২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

শ্রীপুরে পেট্রোল ঢেলে ব্যবসায়ীকে খুনের অভিযোগ

বাবা ও ২ ভাইসহ আহত ৫
আরিফ হোসেন - ছবি : নয়া দিগন্ত

গাজীপুরের শ্রীপুরে এক ব্যবসায়ীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতা ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ও দু’ভাইসহ পাঁচজন অগ্নিদগ্ধ ও আহত হয়েছেন।

গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বেশি চাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে দ্বগ্ধ ওই ব্যবসায়ী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

নিহতের নাম, আরিফ হোসেন (২৬)। তিনি শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয় খালি গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে।

আহত ও দ্বগ্ধরা হলেন, নিহতের বাবা জজ মিয়া, নিহতের দু’ভাই মোফাজ্জল হোসেন ও সাখাওয়াত হোসেন, প্রতিবেশী সজিব এবং রুবেল (সাখাওয়াতের সমুন্ধি)।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেন ও নিহতের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) রাতে শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি তোফাজ্জল সরকার গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে স্থানীয় তেলিহাটি চৌরাস্তা মোড়ে ভাই ভাই ট্রেডার্সে যান। গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য বেশি চাওয়া হয়েছে এমন অভিযোগে দোকান মালিক মোজাম্মেলের সাথে তার বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। এ খবর পেয়ে তোফাজ্জলের ভাই মোফাজ্জল সরকার ও তাইজু সরকার দলবল নিয়ে এসে দোকানে হামলা চালিয়ে মারধর করে। এ সময় তারা মোটরসাইকেল থেকে পেট্রোল বের করে দোকানে এবং আরিফ, তার ভাই সাখাওয়াত ও সাখাওয়াতের সমুন্ধি রুবেলের শরীরে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে আগুনে দ্বগ্ধ হন আরিফ, সাখাওয়াত এবং রুবেল। ঘটনার সময় দোকান মালিক মোজাম্মেল ও প্রতিবেশী সজিব তাদেরকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা তাদেরকেও মারধর করে আহত করে।

এলাকাবাসী অগ্নিদ্বগ্ধ ও আহতদের উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে গুরুতর অবস্থায় অগ্নিদ্বগ্ধ আরিফকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে নিয়ে ভর্তি করে। হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চার দিন পর সোমবার মধ্যরাতে আরিফ হোসেন মারা যান।

ওসি জানান, এ ঘটনায় নিহতের ভাই তোফাজ্জল হোসেন শুক্রবার শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন। মামলায় তেলিহাটি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি তোফাজ্জল সরকারসহ তার দু’ভাই মোফাজ্জল সরকার ও তাইজ উদ্দিন সরকারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা একই গ্রাম তেলিহাটির ফালু সরকারের ছেলে। এছাড়াও মামলায় আরো ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে মামলার আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি তোফাজ্জল সরকার বলেন, আমরা সবসময় ৯০০ টাকায় গ্যাস সিলিন্ডার ক্রয় করি। সন্ধ্যায় আমি গ্যাসভর্তি সিলিন্ডার কেনার জন্য তেলিহাটি চৌরাস্তা যাওয়ার পর দোকান মালিক মোজাম্মেল আমার কাছে এক হাজার ৫০ টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দোকান মালিক ও তার লোকজন আমাকে মারধর করে। এ সময় তারা নিজেরা দোকানের মালামাল ভাংচুর করে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement