২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

টাঙ্গাইলে বাস ডাকাতি : দলবদ্ধ ধর্ষণ ছাড়াও শ্লীলতাহানির শিকার হয় একাধিক নারী

- ছবি - সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও দলবদ্ধ ধর্ষণ ছাড়াও একাধিক নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানি করে ডাকাত দলের সদস্যরা।

ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানায় র‍্যাব। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গতকাল রোববার ঢাকা, সাভার, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, সাভার ও টাঙ্গাইলে অভিযান চালিয়ে ডাকাত চক্রটির ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী রয়েছেন।

র‍্যাবের বিবরণ অনুযায়ী, গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন মোঃ রতন হোসেন (২১), মোঃ আলাউদ্দিন (২৪), সোহাগ মন্ডল (২০), খন্দকার মোঃ হাসমত আলী (২১), বাবু হোসেন (২১), মোঃ জীবন (২১), আব্দুল মান্নান (২২), নাঈম সরকার (১৯), রাসেল তালুকদার (১৮) ও আসলাম তালুকদার (১৮)। তাদের মধ্যে রতন মূল পরিকল্পনাকারী। তার বিরুদ্ধে ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে।

র‍্যাব বলছে, বাসটিতে মোট ২৪ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়জন ছিলেন নারী যাত্রী। তাদের মধ্যে একজনকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন ডাকাত দলের সদস্যরা। এ ছাড়া তারা একাধিক নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন। গ্রেফতার ব্যক্তিরা র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা স্বীকার করেছেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রটির নেতা রতন ছদ্মবেশে ২০১৮ সাল থেকে বাসসহ বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছিলেন। তার অধীনে ডাকাত চক্রটিতে ১৩ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছেন। ডাকাতির ঘটনায় আগে তিনি দুই দুই দফায় কারাভোগ করেছেন। নয় মাস আগে তিনি জামিনে বের হয়ে আসেন। আবার ডাকাতি শুরু করেন। এই সময় তার পরিকল্পনা-নেতৃত্বে ১০টির মতো ডাকাতের ঘটনা ঘটে। সবশেষ গত মঙ্গলবার রাতে ঈগল এক্সপ্রেসের চলন্ত বাসে তার পরিকল্পনায় ডাকাতি হয়। বাসে ডাকাতিকালে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে।

গ্রেফতার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, বাসে ডাকাতির জন্য পাঁচ হাজার টাকার একটি প্রাথমিক তহবিল গঠন করা হয়। রতন এই টাকা সরবরাহ করেন। ২ আগস্ট টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা মোড় থেকে ছুরি, খুরসহ দেশি অস্ত্র কেনেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তার অন্যতম সহযোগী রাজু ডাকাতির জন্য অন্যদের জোগাড় করেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, সব ধরনের প্রস্তুতি শেষে ডাকাত দলের সদস্যরা বাসে ডাকাতের উদ্দেশ্যে সিরাজগঞ্জ মোড়ে অবস্থান নেন। যাত্রীবেশে রতন, রাজা, মান্নান ও নূর নবী বাসটিতে ওঠেন। পরবর্তীতে আরো দুই দফায় এই চক্রের বাকি সদস্যরা যাত্রী সেজে বাসে ওঠেন। তারা বাসের পেছনের বিভিন্ন ফাঁকা সিটে অবস্থান নেন। বাসটি বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু অতিক্রম করলে রতনসহ অন্যরা চালক ও তার সহকারীকে বেঁধে ফেলেন। তারা বাসের নিয়ন্ত্রণ নেন। পরে তারা দেশীয় অস্ত্রের মুখে বাসের যাত্রীদের হাত-পা-চোখ বেঁধে ফেলেন।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শুরুর দিকে রতন বাসটি চালাতে থাকেন। এলেঙ্গা এলাকায় আসার পর রতন চালকের সিট থেকে উঠে যান। তার স্থলে চালকের সিটে বসে বাস চালাতে থাকেন রাজু। তারা একে একে সব যাত্রীর কাছ থেকে নগদ অর্থ, মোবাইল, অলংকার ছিনিয়ে নেন। একপর্যায়ে তারা বাসে থাকা এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। অন্য একাধিক নারী যাত্রীতে তারা শ্লীলতাহানি করেন।

বাসে ডাকাতি ও দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন রাজা মিয়া, আবদুল আওয়াল ও নুর নবী।


আরো সংবাদ



premium cement