২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সৌদিতে বাস দুর্ঘটনা : স্বর্ণালঙ্কার-টাকা নিয়ে স্ত্রীর পালিয়ে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধ হলো না রনির

ইমাম হোসেন রনি - ফাইল ছবি।

প্রায় সাত লাখ টাকা ঋণ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে সৌদি আরব গিয়েছিলেন ইমাম হোসেন রনি (৪০)। কিন্তু তার ঋণ পরিশোধ করা আর হলো না। বিশ্বাস করে স্ত্রীর কাছে বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতেন। ঋণ পরিশোধের আগেই সেই সঞ্চিত টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে প্রায় দেড় বছর আগে পরকিয়া প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যান স্ত্রী মলি আক্তার। এমনকি বিদেশে অবস্থানকালেই তাকে ডিভোর্স লেটারও দেয়া হয়। জীবনের কষ্টার্জিত টাকা নিয়ে ও একমাত্র শিশু সন্তানকে ফেলে অন্য পুরুষের হাত ধরে স্ত্রী পালিয়ে যাওয়ায় রনির জীবনে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার। ঋণ পরিশোধ ও একমাত্র ছেলে সন্তানের জন্য আবারো জীবন সংগ্রাম শুরু করেন রনি। অবশেষে ৩ বছর পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছুটি নিয়ে দেশে আসেন এবং ৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে অন্যত্র বিবাহ করেন। ছুটি শেষে গত ২৫ মার্চ আবারো সৌদি আরব ফিরে যান। এর মধ্যেই গত ২৭ মার্চ সৌদি আরবের আসির প্রদেশে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। ওই দুর্ঘটনায় আরো ১৩ বাংলাদেশী নিহত হন। বেঁচে যাওয়া সফর সঙ্গীরা রনির নিহত হওয়ার বিষয়টি ফোনে স্বজনদের নিশ্চিত করেন।

বুধবার রনির টঙ্গীর বড় দেওড়া ফকির মার্কেট সংলগ্ন বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে শোকের মাতম চলছে। চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার সাহেবগঞ্জ গ্রামে তাদের বাড়ি। টঙ্গীর বড় দেওড়া মার্কেট এলাকায় তারা জমি কিনে বাড়ি করেছেন। টঙ্গীর বাসায় রনির নববধু শিমা আক্তারকে বুক চাপড়ে বিলাপ করতে দেখা গেছে। রনির পিতা আব্দুল লতিফও ছেলের শোকে পাগলপ্রায়।

তিনি বলেন, আমি ৪৬ বছর টঙ্গীর কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলে চাকরি করে সন্তানদের মানুষ করেছি। রনি কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিল উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করলেও গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে। প্রায় ৬ বছর যাবত সে সৌদি আরবে একটি হোটেলে চাকরি করতো। রনি প্রায় ৭ লাখ টাকা ঋণ করে সৌদি আরব গিয়েছিল। স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১০ লাখ টাকা নিয়ে রনির প্রথম স্ত্রী অন্য পুরুষের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়ায় তার ঋণ পরিশোধ করা আর হয়নি।

রনির বোন হাজেরা আক্তার স্বপ্না জানান, হোটেল মালিক ছুটি দিতে চাননি। বহু চেষ্টায় ছুটি পেলেও বিমানের টিকিট পেতে সৌদি আরবেই ছুটির এক মাস অতিবাহিত হয়ে যায়। প্রথম স্ত্রী মলি আক্তার এক সন্তান রেখে রনিকে ডিভোর্স দিয়ে চলে যাওয়ায় রনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বিদেশে অবস্থান করার কারণে একমাত্র ছেলে ইসমাইল হোসেন (১১) দাদা-দাদির আশ্রয়ে থেকে স্থানীয় একটি মাদরাসায় পড়া লেখা করে। এই অবস্থায় ছুটিতে এবার বাড়ি এসে দ্বিতীয়বার শিমু আক্তারকে বিয়ে করেন রনি।

রনির ভাই হোসেন আলী জসিম বলেন, ২৫ মার্চ ওমরাহ পালনের জন্য ভাইকে বিমান বন্দর দিয়ে আসি। ঠিকঠাক মতই সে সৌদি আরব পৌঁছে। ওমরাহ পালন শেষে ১ এপ্রিল তার কাজে যোগদানের কথা ছিল। কিন্তু ২৭ তারিখ সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।

রনির বোন স্বপ্না বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে শেষ কথা হয় সোমবার ইফতারের ১০ মিনিট আগে। ভাই বলেছিল ওমরাহ শেষে কাজে যোগদান করবে। ইফতারের সময় হয়ে যাওয়ায় পরে কথা বলবে জানিয়ে ভাই ফোন রেখে দেয়। পরে তার সাথের লোকজন গতকাল আমাদেরকে তার মৃত্যুর সংবাদ জানায়।

রনির সদ্য বিবাহিত স্ত্রী শিমা আক্তার বলেন, আমার স্বামীর লাশটা আমি দেখতে চাই। সরকারের কাছে জোর দাবি তার লাশটা যেন দেশে আনার ব্যবস্থা করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত

সকল