২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
৫৭ যুবক লিবিয়ায় বন্দী

‘চাই না কামাই, তবু সন্তান আমার বুকে ফিরা আসুক’

লিবিয়ায় বন্দী-গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া-মাদারীপুর সদর
লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার বিপজ্জনক রুট - ছবি : সংগৃহীত

মাদারীপুর সদর, রাজৈর উপজেলা ও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ৫৭ জন যুবক লিবিয়ায় বন্দী জীবনযাপন করছেন। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে মাদারীপুর সরকারী কলেজ মাঠে মানববন্ধন করেছেন পরিবারের সদস্যরা।

জানা গেছে, এই ৫৭ জন যুবকের মধ্যে কেউ ছয় মাস, কেউ নয় মাস ধরে লিবিয়ার বিভিন্ন কারাগারে আটক রয়েছেন। জেলখানায় তাদের তিন বেলা খাবারের জায়গায় কোনো দিন এক বেলাও খাবার দেয়া হয় না।

পরিবারের সদস্যরা লিবিয়ায় বন্দী এসব ভুক্তভোগীকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

লিবিয়ার জেলে বন্দী মাদারীপুর নয়াচর এলাকার আবদুল আজিম মাতুব্বরের বাবা মোসলে উদ্দীন মাতুব্বর বলেন, আমার ছেলের সাথে কথা হইছে কয়েকদিন আগে। ছেলে বলে, ‘আব্বা খিদার যন্ত্রণায় দাঁড়াইতে পারি না, দাঁড়াইলে পইড়া যাই। টাকা দিছি দালালরে তাও ছাড়ে না।’

তিনি বলেন, ‘চাই না কামাই, তবুও আমার সন্তান আমার বুকে ফিরা আসুক। ছয় মাস আগে দালালের মাধ্যমে ছেলেরে লিবিয়া পাঠাইছি। পর পর তিনবার প্রতারণা করছে, আমার সাড়ে ১৫ লাখ টাকা চইলা গেছে। দুইবার ছাড়াইছি এই বার জাহারা জেলে আছে। কোনোভাবেই ছাড়াইতে পারতাছি না। ১ বেলা খাওন দেয় আর হাফ লিটার পানি দেয়, তাও একটা রুটি। টাকা দেই তাও ছাড়তাছে না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, এসব ছেলে বাইর থেকে রেমিট্যান্স পাঠাইলে দেশেরই উন্নতি হইত। যেভাবেই গেছে এখন তাদের জীবন বাঁচান।’

লিবিয়ায় বন্দী আরেক যুবকের ভাই সেলিম শেখ বলেন, সাড়ে চার লাখ টাকা দিয়া ভাইরে পাঠাইছি। ওইখানে যাইয়া জেলে রাখছে। ছাইড়া দিব কইয়া এখনো ছাড়ে নাই, খাওন লওন দেয় না। আমি আমার ভাইরে ফেরত চাই।

প্রসঙ্গত, লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে সমুদ্র পথে ট্রলারযোগে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিশিয়ার ভূমধ্যসাগরে ট্রলারডুবিতে মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম খাগদী গ্রামের সাব্বির খান (২০) ও বড়াইলবাড়ী গ্রামের সাকিব তালুকদার (২১) শনিবার মারা যান। তাদের মারা যাওয়ার খবর বাড়িতে পৌঁছলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনরা।


আরো সংবাদ



premium cement