শ্রীপুরে এক পরিবারের ৮ জনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী!
- শ্রীপুর (গাজীপুর) সংবাদদাতা
- ১৬ জানুয়ারি ২০২২, ২৩:১০
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার উজিলাব গ্রামের একটি পরিবারের ৯ জন সদস্য। আর তাদের ৮ জনই জন্মান্ধ। পরিবারের উপার্জনক্ষম কেউ না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। যদিও স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ শিশু জোনাকির চিকিৎসার ব্যয়ভার ও লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু বাকি ৭ সদস্য হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন।
পরিবারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ৮ জন হলেন- আমির হোসেন (৪৭), তার স্ত্রী শিউলি আক্তার (৩৫), আমিরের বোন নাসরিন আক্তার (৩৪), হাসিনা আক্তার (৩২), আমিরের ভাই জাকির হোসেন (২৮), জাকির হোসেনের সন্তান জোনাকি আক্তার ঝিনুক (১০), হাসিনার সন্তান রূপা আক্তার (১৪) ও মারুফ মিয়া (২)।
পরিবারের ১০ বছরের শিশু জোনাকি আক্তার ঝিনুক তার করুণ আর্তনাদ জানিয়ে বলেন, গল্প করতে করতে আশপাশের সমবয়সীরা স্কুলে যাচ্ছে এমন আওয়াজ কানে এলেও দেখতে পাই না তাদের চেহারা। আমারও তো পৃথিবী দেখতে মন চায়। ইচ্ছে করে সকলের সাথে খেলতে।
দুঃখ প্রকাশ করে ঝিনুকের বাবা জাকির হোসেন বলেন, আমাদের সংসার জীবনের বাস্তবতা অনেক কঠিন। অবহেলা, অপমান আর অবজ্ঞা আমাদের নিত্য সঙ্গী। আমার অন্ধত্বের পর জন্মান্ধ ঝিনুক কোলে আসায় তাকে ফেলে চলে গেছে ঝিনুকের গর্ভধারিণী মা।
পরিবারের আটজন অন্ধের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক আমির হোসেন। তিনি বলেন, সামাজিক অবহেলা, পারিবারিক দৈন্য দশা, বিকল্প সক্ষমতা তৈরি করতে না পারায় এখন জীবনের আর কোনো লক্ষ্য নেই। এখন শুধু বেঁচে থাকাটাই বড় চাওয়া।
দৃষ্টিহীন ঝিনুকের চিকিৎসা ও পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়ে পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন সমাজসেবক সাদ্দাম হোসেন অনন্ত। তিনি বলেন, পুরো পরিবার চরম কষ্টে থাকায় সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসা উচিত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে পরিবারটিকে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে অন্যান্য সরকারি সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা