২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

পাটুরিয়ায় ফেরিডুবি : উদ্ধার তৎপরতা চলছে

পাটুরিয়ায় ফেরিডুবির ঘটনায় উদ্ধার তৎপরতা চলছে। - ছবি : নয়া দিগন্ত

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যাওয়া ফেরি আমানত শাহ উদ্ধারের কাজ করছে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ঘটনা তদন্তে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাত্রীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে, তলা ফুটো হয়ে পানি উঠাই ফেরিডুবির মূল কারণ।

বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় রো রো ফেরি আমানত শাহ তীরে ভিড়ার সময় যানবাহন নিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক মো: জিল্লুর রহমান জানান, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন লোড করে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে নোঙর করে রো রো ফেরি আমানত শাহ। ফেরি থেকে দুই থেকে তিনটি যানবাহন নামার পরপরই ফেরিটি ডুবে যায়। ফেরিতে ১৭টি যানবাহন ছিল।

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক শরিফুল আলম জানান, ফেরি উদ্ধারের জন্য আমাদের তিনটি ইউনিট কাজ করছে। এখন পর্যন্ত কোনো লাশ উদ্ধার হয়নি। আমাদের উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। তবে কোনো প্রণহানির সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।

ফেরি উল্টে যাওয়ার ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সানোয়ারুল হককে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ।

শিবালয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানু বলেন, ফেরি নিচে ফুটো দিয়ে ভিতরে পানি প্রবেশ করায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন, শিবালয় ইউএনও জেসমিন সুলতানা, ওসি মো: ফিরোজ কবিরসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ফেরির যাত্রী আ: রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, ফেরিটি মাঝ নদীতে পৌঁছামাত্র সামনের দিকে ডান পাশ থেকে একটি ছিদ্র দিয়ে পানি উঠতে শুরু করে। এ সময় যাত্রীসাধারণ ও স্টাফদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঢাকা ডিভিশনের ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দিনোমণি শর্মা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ফেরির তলায় ভ্যালেন্সচারে অতিরিক্ত পানি ঢুকে ফেরিটি এক দিকে হেলে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

এই ফেরিতে থাকা যাত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, ফেরিঘাটের ৫ নম্বর পন্টুনে এসে যাত্রী ও যানবাহন নামানো শুরু হয়। এরই মধ্যে হঠাৎ করে ফেরিতে পানি উঠতে শুরু করে। দেড় থেকে দুই মিনিটের মধ্যে ডান দিকে কাত হয়ে ডুবে যায় ফেরিটি। তিনি তার সাথে থাকা মোটরসাইকেল ফেরিতে রেখে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে পাড়ে উঠেন। এখন পর্যন্ত তার মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়নি। ফেরিতে কোনো বাস বা প্রাইভেটকার না থাকলেও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল এবং ১৫/১৬টি পণ্যবাহী ট্রাক ছিল বলে জানান তিনি।

ফেরির ভারপ্রাপ্ত সারেং মুখলেছুর রহমান বলেন, আসলে কি কারণে ফেরি ডুবেছে তা বলা মুশকিল। তবে ডুবে যাওয়ার স্থানে পানিও কম ছিল। নদীতেও তেমন একটা স্রোত নেই। তদন্ত করেলেই বোঝা যাবে।

অপরদিকে আরিচা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইন্সপেক্টর মো: মুজিবুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এক পাশে অতিরিক্ত ওজনের কারণে ফেরিটি কাত হয়ে ডুবে গেছে।

ডুবে যাওয়া ফেরিতে ট্রাকচালক মো: শাহজাহান সিটেই ঘুমিয়ে ছিলেন। পরে পাশের সহকর্মীর ডাকে ঘুম ভাঙে এবং হামাগুড়ি দিয়ে কোনোমতে বের হন তিনি। প্রথমে তার জ্ঞান হারালেও পরে তিনি সুস্থ হন।


আরো সংবাদ



premium cement