১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চালককে খুন করে অটো ছিনতাইয়ের রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ৩

অটোচালক রবিউল হত্যার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত তিন ছিনতাইকারী। - ছবি : নয়া দিগন্ত

গাজীপুরের পূবাইলে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ায়ে চালককে অচেতন করে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার পর লাশ ডোবায় ফেলে তার অটোরিকশাটি নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। প্রায় সোয়া তিনবছর পর ক্লুলেস এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে জড়িত তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানার মাওয়া এলাকার মৃত মজিদ হাওলাদারের ছেলে মো: শাহীন (৪৭), বি-বাড়িয়া জেলার বাঞ্চারামপুর থানার ছয়আনি এলাকার মো: মিলনের ছেলে মো: সালাম ওরফে চঞ্চল (৪০) ও ফরিদপুর জেলার সালতা থানার ফুলবাড়িয়া এলাকার মৃত হোসেন মজুমদারের ছেলে মো: জাহাঙ্গীর (৪০)। তারা সবাই ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় থাকতো।

পিবিআই’র পুলিশ সুপার মাকছুদের রহমান জানান, গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানাধীন তালটিয়া পূর্বপাড়া এলাকার মৃত নবাব আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম (৪০) এলাকায় অটোরিকশা চালাতেন। প্রতিদিনের মতো ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ বিকেলে যাত্রী বহনের জন্য তিনি তার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর নিখোঁজ হন তিনি। স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি। নিখোঁজের ২০ দিন পর ১৩ এপ্রিল বিকেলে স্থানীয় বিন্দান এলাকার জহিরুল ইসলামের দোকানের পেছনের খাল থেকে রবিউলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মরিয়ম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি থানা পুলিশ।

তিনি জানান, থানা পুলিশ তদন্তকালে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআই গাজীপুরকে দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নি:) মো: জামাল উদ্দিন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢাকার মিরপুর পল্লবী এলাকা থেকে শাহীনকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে খিলক্ষেত এলাকা থেকে চঞ্চল ও জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তিরা ভিকটিম রবিউল ইসলাম হত্যার সাথে নিজেদেরক জড়িয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার সোয়া তিন বছর পর চাঞ্চল্যকর অটোরিকশাচালক রবিউল ইসলাম হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।

তিনি আরো জানান, গ্রেফতার ব্যক্তিরা অটোরিকশা চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। ঘটনার দিন তারা পরস্পর যোগসাজসে ভিকটিম রবিউল ইসলামের অটোরিকশা ভাড়া করে। সবাই মিলে অটোরিকশায় উঠে মীরের বাজার হতে পূবাইলের দিকে যাওয়ার পথে সড়কের পাশে অটোরিকশা থামিয়ে সবাই জুসসহ অন্যান্য জিনিস খেতে থাকে। এ সময় ছিনতাইকারীর কৌশলে জুসের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে অটোচালক রবিউল ইসলামকে খেতে দেয়। জুস পান করে কিছুদূর যাওয়ার পর রবিউল অচেতন হয়ে পড়ে। এ সময় তারা ভিকটিমকে ড্রাইভিং সিট হতে সরিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে নিহত অটোচালক রবিউলের লাশ সড়কের পাশে কচুরীপানা ভর্তি একটি ডোবার পানিতে ফেলে রেখে অটোরিকশাটি নিয়ে তারা পালিয়ে যায় বলে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement