সিজারের সময় নবজাতকের পেট কেটে ফেলার অভিযোগ
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- ২৩ জুন ২০২৪, ১৮:৫৭
ফরিদপুরে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় নবজাতক এক মেয়ে শিশুর পেট কেটে ফেলার পরেও দীর্ঘক্ষণ বিনা চিকিৎসায় তাকে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহরের ঝিলটুলীতে অবস্থিত সৌদি বাংলা প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
অবস্থা গুরুতর হওয়ায় শিশুটিকে সেখান থেকে ফরিদপুর শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তবে পরিবারের সামর্থ না থাকায় শিশুটিকে বর্তমানে ফরিদপুর মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, শহরের দক্ষিণ চরকমলাপুর এলাকার বাসিন্দা কসাই দোকানির সহকারি নায়েব আলীর স্ত্রী মোর্শেদা বেগম সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য শনিবার হাসপাতালটিতে ভর্তি হন। সন্ধ্যায় তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন গাইনি চিকিৎসক ডা. শিরিনা আক্তার। একটি মেয়ে শিশু ভূমিষ্ট হয় তার।
নায়েব আলী জানান, সিজার করার সময় আমার বাঁচ্চাটির নাভির পাশে পেটের অংশ কেঁটে ফেলেছেন ডাক্তার। বিষয়টি ডাক্তার আমাদের জানাননি। প্রায় দেড় থেকে দুই ঘন্টা পর আমনা দেখতে পাই তার পেট দিয়ে প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে। পরে বিষয়টি ওই ডাক্তারকে বললেও তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি। বারবার বলার পর পেটে দু'টি সেলাই দেয়া হয়। তবে রাতে বাচ্চাটির অবস্থা খারাপ হতে থাকলে তাকে শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাই। তখন সেখানের ডাক্তাররা উন্নত চিকিসার জন্য ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
তিনি বলেন, আমার বাচ্চাটির অবস্থা ভালো না। উন্নত চিকিৎসার জন্য আমার ঢাকা যাওয়ারও টাকা নেই। বাধ্য হয়ে ফরিদপুর মেডিক্যালে নিয়ে এসেছি।
নায়েব আলীর চাচাতো ভাই মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সিজারের সময় ডাক্তারের সাথে সহযোগিতা করেন হাসপাতালটির আয়া ও স্টাফরা। তাদের ভুলেই এই পরিণতি হয়েছে। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে এজন্য আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।
ওই নবজাতকের শারিরীক অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডাঃ পারভেজ। তিনি বলেন, শিশুকে যখন আনা হয়েছিল তখন শকের মধ্যে ছিল। তার শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হওয়ায় শক হয়। আগামী ৭২ ঘন্টা না যাওয়া পর্যন্ত আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছেনা।
এদিকে, এ ঘটনাকে অনাকাঙ্খিত বলছেন ওই গাইনী চিকিসক শিরিনা আক্তার। তিনি বলেন, অপারেশনের সময় দেখা যায় বাচ্চাটির অবস্থান ঠিক জায়গায় নেই। প্রসবের সময়ও পার হয়ে যাওয়ায় বাচ্চাটি পেটের ভেতর পায়খানা করে। যে কারণে নাভির কিছু অংশ পঁচে গিয়েছিল। এছাড়া বাচ্চাটির গলার উপর দিয়ে নাড়ি পেঁচানো ছিল। সেটি সরাতে গিয়ে অসাবধানতায় হয়তো নাভির ওই অংশে নাড়ি ছিড়ে যায়। যে কারণে সমস্যাটি হয়েছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালটির চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম লিখন বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে শিশুটির খোঁজখবর নিয়েছি। তাকে পরিপূর্ণ সুস্থ্য করার যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা