২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গাজীপুরে ডাকাতিকালে কলেজছাত্রকে খুন, গ্রেফতার ৫

- ছবি : নয়া দিগন্ত

গাজীপুরে গ্রিল কেটে বাড়িতে ঢুকে হাত-পা বেঁধে কলেজছাত্রকে খুন করে ডাকাতি করার ঘটনায় পাঁচ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে উপ-কমিশনার ইব্রাহিম খান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গ্রেফতারের পর শুক্রবার তাদেরকে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়।

গ্রেফতাররা হলেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার পোড়াবাড়ী গ্রামের আব্দুল ছালামের ছেলে আবু তাহের (২৯), গাজীপুর মহানগরের সদর থানাধীন দক্ষিণ সালনা মোল্লাপাড়া এলাকার মরহুম সামরুদ্দিনের ছেলে মফিজউদ্দিন ওরফে মফু (৩৭), একই থানার উত্তর সালনা পালোয়ান পাড়া এলাকার নুরুল ইসলাম পালোয়ানের ছেলে খোকন মিয়া, দক্ষিণ সালনা মিয়াপাড়া এলাকার হাবিবুল্লাহর ছেলে আজিজুল হাকিম (২৮) এবং দক্ষিণ সালনা মোল্লাপাড়া এলাকার মরহুম আব্দুল হাকিমের ছেলে আব্দুল মালেক (৩২)। এছাড়া তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত টাকা ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত গ্রিল কাটার যন্ত্র উদ্ধার করা হয়।

জিএমপির ওই কর্মকর্তা জানান, গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন দক্ষিণ সালনা এলাকার উওর মোল্লা পাড়ার নিজ বাড়ির দ্বিতীয় তলায় বসবাস করেন মরহুম এ কে এম জালাল উদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী মেহজাবিন আক্তার (৫০) এবং তাদের দু’সন্তান মাহিউস সুনান চৌধুরী (১৯) ও উম্মে ওয়ারা। ১২ মার্চ দিবাগত রাত ৩টার দিকে ছয়-সাতজনের একদল ডাকাত ওই বাড়িতে হানা দেয়। তারা দ্বিতীয় তলার জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ঘরের পৃথক কক্ষে জালাল চৌধুরীর স্ত্রী মেহজাবিন ও ছেলে মাহিউস সুনানের (১৯) হাত-পা, মুখ ও চোখ বেঁধে ফেলে। বাঁধার সময় চিৎকার দিলে তারা সুনানের হাত ও পা পেছন দিকে একসাথে বাঁধে এবং গলায় বিছানার চাদরের টুকরো দিয়ে পেঁচিয়ে ও বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

পরে ডাকাত সদস্যরা ঘরের আলমারি ভেঙে ও তছনছ করে নগদ ২৫ হাজার টাকা এবং প্রায় পৌনে সাত লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কারসহ বিভিন্ন মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে পালিয়ে যায়। নিহত সুনান এ বছর গাজীপুর শহরের কাজী আজিম উদ্দিন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জহিরুল ইসলাম জানান, খুনসহ ডাকাতির এ ঘটনায় নিহতের মা মেহজাবিন আক্তার সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ছয়-সাতজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আবু তাহেরকে মঙ্গলবার রাজধানীর খিলক্ষেত (৩ নম্বর রোড) এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরে তিনি বৃহস্পতিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং তার সহযোগীদের নাম প্রকাশ করেন। তার দেয়া তথ্যমতে ঘটনায় জড়িত অপর চারজনকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে লুণ্ঠিত ১০ হাজার টাকা এবং ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত গ্রিল কাটার যন্ত্র পাশের ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ঘটনায় জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতার হওয়া আবু তাহের ডাকাতদলের সক্রিয় সদস্য। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি ও ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগে আরো দু’টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জিএমপির উপ-কমিশনার আবু তোরাব মো: শামসুর রহমান, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রেজোয়ান আহমেদ, সদর জোনের সহকারী কমিশনার ফাহিম আসজাদ এবং সদর থানার অফিসার ইনসার্জ (ওসি) জিয়াউল ইসলাম।


আরো সংবাদ



premium cement