২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাটুরিয়া ঘাটে থামছে না মানুষের ভিড় : ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি

অ্যাম্বুলেন্স ফেরিতে উঠামাত্র শত শত মানুষ হুমড়ি খেয়ে উঠে যাচ্ছে ফেরিতে। - ছবি : নয়া দিগন্ত

মৃত্যুভয় করোনা, বিজিবি-পুলিশের বাধা, যানবাহনের অভাব, প্রখর রোদ-গরম, পথে ভেঙ্গে ভেঙ্গে যাত্রা ও হেঁটে চলা- কোনোকিছুই ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের স্রোত থামাতে পারছে না। রাজধানী ঢাকা থেকে ঢাকা-আরিচা ও ঢাকা-সিংগাইর রোড দিয়ে মানুষ আসছে পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে। পাটুরিয়া ঘাটে পারের অপেক্ষায় শত শত মানুষ অধীর অপেক্ষায় থাকছে কখন একটা রোগী কিংবা লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স আসবে আর ফেরিতে উঠবে। অ্যাম্বুলেন্স ফেরিতে উঠামাত্র শত শত মানুষ হুমড়ি খেয়ে উঠে যাচ্ছে ফেরিতে।

সোমবার বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত এ চিত্র বহাল রয়েছে ঘাটগুলোতে।

এদিকে দূর-দূরান্তের মানুষদের ও ছোট গাড়ি ঠেকাতে গত তিন দিন যাবত রাজধারী ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জ জেলার প্রবেশমুখ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বারবাড়িয়া ও ঢাকা-সিংগাইর সড়কের ধল্লা এলাকায় বিজিবি চেকপোস্ট বসিয়ে জেলার বাইরের কোনো গাড়ি ঢুকতে দিচ্ছে না। পাটুরিয়া ঘাট এলাকা ও আশপাশের এলাকাতেও চলছে বিজিবির টহল ও চেকপোস্ট। সাথে পুলিশের কার্যক্রম।

কোনোকিছুই দমাতে পারছে না ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা। এর মধ্যেই মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে ফেরিতে গাদাগাদি করে নদী পার হচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ। সময় যত যাচ্ছে, চাপ তত বাড়ছে মানুষের। তবে সীমিতসংখ্যক ফেরি চলাচলের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব যাত্রী। লাশ ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স এবং জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি ফেরিতে ওঠার সময় যাত্রীরাও হুড়োহুড়ি করে লাফিয়ে উঠে পড়ছেন। 

ঘাট সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে আসা হাজারো যাত্রী পাটুরিয়ায় এসে ভিড় করছেন। এসব যাত্রী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিভিন্ন জেলায় ঈদ উপলক্ষে গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন। সকাল থেকে সাতটি ফেরিতে যাত্রী ও জরুরি যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।

তবে বিকেলে যাত্রীর চাপ সামাল দিতে ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এদিকে পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রীদের ফেরাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার টেপড়া এলাকায় উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে। বিজিবির সদস্যরাও সেখানে একই দায়িত্ব পালন করছেন। পাটুরিয়া থেকে প্রায় আট কিলোমিটার আগে টেপড়ায় বিভিন্ন প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। এসব যানবাহনকে উল্টো পথে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে ঘরমুখী মানুষ দুর্ভোগ সহ্য করে অটোরিকশা, রিকশা ও ভ্যানে করে রওয়ানা হচ্ছেন, এমনকি হেঁটেও অনেকে ঘাটে আসছেন।

বিকেল পৌনে ৫টার সময় দেখা যায়, পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় কয়েক শ’ যাত্রী নদী পারের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব যাত্রী দীর্ঘসময় আটকে থাকায় প্রচণ্ড অস্থির হয়ে উঠেছেন। শৌচাগার ও খাবার হোটেলের অভাবে নারী ও শিশু যাত্রীদের ভোগান্তি আরো বেড়ে গেছে।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবির বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যাত্রী পারাপারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও যখন অ্যাম্বুলেন্স এবং জরুরি পণ্যবাহী (পচনশীল পণ্য, দুধ, শিশুখাদ্য, ওষুধ) গাড়ি ফেরিতে ওঠানো হয়, তখনই যাত্রীরা ফেরিতে উঠে পড়েন। কোনো বাধাতেই যাত্রীদের ফেরানো যাচ্ছে না। ফেরি আসার পরই তারা তাড়াহুড়ো করে ফেরিতে উঠে পড়ছেন।

ফেরিতে যাত্রী পারাপারের বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো: জিল্লুর রহমান বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শুধু লাশ, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে এসব গাড়ি লোড ও আনলোড করার সময় যাত্রীরা ফেরিতে ওঠে পড়েন। নিষেধ ও বাধা দেয়ার পরও তাদের আটকানো যাচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement