২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজবাড়ীতে পল্লী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণের মামলা, বিপাকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার

শিশু ধর্ষণে অভিযুক্ত খোরশেদ ডাক্তার - ছবি- সংগৃহীত

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মেঘনা মোল্লাপাড়া গ্রামে আট বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পল্লী চিকিৎসক খোরশেদ মোল্লা ওরফে খোরশেদ ডাক্তারের (৬৫) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ৩০ মে নির্যাতনের শিকার শিশুটির মা- খোরশেদ ডাক্তারের বিরুদ্ধে পাংশা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তবে মামলা দায়েরের ১৫ দিনেও আসামি গ্রেফতার হয়নি। উল্টা ভিক্টিম পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। অথচ পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অভিযোগ। 

নির্যাতনের শিকার শিশুটি মেঘনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। অপর দিকে খোরশেদ ডাক্তার মেঘনা মোল্লাপাড়া গ্রামের মৃত তৈছা মোল্লার ছেলে। মেঘনা বাজারে তার একটি ওষুধের ফার্মেসি রয়েছে।

শিশুটির মায়ের অভিযোগ, খোরশেদ ডাক্তার ও তার ছেলেরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য তাকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তারা এলাকার ধনী প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না। এ কারণে তার নামে মামলা করতেও দেরি হয়েছে।

শিশুটির মা বলেন, ‘খোরশেদ ডাক্তার আমাদের প্রতিবেশী। আমার স্বামী তার বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করেন। গত ১০ মে দুপুর ২টার দিকে আমার মেয়ে খোরশেদ ডাক্তারের পুকুর পাড়ে খেলা করছিল। এ সময় খোরশেদ আমার মেয়েকে তার ক্ষেত থেকে ভুট্টা তোলার কথা বলে ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে যান। সেখানে তিনি আমার মেয়ের মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এরপর খোরশেদ আমার মেয়েকে ছেড়ে দিলে মেয়ে কান্না করতে করতে বাড়িতে আসে। আমি কান্নার কারণ জানতে চাইলে ঘটনা খুলে বলে। তখন আমার মেয়ের প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমি আমার স্বামীকে জানাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘খোরশেদ প্রভাবশালী হওয়ায় ও আমার স্বামী তার বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করায় সবদিক বিবেচনা করে আমি ও আমার স্বামী আমার মেয়েকে গোপনে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করাই। কিন্তু এতে আমার মেয়ের রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় ৩০ মে আমরা তাকে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানকার চিকিৎসক আমার মেয়েকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠান। পরে ওই দিনই খোরশেদ ডাক্তারের বিরুদ্ধে পাংশা থানায় একটি মামলা দায়ের করি।’

মামলা দায়েরের ১৫ দিনেও আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি। এ প্রসঙ্গে ধর্ষণের শিকার শিশুটির মা বলেন, ‘এখন খোরশেদ ডাক্তার ও তার ছেলেরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তারা আমার বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে চাচ্ছে। আমি খুব আতঙ্কে দিনযাপন করছি। আমার দাবি, লম্পট খোরশেদকে গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।’

এ বিষয়ে খোরশেদ আলমের ছেলে ঝন্টু মোল্লা বলেন, বাবা একজন বয়স্ক মানুষ। তার সুনাম ক্ষুণ্ন করে ফায়দা হাসিলের জন্য একটি মহল এই মিথ্যা নাটক সাজিয়ে মামলা করে তাদের হয়রানি করছে।

পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মাসুদুর রহমান বলেন, ‘মেঘনা মোল্লাপাড়া গ্রামে শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি খোরশেদ মোল্লা পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

শিশুটির পরিবারকে হুমকি দেয়ার বিষয়ে ওসি বলেন, ‘কেউ যদি ভিকটিমের পরিবারকে হুমকি দিয়ে থাকে তাহলে তারা থানায় এসে জিডি করুক। আমরা অবশ্যই আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’


আরো সংবাদ



premium cement