২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাপুরের ডাকে ছুটে এলো ৬ বিষধর সাপ!

- ছবি : নয়া দিগন্ত

‘মেরীবন-মেরীবন, কুরুৎ-কুরুৎ’ এমন সব মন্ত্র পড়ে আয়, আয় বলে ডাকদিলে গর্ত ও বন-জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা সব ধরনের সাপ পাগলের মতো ছুটে আসে সাপুরের কাছে। এভাবেই ডেকে ডেকে শুক্রবার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার পৃথক স্থান থেকে ৬টি বিষধর সাপ ধরেছেন সাপুরে সরদার রাজ হোসেন। এভাবে সাপ ধরে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এলাকায়। এ দৃশ্য দেখতে সাপুরের কাছে ভির করেন বিভিন্ন বয়ের শত শত নারী পুরুষ।

বেদে সরদার রাজ হোসেন সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার আব্দুল গফুর ওঝার ছেলে। বর্তমানে তিনি ঢাকার সাভারে বাস করেন।

শ্রীপুর পৌর এলাকার হাজী জয়নাল আবেদীনের বাগানবাড়িতে প্রায়ই সাপ দেখতে পান স্থানীয়রা। বড় বড় সাপ আছে এমন খবর দিয়ে আনা হয় সাপুরে সরদার রাজ হোসেনকে। শুক্রবার সকালে রাজ হোসেন তার চারজন সঙ্গী ওমর, শাহিন মিয়া, কামরান মিয়া ও শান্ত মিয়াকে নিয়ে আসেন হাজী জয়নাল আবেদীনের বাগানবাড়িতে। সাপ ধরতে ওঝা এসেছে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। মুহূর্তেই শত শত উৎসুক নারী পুরুষ ছুটে আসেন সাপ ধরা দেখতে।

রাজ হোসেন বাগানবাড়ির চার পাশ ভালোভাবে দেখে বলেন, এখানে সাপের অনা-গোনা আছে। পরে তার সঙ্গীরা বালতিতে ধানের কুড়ায় ‘বিশেষ মন্ত্র পড়া’ ওষধ মেশান। ওষুধ মেশানো কুড়া সাপ থাকার সম্ভাব্য এলাকার চারপাশে ছিটিয়ে দেন। তারপরে একটি কাঁচের গ্লাসে পানি ভরে তাতে একটি বড় কড়ি ডুবিয়ে খোলা মাঠের মাঝখানে রাখেন। গ্লাসের অদূরে দাঁড়িয়ে রাজ হোসেন মন্ত্র পড়তে শুরু করেন।

‘মেরীবন-মেরীবন, কুরুৎ-কুরেৎ’ এমন সব মন্ত্র পড়ে আয়, আয় বলে জোড়ে ডাক দিতে থাকেন রাজ। এর কিছুক্ষণ পরই গ্লাসের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন ওই দিক থেকে আসছে। এমন সময় দেখা যায়, বৃহৎ আকৃতির একটি বিষাক্ত দারাজ সাপ ছুটে আসছে কড়ি রাখা গ্লাসের দিকে। সহযোগীরা সাপটি ধরে দ্রুত বস্তায় রাখেন। একই কায়দায় আবার ডাকতে শুরু করেন সাপুরে রাজ। কিছুক্ষণ পর আবারো হাত ইশারা দিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন ওই দিক থেকে আসছে। দেখা গেল, বৃহৎ আকৃতির আরো একটি দারাজ সাপ দৌড়ে পানি ভর্তি গ্লাসের দিকে আসছে। একইভাবে শাহিনের বাড়ি থেকে দু’টি ও হাজীর বাড়ি থেকে একটি বড় আকৃতির বিষধর কালো গোখড়া সাপ ধরেন রাজ হোসেন।

পরে রাজ হোসেন নয়া দিগন্তকে জানান, তিনি ১৭ বছর ধরে সাপ ধরছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে তিনি তার বাবার সাথে সাপ ধরে থাকেন। সাপ বিক্রি করে চলে তাদের সংসার। সাপ ভেদে দাম বেশি-কম হয়। প্রতিটি সাপ দুই থেকে আট হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকেন।

হাজী জয়নাল আবেদীন বলেন, এভাবে সাপ ধরতে আগে কখনো দেখিনি। মন্ত্র পড়ার সাথে সাথে লুকিয়ে থাকা সাপ পাগলের মতো ছুটে আসে। রাজের সাপ ধরার বিষয়টি অবিশ্বাস্য। রাজের সাপ ধরার ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি করেছে।

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement