‘ছেলে মুক্তি পেয়েছে এই খবর পেয়ে আমরা নতুন জীবন ফিরে পেলাম’
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:৩৮
সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি লাভ করায় বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর থার্ড অফিসার তারেকুল ইসলামের গ্রামের বাড়িতে আনন্দের জোয়ার বইছে।
রোববার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে তারেকুলের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ছকড়িকান্দি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেলো তাদের হাস্যোজ্জল মুখচ্ছবি। আনন্দের খবর জেনে বাড়িতে আসছেন তাদের প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনেরা।
রোববার তাদের বাড়িতে যেয়ে কথা হয় তারেকুলের বাবা দেলোয়ার হোসেন ও মা হাসিনা বেগমের সাথে।
সাংবাদিকদের দেখতে পেয়ে হাসি মুখে শুভেচ্ছা জানান। আগের দিনেও এই মুখগুলো ছিল অজানা শঙ্কায় মলিন। ছেলের মুক্তির খবরে সেই মুখে এখন ফুটেছে হাসি।
তারেকুলের বাবা দেলোয়ার হোসেন জানালেন, রোববার ভোররাত ৪টার দিকে তার ছেলে তারেকুল তাকে ফোন করেন। এ সময় তারেকুল তাকে বলেন, ‘বাবা আমি মুক্ত হয়েছি। কিছুক্ষণ পরে সোমালিয়া থেকে আমরা জাহাজে দুবাইয়ের উদ্যেশে রওনা দিবো।’
ছেলের মুখে এই কথা শুনে যারপরনাই খুশি হয়ে দেলোয়ার হোসেন বলে উঠেন, আলহামদুলিল্লাহ। এরপর তিনি দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে শুকরিয়া আদায় করেন।
তারেকুলের মা হাসিনা বেগম জানালেন, ছেলে মুক্তি পেয়েছে এই খবর পেয়ে আমরা নতুন জীবন ফিরে পেলাম। ছেলেকে ফিরে পেতে মসজিদে মিলাদ ও মানত করেছিলাম।
জানা গেছে, ফরিদপুরের মধুখালীর ছকড়িকান্দি অবসরপ্রাপ্ত চাকুরিজীবী মো: দেলোয়ার হোসেনের দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট মো: তারেকুল ইসলাম। স্থানীয় প্রাইমারি স্কুল থেকে পাশ করে চলে যান ঢাকায়। সেখানে মিরপুরের ড. মো: শহীদুল্লাহ্ কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করেন। ২০১২ সালে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। ২০১৪ সালে নটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরিতে যোগ দেন। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে নতুন করে যোগ দিয়েছিলেন ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়া গোল্ডেন হক নামে বাংলাদেশী জাহাজ পরিচিত এমভি আবদুল্লাহর থার্ড অফিসার হিসেবে। পণবন্দী ২৩ নাবিকের মধ্যে ফরিদপুরের সন্তান তারেকুলও এখন পণবন্দী হিসেবে জিম্মি।
বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর থার্ড অফিসার তিনি। ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বরে বিয়ে করেন নাটোরের মেয়ে তৎকালীন মেডিক্যালের ছাত্রী তানজিয়া ইসলামকে। তানজিহা নামে তাদের এক বছর এক মাসের একটি মেয়ে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার জলদস্যুরা এমভি আব্দুল্লাহ জাহজটিতে হামলা করে বাংলাদেশের ২৩ নাবিককে জিম্মি করে।