২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঢাবি অধ্যাপক হত্যার দায় স্বীকার রাজমিস্ত্রীর

ঢাবি অধ্যাপক হত্যার দায় স্বীকার রাজমিস্ত্রীর - ছবি : নয়া দিগন্ত

নিখোঁজের তিন দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাইদা গাফফারের (৭১) লাশ গাজীপুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার মহানগরীর দক্ষিণ পাইনশাইল এলাকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবাসন প্রকল্পের একটি ঝোপের ভিতর থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের নির্মাণাধীন বাড়ির রাজমিস্ত্রীর হেলপারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নিহত সাইদা গাফফার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মৃত কিবরিয়া উল খালেকের স্ত্রী।

গ্রেফতারকৃতের নাম আনারুল ইসলাম (২৫)। তিনি গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুর থানার বুর্জুগ জামালপুর গ্রামের আনসার আলীর ছেলে।

জিএমপি’র কাশিমপুর থানার ওসি মাহবুবে খোদা ও নিহতের পরিবার জানান, ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন অধ্যাপক সাইদা গাফ্ফার। তিনি গত প্রায় ১১ মাস ধরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পানিশাইল এলাকার মোশারফ হোসেন মৃধার বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ভাড়া বাসায় থেকে তিনি একই এলাকাস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আবাসন প্রকল্পের ভেতরে বাড়ি নির্মাণ করছিলেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ হন তিনি। তার বাসার দরজা খোলা ছিল।

পরে নিখোঁজের বিষয়টি তার ছেলেকে মোবাইলে ফোনে জানান, বাড়ির ঠিকাদার আনোয়ার হোসেন। রাত সোয়া ৯টায় অধ্যাপক সাইদার ছেলে ও মেয়ে সাদিয়া আফরিন কাশিমপুরে এসে মাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। এ ব্যাপারে তার মেয়ে সাহিদা আফরিন বুধবার কাশিমপুর থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেন।

জিএমপি’র কাশিমপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ মিজানুর রহমান জানান, সাধারণ ডায়রি করার পর নির্মাণাধীন বাড়ির প্লটে গিয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হয়। তদন্তের নানা তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্লটে কর্মরত রাজমিস্ত্রীর সহকারী আনারুলকে গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুর থেকে বৃহস্পতিবার রাতে আটক করা হয়।

তিনি আরো জানান, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে অধ্যাপক সাইদা গাফ্ফারকে হত্যার কথা স্বীকার করেন আনারুল। শুক্রবার তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নির্মাণাধীন ওই বাড়ির পাশের (আনুমানিক ২০০ গজ দূরে) একটি ঝোপের ভিতর থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় অধ্যাপক সাইদার লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সাউদ ইফখার বিন জহির অজ্ঞাত কয়েকজনসহ আনারুলকে আসামি করে শুক্রবার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, ঘটনার সময় প্রফেসর সাইদা গফফারের হাতে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন আনারুল। এ সময় তাকে বাধা দেয়ায় অধ্যাপক সাইদার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে লাশ ওই ঝোপের ভিতর লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যান বলে আনোয়ারুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement