১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মাধবদীতে প্রতিবন্ধী যুবককে মারধর করায় ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার

মাধবদীতে প্রতিবন্ধী যুবককে মারধর করায় ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার - নয়া দিগন্ত

নরসিংদীর মাধবদীতে এক প্রতিবন্ধী ও মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া অমানবিক কাজ করায় অভিযুক্ত বাবুকে ছাত্রলীগের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

রোববার রাতে মাধবী থানায় মামলাটি দায়ের করেন আহত যুবকের মা রেজি বেগম।

অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান বাবু সদর উপজেলার পাঁচদোনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

রোববার মাধবদী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অমানবিক কাজ করায় পাঁচদোনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক পদ থেকে বাবুকে অব্যাহতি দেয়া হলো। একই সাথে পাঁচদোনা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়।

আহত মানসিক প্রতিবন্ধী এবং মৃগীরোগে আক্রান্ত সোহেল মিয়া (৪০) সদর উপজেলার চর-মাধবদী এলাকার মরহুম সাইদ মিয়ার ছেলে। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে চরমাধবদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই দিনই দৈনিক নয়া দিগন্ত অনলাইনে ‘মাধবদীতে প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে আহত করলেন ছাত্রলীগ নেতা’ শিরোনামে সংবাদ প্রচার হয়।

আহত সোহেল মিয়ার মা রেজি বেগম বলেন, ‘আমি আমার পরিবার নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। থানায় মামলা দায়ের করেছি। কখন জানি আবার বাবু হামলা চালায়। সে এলাকার মধ্যে প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। সাংবাদিকরা পাশে থাকলে আমি একটু বিচার পাব। আমার ছেলেকে চিকিৎসা করার পর্যাপ্ত টাকা আমার কাছে নেই। আমি বাবুর গ্রেফতার চাই এবং সর্বোচ্চ বিচার দাবি করছি। তাকে যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে তাদেরও বিচার চাই।’

স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় জাকির হোসেনের মুদি দোকানে যান সোহেল। ওই সময় ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা বাবুর বাবা প্রতিবেশী মোখলেছুর রহমানের সাথে বিস্কুট খাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় সোহেলের। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সমন্বয়ে বিষয়টি নিরসন করা হয়। এর জের ধরে সোহেলের মামা বাবুল মোল্লাকেও মারধর করেন বাবু। শুক্রবার সোহেল একা বাজারে গেলে সাধারণ মানুষের সামনে তাকে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আহত করে কলাবাগানে ফেলে চলে যান ছাত্রীলীগ নেতা বাবু।

বাবুকে অব্যাহতির বিষয়ে জানতে চাইলে মাধবদী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম হাফিজুর রহমান সৈকত বলেন, ‘কোনো অপরাধীর দায় ছাত্রলীগ নেবে না। ছাত্রলীগের পদ নিয়ে কেউ অপরাজনীতি করবে সেটা আর সম্ভব না। বাবু অমানবিক কাজ করেছে, তাই সংগঠন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। ভবিষ্যতের জন্য এটা একটি শিক্ষা।’

মাধবদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: কামরুজ্জামান বলেন, ‘মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনাটি দুঃখজনক। সোহেলের মা আমাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সাথে সাথে আমরা মামলা নিয়েছি। আসামিকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছি। সে এখন পলাতক রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করা হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement