১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এখনো টাকা পায়নি ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী শিশুর পরিবার

এখনো টাকা পাননি ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী শিশুটি। - প্রতীকী ছবি

গাজীপুরে প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তকে জুতাপেটা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। ওই জরিমানার টাকা এখনো পায়নি ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী শিশুর পরিবার। ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মাতাব্বরদের বিরুদ্ধে।

ধর্ষণের শিকার নয় বছর বয়সের শিশুটি একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। গাজীপুর মহানগরের গাছা থানার ডেগেরচালা এলাকায় গত ১২ এপ্রিল এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার দু’দিন পর স্থানীয় মাতাব্বররা অভিযুক্তকে জুতাপেটা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নামে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে।

ধর্ষণের শিকার শিশুর পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, শিশুটির পরিবার ডেগের চালার হাসানের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। একই বাড়িতে পোশাক কারখানার চাকরি প্রার্থীদের ট্রেনিং সেন্টার। সেন্টারের মালিক জামাল হোসেন গত ১২ এপ্রিল বিকেলে ওই মেয়েটিকে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে সেন্টারে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য ৩০০ টাকা ও কিছু চকলেট ধরিয়ে দিয়ে মেয়েটিকে চলে যেতে বলেন। শিশুটির বাবা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং মা একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।

তারা জানান, শিশু বাসায় গিয়ে তার মাকে বিষয়টি বললে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়। অবশেষে বাড়ির মালিক হাসানের মধ্যস্থতায় এলাকায় সালিশে বিচার বসে। সালিশে অভিযুক্ত জামালকে ২০টি জুতাপেটা ও বাকিতে ৫০ হাজার টাকার জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা আদায়ের জন্য জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ধর্ষকের স্বাক্ষরও নেয়া হয়।

মঙ্গলবার শিশুর মা জানান, তারা জরিমানার কোনো টাকা পাননি, সালিশের স্ট্যাম্পটিও মাতাব্বররা রেখে দিয়েছেন। মামলা করলে অনেক টাকা লাগবে, মেয়েটিকে দুই দিন থানায় ও হাসপাতালে রেখে দিবে, আরো অনেক ঝামেলা হবে এসব বলে মাতাব্বররা তাকে ভয়ভীতি দেখান। তাই ভয়ে তিনি থানাপুলিশ করেননি।

সালিশে উপস্থিত স্থানীয় মাতাব্বর জাকির তালুকদার বলেন, কোনো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তাহলে জুতাপেটা ও জরিমানা করা হলো কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিচারে আমি একা ছিলাম না, আরো অনেকে ছিলেন। সবাই দুই লাখ টাকা জরিমানার কথা বলেছিলেন। যেহেতু ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে তাই আমি ৫০ হাজার টাকা জরিমানার প্রস্তাব করি।

অপর মাতাব্বর আলমগীর হোসেন বলেন, মেয়েটি বয়সে ছোট হলেও স্বাস্থ্য ভালো। তাকে ধর্ষণ করতে পারেনি। আর আমি একা এই বিচার করিনি, সবাই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।


আরো সংবাদ



premium cement