মধুখালীর ঘটনায় সঠিক তদন্ত দাবি হেফাজতের
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ২০:৪৬
মধুখালীতে দুই ভাইকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা ও এ ঘটনার প্রতিবাদ কর্মসূচিতে কি কারণে গুলি চালানো হলো তার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি করেছে হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ।
তারা বলেন, ইতোমধ্যে স্থানীয় উলামায়ে কেরামকে ডেকে প্রশাসন জানিয়েছে তারা দৃষ্টান্তমূলক বিচার করবে। কিন্তু এতোদিন হয়ে গেলো আমরা দৃষ্টান্তমূলক বিচারের কিছু দেখছি না।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে নিহতদের কবর জেয়ারতের পর তাদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান এ দাবি জানান।
শহরের গোয়ালচামটে জামিয়া ইসলামিয়া আশরাফুল উলুম মাদরাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে প্রসিদ্ধ। ইন্ডিয়ার সরকারের বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত।
তিনি বলেন, এই সহাবস্থান চাইলে আইনের শাসন লাগবে। অপরাধী যেই হোক তার বিচার করতে হবে। দুই ভাইকে যেই অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে শহীদ করা হয়েছে, এই ঘটনার সাথে যতো লোকই জড়িত আমরা সকলের বিচার দাবি করছি।
হেফাজতের মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দাবি হলো দুই ভাইকে নির্মমভাবে শহীদ করার ঘটনার সঠিক তদন্ত করে বিচার চাই। এ ঘটনার প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার গণমিছিলে গুলি চালানো হয়েছে। এটিরও আমরা সঠিক তদন্ত চাই। এ ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন তাদেরও ক্ষতিপূরণ চাই। প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, ‘আমরা নিহত আশরাফুল ও আসাদুলের বাবার সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাদের জানিয়েছেন তার ছেলেরা সেখানে (পঞ্চপল্লী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে) নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। তারা রাতে সেখানেই থাকতেন। সেদিন বিকেলে সেখানে এসে তাদের কাছ থেকে রড উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তারা সেটি দেয় নাই। এটি একটি সূত্র। তাদেরকে হত্যার পেছনে এর কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা সেটি খুঁজে বের করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুনেছি মন্দিরে আগুন দেয়া হয়েছে। মন্দিরে আগুন দেয়ার পরে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। মন্দিরে আগুন কে দিয়েছে? শুনেছি ওটি একটা হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। হিন্দুরা দু’জন মুসলিমকে পিটিয়ে শহীদ করেছে। হিন্দুরা এতো সাহস কোথা থেকে পেলো? ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, চেয়ারম্যান এবং মেম্বার মারামারিতে জড়িত। এ পর্যন্ত ১২ জন গ্রেফতার হয়েছে। এখন পর্যন্ত মেম্বার এবং চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা হলোনা কেনো ?’
তাদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে পুরো ঘটনার রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘যে ঘটনা ঘটেছে তার প্রতিবাদ হবেই। প্রতিবাদ করাটা আমার নাগরিক অধিকার। কিন্তু যারা এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছে তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এবং এলাকায় যেয়ে জানতে পারলাম তাদের অনেকে এখন বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন না।’
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, নায়েবে আমির আহমেদ আলী কাসেমী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, অর্থ সম্পাদক মাওলানা মনির হোসেন কাশেমী ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা কেফায়েতউল্লাহ আজহারী উপস্থিত ছিলেন।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এর আগে বিকেলে মধুখালীর নওয়াপাড়ায় নিহত দুই ভাই আশরাফুল ও আরশাদুলের কবর জেয়ারত করেন। এরপর তারা প্রথমে তাদের বাবার সাথে সাক্ষাৎ করে খোঁজখবর নেন ও তাদের আর্থিক সহায়তা করেন। পরে তারা নিহতদের মায়ের সাথে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করে খোঁজখবর নেন ও তাকে আর্থিক সহায়তা করেন।
এ সময় ফরিদপুরের জামিয়া সামসুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম প্রিন্সিপাল মুফতি কামরুজ্জামান, শায়খুল হাদীস মাওলানা হেলালুদ্দীন, মাওলানা ইসমাইল, মাওলানা কবির হোসেন, মাওলানা ফরিদ আহমেদ, মাওলানা আবুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা