১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুড়িকাটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলনেও লোকসানের শঙ্কা চাষিদের

রাজবাড়ীতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের চাষ - ছবি : নয়া দিগন্ত

পেঁয়াজ উৎপাদনে রাজবাড়ীর অবস্থান তৃতীয়। মাটি ও আবহাওয়ার প্রভাবে রাজবাড়ী জেলায় উৎপাদিত পেঁয়াজের মান অন্য জেলার পেঁয়াজের চেয়ে অনেক ভাল।

প্রতি মৌসুমে জেলায় মুড়িকাটা ও হালি - এই দু’জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়। এর মধ্যে আগাম জাত মুড়িকাটা। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এবার মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভালো ফলনের আশায় চাষিরা। এ বছর জেলায় পাঁচ হাজার সাতশ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে কিছু পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে।

খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে পেঁয়াজ আবাদীদের। চাষিরা সহজ শর্তে কৃষি ঋণ প্রদান ও ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, পেঁয়াজ চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা এলাকায় দেখা যায়, মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ করেছেন চাষিরা। এখন পেঁয়াজ খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত তারা। কেউ নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ ওষুধ ছিটাচ্ছেন।

অক্টোবরে প্রথম সপ্তাহে রোপণ করা মুড়িকাটা পেঁয়াজ তিন মাসের মধ্যে ঘরে উঠবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার পেঁয়াজের ভালো ফলন ও দাম পাওয়ার আশা চাষিদের। জানা গেছে, এবার সদর, কালুখালী ও বালিয়াকান্দি উপজেলায় এ জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে।

উড়াকান্দা এলাকার কৃষক রশিদ মেম্বার জানান, সব খরচসহ মুড়িকাটা পেঁয়াজ ঘরে ওঠানো পর্যন্ত বিঘাপ্রতি খরচ হয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। আর বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদন হবে ৫০ থেকে ৬০ মণ। গত বছর ভালো দাম পেয়েছিলেন।

আলতাফ মণ্ডল বলেন, পেঁয়াজের মণ কমপক্ষে দুই হাজারের বেশি টাকায় থাকতে হবে। তাতে কিছুটা লাভ থাকবে। আর কৃষক যখন পেঁয়াজ ঘরে তুলবেন তখন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করতে হবে। তাহলেই কৃষক বাঁচবে।

আরেক কৃষক ছুলাইমান মোল্লা জানান, গত বছর পেঁয়াজে ভালো ফলন পেয়েছেন তিনি। এবারও ভালো ফলন হবে আশা করছেন। তবে শঙ্কায় রয়েছেন পেঁয়াজ ঘরে তোলার সময় ভারতের পেঁয়াজ আসলে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে। সেজন্য সরকারের কাছে দাবি, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না করার।

প্রান্তিক চাষী সামাদ বেপারী, সলামত সেখ ও সাদ্দাম হোসেন জানান, অনেক কৃষকই দরিদ্র। নিজেদের জায়গা-জমি না থাকায় অন্যের জমি লিজ নিয়ে পেঁয়াজ আবাদ করেন।

সরকার কম সুদে ঋণ দিলে তারা আরো বেশি পেঁয়াজের আবাদ করবেন।

কৃষি বিভাগের তথ‍্যমতে, এই জেলায় দু’ধরনের পেঁয়াজ আবাদ হয়ে থাকে। মুড়িকাটা ও হালি পেঁয়াজ। গত বছর জেলায় ৩১ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হালি পেঁয়াজ ২৫ হাজার ১৬৫ হেক্টর এবং মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ২ হাজার মেট্রিক টন। এ বছরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক এস এম শহীদ নূর আকবর বলেন, সারা দেশের মধ্যে পেঁয়াজ উৎপাদনে রাজবাড়ী তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। পেঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হয়। সেইসাথে কৃষকদের মাঝে সহজ শর্তে ঋণও দিয়ে থাকে।


আরো সংবাদ



premium cement