২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মালয়েশিয়ায় তেলের ট্যাংকিতে পড়ে প্রাণ হারালেন সালথার যুবক

মালয়েশিয়ায় তেলের ট্যাংকিতে পড়ে প্রাণ হারালেন সালথার যুবক। - ছবি : নয়া দিগন্ত

জীবিকার তাগিদে ১২ বছর আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান মো: এনায়েত শেখ (৩৫) নামে এক যুবক। বছর দেড়েক আগে দেশে এসে বিয়ে করেন তিনি। পরে পরিবারে একটু হাঁসি ফুটাতে বাড়ি থেকে ফের চলে যান মালয়েশিয়ায়। সেখানের যাওয়ার কয়েকমাস পর ছেলে সন্তানের বাবার হন এনায়েত। ছেলে ছয় মাস বয়স এখন মাত্র সাত মাস। আগামী কোরবানির ঈদে ছেলেকে দেখতে দেশে আসার কথা ছিল তার।

শনিবার (১০ জুন) ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টার দিকে মালয়েশিয়ায় নিজ কর্মস্থলে তেলের ট্যাংকির ভেতর পড়ে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। পরিবারের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

এনায়েত ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের বাংরাইল গ্রামের মৃত হামেদ শেখের ছেলে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে এনায়েত ছিল সবার ছোট। তাই তার এমন মৃত্যুর খবরে পুরো পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। এদিকে এনায়েতের লাশ দেশে আনা নিয়েও পরিবারে চিন্তার ভাজ পড়েছে। নিহতের লাশটি দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন তার পরিবার।

নিহতের বড় ভাই শাহাদত শেখ বলেন, ১২ বছর আগে মালয়েশিয়ায় যায় এনায়েত। মালোশিয়ার জহুরবারো এলাকায় একটি পেট্রোল পাম্পের কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। প্রতিদিনের মতো শনিবার সকাল ৭টার দিকে ফোনের মাধ্যমে পরিবারের সাথে শেষ কথা তার। এরপর সকাল ৯টার দিকে ওই দেশে থাকা এনায়েতের বাংলাদেশী সহকর্মীরা ফোন করে তার মৃত্যু বিষয়টি আমাদের জানায়।

সহকর্মীরা জানান, এনায়েত তেলের ট্যাংকি পরিষ্কার করার সময় ট্যাংকির ভেতরে পড়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত্যু ঘোষণা করেন। এখন তার লাশ কিভাবে দেশে ফিরিয়ে আনবো, সেই চিন্তায় আছি। ভাইয়ের লাশ ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।

এনায়েতের বৃদ্ধা মা তছিরন বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলেটা আমার বিদেশে গিয়ে ১২ বছর ধরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উপার্জন করে আমাদের মুখে হাঁসি ফুটিয়ে ছিল। দেড় বছর আগে তাকে জোর করে দেশে এনে বিয়ে দিয়ে দেই। বিয়ের কয়েকমাস পর আবারো বাড়ি থেকে বিদেশ চলে যায়। সেখানে যাওয়ার পর ছেলে সন্তানের বাবা হয় আমার বাজান। এরপর থেকে প্রতিদিন ভিডিও কলে ছেলেকে দেখতো আর তাকে বলতো আগামী কোরবানির ঈদে এসে তোমাকে সরাসরি দেখবো, কোলে নিয়ে ঘুরবো বাবা। কিন্তু ছেলেকে দেখার আগেই আমার বাজান চলে গেল। এটা আমরা কিভাবে মেনে নিব। এখন কি হবে ওর স্ত্রী-সন্তানের।

স্থানীয়রা জানান, এনায়েত এলাকায় একজন ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। মালয়েশিয়ায় থেকে উপার্জন করে গ্রামে একটি মাদরাসাও প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। যে কারণে গ্রামের সবাই তাকে আলাদা চোখে দেখতেন, ভালবাসতেন। তার এমন মৃত্যুর খবরে গ্রামের সবাই শোকাহত।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আক্তার হোসেন শাহিন বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যথাযথভাবে আবেদন করলে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। এই ক্ষেত্রে আমার সহযোগিতা চাইলে আমি অবশ্যই সহযোগিতা করবো।


আরো সংবাদ



premium cement
তামাক পণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের দাবিতে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে ২৫ সংসদ সদস্যের চিঠি প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীতে মহিষের আক্রমণে বাবা-ছেলেসহ আহত ৪ গফরগাঁওয়ে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার তীব্র মাত্রায় হিংস্র হয়ে উঠেছে সরকার : মির্জা ফখরুল মিরসরাইয়ে মৃত্যুর ১৫ দিন পর ব্যাংক কর্মকর্তার কবর থেকে লাশ উত্তোলন দেশে দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ রংপুরে মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করায় ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি, অনলাইনে ক্লাস চালুর চিন্তা বিশ্বের অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা হবে বাংলাদেশে : ধর্মমন্ত্রী সিলেটে ৪৪ লাখ টাকার ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার ৪ অবৈধ সম্পদ : এস কে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৬ জুন

সকল