২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হরিরামপুরে মরিচের কেজি ৩ টাকা : ফেলে দিচ্ছেন কৃষক

মরিচের কেজি ৩ টাকা, বিক্রি না করে ফেলে দিচ্ছেন কৃষক - ছবি- নয়া দিগন্ত

কাঁচা মরিচ প্রতি কেজির দাম তিন থেকে পাঁচ টাকা। অথচ মরিচ তোলা ও পরিবহন খরচ হয় সাত টাকা। কিন্তু পাইকারি বাজারে মরিচের চাহিদা নেই। তাই কৃষকদের কেউ কেউ রাগে-কষ্টে মরিচ বিক্রি না করে ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা বাজারে পাইকারি এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

সরেজমিনে মরিচের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার ঝিটকাতে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে অনেক কৃষক ঠিকমতো মরিচ তুলতে না পারলেও অল্প কিছু মরিচ নিয়ে আসছেন। সেই মরিচও দাম পাচ্ছে না তারা। অনেকে বিক্রিও করতে পারছেন না। তাই ন্যায্য মূল্য ও ক্রেতা না পেয়ে ক্ষোভে দুঃখে অনেকে মরিচ বিক্রি না করে বাজারের পাশে ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন।

কৃষি অফিস সূত্র বলছে, এ বছর মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে এক হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে। উপজেলার বাল্লা, গালা আর গোপীনাথপুর ইউনিয়নে মরিচের বেশি চাষ হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয়েছে উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নে।

উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের বাস্তা এলাকার মরিচ চাষি আজাদ জানান, ১০ বিঘা জমিতে দুই ভাই মিলে মরিচ চাষ করেছেন। মাস খানেক আগে ১২ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি করলেও এখন পাঁচ টাকা করে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাদের প্রতি কেজি মরিচ তুলতেই খরচ হচ্ছে পাঁচ টাকা। পরিবহন খরচ কেজি প্রতি এক থেকে দুই টাকা। প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ কেজি মরিচ বিক্রি করতে পারেন তিনি।

মরিচ চাষি মতি মিয়া জানান, দুই বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। তবে মরিচের দাম কমে যাওয়ায় চিন্তায় আছেন।

গালা ইউনিয়নের কৌড়ী গ্রামের নুরু মিয়া জানান, পাঁচ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন তিনি। ঝিটকা বাজারে ৯০ কেজি মরিচ এনে তিন টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন।

পাড়াগ্রাম এলাকার কৃষক প্রদীপ সরকার জানান, তিন বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন তিনি। মঙ্গলবার বাজারে এনেছিলেন ৪০ কেজি মরিচ। যা ক্ষেত থেকে তুলতে ও বাজার পর্যন্ত আনতে তার খরচ হয়েছে ১৮০ টাকা। কিন্তু বাজারে দাম বলছে ১২০ টাকা, যা কেজি প্রতি তিন টাকা। তাই রাগে কষ্টে তিনি মরিচ বিক্রি না করে ফেলে দিয়েছেন।

গোপীনাথপুর গ্রামের ফারুক ও ইউসুফ জানান, ৯০ শতক জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। ৬৮ কেজি মরিচ নিয়ে বাজারে এসেছেন। কেউ দামও জিজ্ঞেস করছে না।

হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আব্দুল গফ্ফার মুঠোফোনে জানান, এ বছর হরিরামপুরে এক হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে। আগের চেয়ে উপজেলায় মরিচের উৎপাদন অনেকগুণে বেড়েছে। ‘সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের’ দিকে নজর দিলে এ সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ বের করতে পারব।


আরো সংবাদ



premium cement