২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

বাড়ির আঙ্গিনায় হরিণ, শখ থেকে বাণিজ্যিকরণের স্বপ্ন

বাড়ির আঙ্গিনায় হরিণ, শখ থেকে বাণিজ্যিকরণের স্বপ্ন - ছবি : নয়া দিগন্ত

এখন আর হরিণ শিকার করতে সুন্দরবন যেতে হবে না। রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া সড়কের মোহনপুরে রিয়াজ মামুদের খামারে আসলেই হবে। মোহনপুর গ্রামের রিয়াজ দুই বছরে দু’টি হরিণ থেকে এখন ৬টি হরিণের খামারের মালিক হয়েছেন। রিয়াজের ছাত্রাবস্থায় হরিণ পালনের শখ ছিল। তার সেই শখ নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় দুই হরিণ পালনের মাধ্যমে এখন ৬ লাখ টাকা মূল্যের ৬টি হরিণের মালিক হয়েছেন।

রাজবাড়ীর কালুখালীর মোহনপুর গ্রামের জনাব আলী মন্ডলের ছেলে মো: রিয়াজ মাহমুদ (৩০)। ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স শেষ করেন। তারপর বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রকল্পে চাকরি নেন তিনি। কিন্তু হরিণ পালনের ভুত তার মাথায় থাকায় তার ওই চাকুরীতে মন বসচ্ছিল না। তাই সে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ না হয়ে গেলে হরিণ পালনের প্রবল ইচ্ছা নিয়ে ফিরে আসেন বাড়ি। এ জন্য সে পুযোগও খুঁজতে থাকে।

বন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিয়ে ২০১৮ সালে শখের বশে দুটি হরিণ পালন শুরু করেন তিনি। সেই দুটি থেকে এখন মোট ৬ টি হরিণ হয়েছে তার খামারে। নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় শখের বশে হরিণ পালন করে অভাবনীয় সাফল্যে অর্জন করেছেন রাজবাড়ীর রিয়াজ মাহমুদ। চিড়িয়াখানা বা পার্কে হরিণের দেখা মিললেও বাড়ির আঙ্গিনায় হরিণের পাল দেখা একটি অসাধ্য ব্যাপার। আর এই অসাধ্য কাজটিকেই সাধ্য করেছেন রিয়াজ মাহমুদ।

এখন তিনি স্বপ্ন দেখছেন ভবিষ্যতে এই খামারটি সম্প্রসারণ করে দুই শতাধিক হরিণ পালনের। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে সেটি সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চিত এই যুবক। আইনি জটিলতা থাকার কারণে তাকে এগোতে হচ্ছে ধীর গতিকে। তবে তিনি হাল ছাড়তে নারাজ।

তরুণ এই উদ্যেক্তা মো. রিয়াজ মাহমুদ বলেন, হরিণ এখন বিলুপ্তীর পথে। এই প্রাণিকে টিকিয়ে রাখতে হলে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। হরিণ একটি লাভজনক প্রাণিও বটে। এটিকে যদি বাণিজ্যিক ভাবে পালনের জন্য সরকার আইনি প্রক্রিয়া সহজজাত করেন তাহলে এটি দেশের অর্থনৈতিক খাত অনেক ভূমিকা রাখতে পারবে। তিনি আরো বলেন, হরিণ যাতে সবাই পালন করতে পারে সে জন্য নীতিমালা শিথিলসহ ট্যাক্স কমানো ও লাইসেন্স গণহারে দেয়া উচিত। হরিণের বিলুপ্তী ঠেকাতে গবাদী পশুর ন্যায় হরিণের খামারের অনুমোদন দেয়া উচিত। রিয়াজ নিজেই প্রতিদিন তার খামারের হরিণগুলোর খাবার দেয়াসহ সার্বিক যত্ন নেন।

বন্যপ্রাণী পালনের উদ্যেক্তা রিয়াজ বলেন, বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে ২০১৮ সালে দুটি হরিণ কিনে আনি বরিশালের একটি খামার থেকে। সে দুটি হরিণ থেকে এখন আমার এখানে ছয়টি হরিণ হয়েছে। যার প্রতিটি সরকারি মূল্য ৭০ হাজার টাকা করে। বর্তমান ৪৪ শতাংশ জমির উপর আমার এই খামারটি। এটিকে সম্প্রসারণ করে এক একর জমির উপর করার ইচ্ছা রয়েছে। সরকারি অনুমতি পেল সেটি করার স্বপ্ন দেখছি।
যেখানে দুই শতাধিক হরিণ পালন করা যাবে। রিয়াজ বলেন, হরিণ যাতে সবাই পালন করতে পারে সে জন্য নীতিমালা শিথিলসহ ট্যাক্স কমানো ও লাইসেন্স দেয়া উচিত। হরিণের বিলুপ্তী ঠেকাতে গবাদী পশুর ন্যায় হরিণের খামারের অনুমোদন দেয়া উচিত।

মোহনপুর গ্রামের যুবলীগ নেতা জিয়া মোল্লা ও শাহাদত হোসেন বলেন, রিয়াজের হরিণ পালনে লাভের অংশ দেখে আমরাসহ এলাকার অনেক বেকারযুবকই এখন হরিণ পালন করে স্বাবলম্বী হতে চাইছেন। অনেকই প্রতিদিন রিয়াজের হরিণ খামারে এসে তার কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন।তবে সরকারী অনুমতি না মেলায় তাদের সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারছেন না।

কালুখালী উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা: প্রদীপ কুমার সরকার বলেন, হরিণ যেহেতু একটি অর্থকারি প্রাণি সেহেতু বাণিজ্যিক ভাবে হরিণের খামার তৈরি করা গেলে দেশের অর্থনৈতিকখাতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। কালুখালীতে যে খামারটি রয়েছে সেটিতে আমরা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সব সময় সহযোগিতা করছি। এ সহযোগিতার ধারা অব্যহত থাকবে।

রাজবাড়ী জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা: ফজলুল হক বলেন, হরিণ বাণিজ্যিক ভাবে হরিণের খামার করলে দেশের অর্থনৈতিকখাতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। কালুখালীতে যে খামারটি রয়েছে সেটিতে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সব সময় সহযোগিতা করে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সেতু ভাঙ্গার প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে! নাশকতার মামলায় চুয়াডাঙ্গা বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে হারল্যানের পণ্য কিনে লাখপতি হলেন ফাহিম-উর্বানা দম্পতি যাদের ফিতরা দেয়া যায় না ১৭ দিনের ছুটি পাচ্ছে জবি শিক্ষার্থীরা বেলাবতে অটোরিকশা উল্টে কাঠমিস্ত্রি নিহত রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন

সকল