২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

একটি সিদ্ধান্ত নিই

-

মানুষকে আল্লাহ সৃষ্টির সেরা আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে তৈরি করেছেন। মহান আল্লাহপাক মানুষকে আসমানি গ্রন্থ দিয়েছেন এর মাধ্যমে জীবন পরিচালনা করার জন্য। আর মানুষকে আল্লাহ তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন এই ধরায়। পরম করুণাময় আল্লাহ নির্দিষ্ট একটা পরিকল্পনা মাফিক দুনিয়ার সব কিছু পরিচালনা করেন। ৩৬৫ দিনের মধ্যে মহান আল্লাহ একটি রজনীকে বেছে নিয়েছেন ভাগ্য রজনী হিসেবে। সে রাতকেই লাইলাতুল কদর হিসেবে আমরা জানি। কদর শব্দের দু’টি অর্থ। একটি হলো ভাগ্য, অন্যটি হলো মর্যাদা, মহত্ব। এ পৃথিবীতে মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি আর পৃথিবীর শুরু থেকে মহাপ্রলয়ের দিন পর্যন্ত সব কিছুই নির্ধারিত। কোনো কিছুই এমনি হচ্ছে না বা ঘটছে না।
মুসলমানরা সারা বিশ্বে আজ নির্যাতিত। ৫০টির বেশি রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে মুসলিমরা। বিদ্যমান সম্পদ ও ক্ষমতার অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও আজ তারা ঐক্য, সংহতির মৌলিক গুণাবলির অভাবে তারা লাঞ্ছিত পদদলিত। এত জনশক্তি ও প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকারী হয়েও তারা বিশ্ব নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা অর্জন করতে পারছে না। অথচ আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, ‘আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী যদি তোমরা মুমিন হও’। এখন প্রশ্ন হলো আমরা কি আসলে মুমিনের মতো মুমিন মুসলমান হতে পেরেছি। কারণ মুমিনদের জন্য তো আল্লাহর সাহায্য এবং বিজয় আসার কথা। এর পরও আমাদের থেমে গেলে চলবে না। নিজেদের ভুল সংশোধন করে রবের পথে এগিয়ে যেতে হবে।
আসলে কি আমরা ব্যক্তি, সমাজ, পরিবার ও রাষ্ট্রে কাক্সিক্ষত মানে ইসলামকে অনুসরণ করতে পারছি? আজ আমাদের চিন্তাচেতনা ও আত্মোপলব্ধিকে নিখুঁতভাবে যাচাই করতে হবে। এ মুসলিম জাতির জীবনে শতাব্দীর পর শতাব্দী মাহে রমজান ও লাইলাতুল কদর কালের স্র্রোতে বিলীন হয়েছে। কেন এটি রমজান আর লাইলাতুল কদরে দুর্ভাগা জাতির ভাগ্য বদলাচ্ছে না। এটা খতিয়ে দেখার সময় এসেছে। আল্লাহর আইন ও সৎ নেতৃত্বের মাধ্যমে সমাজ ও দেশ চালাতে আমাদের মধ্যে কতটুকু চেষ্টা আছে?
আমরা কি মিথ্যা শক্তির আবসানে কার্যকর কিছু করতে পেরেছি? অথবা এই আন্দোলনে সবাই যুক্ত হতে পেরেছি? অসত্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে বেগবান করার ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহর সংগ্রামে কতটা নিজেদের নিবেদিত রেখেছি আমরা? এমন অনেক প্রশ্ন আজ আমাদের সামনে। এসব প্রশ্নের সমাধান খোঁজাই হোক এবারের রমজানের বহু শিক্ষার মধ্যে একটি শিক্ষা। এটিই হোক এবারের আত্মোপলব্ধি। যেই রমজানে হয়েছিল বদরের যুদ্ধ যা ছিল ইসলামের টিকে থাকার লড়াই। যেই রমজানে নাজিল হয়েছে সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী আল-কুরআন। আমরাও নিজেদের কর্মকাণ্ড এই কুরআন দিয়ে মেপে দেখার সিদ্ধান্ত নিই এবারের পবিত্র মাহে রমজানে।
লেখক : নির্বাহী পরিচালক, সমাজ ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা, ঢাকা


আরো সংবাদ



premium cement