১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

স্বপ্ন পূরণে প্রবাসে গিয়ে ১২ বছর পরে লাশ হয়ে ফিরছেন সখীপুরের জুলহাস

স্বপ্ন পূরণে প্রবাসে গিয়ে ১২ বছর পরে লাশ হয়ে ফিরছেন সখীপুরের জুলহাস - ছবি : সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বানিয়ারছিট গ্রামের জুলহাস দেশে থাকতে গ্রামের বিভিন্ন খামার থেকে মুরগী কিনে সেগুলো বিক্রি করতেন। এটাই ছিল তার কারবার। কিন্তু ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের বড় সংসারে ওই ব্যবসার লাভের টাকায় জীবন-যাপন ছিল খুব কষ্টসাধ্য। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রবাসে যাওয়ার।

ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা ও পরিবারের খরচ জোগাতে জুলহাস (৪৪) ১২ বছর আগে মালদ্বীপে পাড়ি জমান। টানা ১২ বছর প্রবাসেই থাকেন। এর মধ্যে একবারো দেশে ফেরেননি। আগামী ১০ জুলাই তার দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দেশে তো ফিরছেন, তবে জীবিত নয়, লাশ হয়ে।

মৃত জুলহাসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার স্ত্রী রাশেদা আক্তার বাড়ির ওঠানে পা মেলে বসে আছেন। তাকে দুই-তিনজন নারী ধরে বসে আছে। স্বামীর বিয়োগ ব্যথায় তিনি বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন। জেগে বিড়বিড় করে বিলাপ করে বুক চাপড়াচ্ছেন। স্বামীর এভাবে চলে যাওয়া তিনি মেনে নিতে পারছেন না। পরিবারের অন্য সদস্যদের চেহারাও মলিন। প্রবাসে গিয়ে নিজের রক্ত পানি করে যে লোকটা এতদিন পুরো পরিবারকে সুখী রাখতেন, আজ তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন।

জুলহাসের বড় ছেলে রাশেদ নয়া দিগন্তকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বড়চওনা গ্রামে আমাদের খালাম্মার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ দুপুর ২টার দিকে মালদ্বীপ থেকে ফোন আসে আমার বাবা একটি ভবনে পেইন্টিংয়ের কাজ করতে গিয়ে ৭ তলার ওপরে থেকে পড়ে মারা গেছেন। খবরটি শোনার পরে প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। পরে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি আসলেও আব্বু আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।

ছেলে রাশেদ আরো বলেন, ঈদের দিন আব্বা পরিবারের সবার সাথে ফোনে কথা বলেছেন। আমার সাথেও বলতে চেয়েছিলেন। তখন আমি গরু নিয়ে মাঠে থাকায় কথা বলতে পারিনি। বিষয়টি আমাকে খুব কষ্ট দিচ্ছে। আব্বুর সাথে শেষবারের মতোও একটু কথা বলতে পারলাম না।

জুলহাস মিয়ার লাশ মালদ্বীপ থেকে দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও রাশেদ জানিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement