্তম সালাম দেবে অথবা জবাবে তাই দেবে’ (সূরা নিসা, আয়াত-৮৬)।
তবে অধুনা আমাদের সমাজে কিছু কুসংস্কার এখনো রয়ে গেছে। যখন কোনো মুসলমান ভাইয়ের সাথে দেখা হয়, সালাম দিয়ে মুসাফাহা করত। কিন্তু, এখন বলেÑ হাত নাড়িয়ে, হাই। অথচ তার মাঝে কোনো বরকত নেই। না আছে নেকি, না আছে বরকত! আরেকটি কুসংস্কার হলোÑ মাথা নিচু করে পা ধরে সালাম করা। যেটি সম্পূর্ণ শরিয়তবহির্ভূত কাজ। একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ছাড়া কারো কাছে মাথা নত করা সম্পূর্ণ হারাম। পা ধরে সালাম বিধর্মীদের সংস্কার, যেটি আঁকড়ে ধরছে মুসলমানরা।
সালাম হলো ইসলামের সৌন্দর্যময় একটি দিক।

 


আরো সংবাদ



premium cement