১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মুন্সীগঞ্জে ট্রিপল মার্ডারের প্রধান আসামি সৌরভ গ্রেফতার

মুন্সীগঞ্জে ট্রিপল মার্ডারের প্রধান আসামি সৌরভ গ্রেফতার - ছবি- নয়া দিগন্ত

ট্রিপল মার্ডারের প্রধান আসামি সৌরভকে গ্রেফতার করেছে মুন্সীগঞ্জ ডিবি পুলিশ। বুধবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মিডিয়ার কাছে বিষয়টি গোপন করা হয় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ তাকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি।

এ দিকে সৌরভের মায়ের অভিযোগ তাকে টাকার জন্য মারধর করা হয়েছে। বারবার টাকার জন্য ফোন করে মুন্সীগঞ্জ ডিবি পুলিশ। এমন অভিযোগ সৌরভের মায়ের।

বৃহস্পতিবার পুলিশ জানিয়েছে, ট্রিপল হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত এজহার নামীয় সাতজনসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, মুন্সীগঞ্জে প্রথমবারের মতো কিশোর গ্যাংরা পরিকল্পিতভাবে তিনজনকে হত্যা করেছে। মামলার প্রধান আসামি সৌরভকে বুধবার রাতে চাঁদপুর থেকে গ্রেফতার করে মুন্সীগঞ্জে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির ওসি মো: মোজাম্মেল হক মামুন।

তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সৌরভের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পরে সৌরভের পরিবারের কাছে টাকা চাওয়ার বিষয়টি হাস্যকর।

হত্যা মামলার প্রধান আসামির পরিবারের কাছে পুলিশ টাকা চাওয়ার অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে ডিবি পুলিশ।

সৌরভকে গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে সরাসরি কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ। সৌরভের উড়ো চিঠির বিষয়টি ডিবি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অস্বীকার করেছে। তবে ওই উড়ো চিঠিটির বিষয়ে পুলিশ আমলে নিচ্ছে না।

পুলিশ বলছে, সৌরভ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছে। জবানবন্দি রেকর্ড হলেই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।

বাদীর দাবি, সৌরভকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসা করলেই তিনজকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের তথ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে চলতি বছরের ২৪ মার্চ গভীর রাতে ইভটিজিংয়ের বিষয় নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। পরে চালের বস্তা থেকে চাল বের করার ছয়টি ভোঙ্গা দিয়ে উপর্যপুরি পেটে আঘাত করে হত্যা করা হয় তিনজনকে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ইমন পাঠান। মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত্যু হয় আহত সাকিবের। পরের দিন বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান পৌরসভার নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কাউন্সিলর প্রার্থী আওলাদ হোসেন মিন্টু প্রধান। ঘটনার পর তিনজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অপর আসামি আপন তিনভাই শামীম প্রধান, সিহাব প্রধান ও সাকিব প্রধানকে খুঁজছে পুলিশ।

ঘটনার এজাহার থেকে জানা যায়, সৌরভ, সিহাব ও শামীমদের ভোঙ্গার আঘাতে অপর পক্ষের ইমন হোসেন পাঠান (২২), মো: সাকি হোসেন (১৯) ও আওলাদ হোসেন মিন্টু নিহত হন।

এ ঘটনায় ২৫ মার্চ দিবাগত রাত ১২টার পর আওলাদ হোসেন মিন্টু প্রধানের স্ত্রী খালেদা আক্তার পুতুল একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মুন্সীগঞ্জ সদর থানায়। ওই মামলায় এজহার নামীয় জামাল হোসেন (৫২), মো: জাহাঙ্গীর হোসেন (৫০), মো: রনি (৩২), মো: ইমরান হোসেন (২০), রাহুল প্রধান (২২), অভি প্রধান (২০) ও সৌরভসহ ১০ জনকে গ্রেফতার হয়েছে।

নিহত পরিবারের লোকজন জানায়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীদের নাম ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর তারা দায় এড়াতে বিভিন্নভাবে দৌঁড়ঝাপ শুরু করে। নিহত মিন্টু প্রধানের শ্বশুরবাড়ি পর্যন্ত গিয়ে বিভিন্ন প্রলোভনে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছে আসামিপক্ষ।


আরো সংবাদ



premium cement