২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আল্লাহই দেখবেন...

সোমবার বাড্ডা লিংক রোডের ওই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে - ছবি - বিবিসি

ঢাকার একটি ব্যস্ত সড়কের ওপর একটি মোটরসাইকেল আগুনে জ্বলছে। যারাই সেটির আগুন নেভাতে যাচ্ছেন, একজন ব্যক্তি হেলমেট হাতে তাদের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন। জ্বলন্ত বাইকের ওপর পাঞ্জাবি পরা ওই ব্যক্তি আরো কিছু জিনিস ছুঁড়ে মারছেন।

সোমবার বাড্ডা লিংক রোডের ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

বাড্ডা থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম শওকত আলী। সোমবার সকালের দিকে বাড্ডা লিংক রোডে উত্তেজিত হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে নিজেই আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন।

গুলশান থানার ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার রবিউল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘অফিস আওয়ারে গুলশানের লিংক রোডে অনেক যানজট হয়। তখন মোটরসাইকেলগুলো রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখলে গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতার তৈরি হয়।’

‘এজন্য দায়িত্বরত সার্জেন্ট কয়েকজন মোটরসাইকেল চালকের কাগজপত্র নিয়ে নেন। কয়েকজনকে মামলা দেয়া হলেও শওকত আলীকে মামলা দেয়ার আগেই তিনি নিজের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।’

এরপর তাকে ও মোটরসাইকেলটিকে বাড্ডা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, শওকত আলীর আগে কেরানীগঞ্জে স্যানিটারি পণ্যের একটা দোকান ছিল। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর গত দুই-তিনমাস ধরে তিনি মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন।

সেখানে উপস্থিত একজন পুলিশ সার্জেন্ট বলছেন, কাগজপত্র নেয়ার পর শওকত আলী মামলা না দেয়ার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।

ক্ষুব্ধ মোটরবাইক চালক শওকত আলীর সাথে কথা বলেছে বিবিসি বাংলা। তিনি জানান, গত সপ্তাহেই পুলিশ তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দিয়েছিল রাইড শেয়ারিং অ্যাপের পরিবর্তে মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতে যাত্রী পরিবহণের কারণে। এরপর যখন আবার পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা দেবে বলছিল, তখন তিনি ক্ষোভে দুঃখে নিজের গাড়ি নিজেই জ্বালিয়ে দিয়েছেন।

তিনি জানান, তার একটা স্যানিটারি দোকান ছিল। কিন্তু লোকসানের কারণে সেটা এখন বন্ধ। তাই স্বল্প পুঁজি নিয়ে সংসার চালানোর জন্য রাইড শেয়ারিংয়ের কাজ শুরু করেছিলেন। মাথার ওপরেও অনেক দেনা রয়েছে।

এখন কী করবেন জানতে চাইলে তিনি বলছেন, আল্লাহই দেখবেন।

নিজের গাড়িতে উত্তেজিত হয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই এর পক্ষ বিপক্ষে নানা মন্তব্য করেছেন।

তৌহিদ মিজান লিখেছেন, কতটা অসহ্য হলে নিজের শখের জিনিসে নিজে হাতে আগুন দেয়!

মোহাম্মদ বিপু লিখেছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ।

আর আহমদ রানা মির লিখেছেন, গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজ এবং সঠিক নিয়মে ড্রাইভ করলে পুলিশ যন্ত্রণা করবে না।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement