২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পদ্মার বাল্কহেড ও স্পিডবোট সংঘর্ষ

সরকারি চাকরি করা হলো না শাহাদাতের

সরকারি চাকরি করা হলো না শাহাদাতের - ছবি সংগৃহীত

পরিবারের ছোট ছেলে শাহাদাত হোসেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টর্স শেষ করে চাকরির জন্য বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেছেন। ঈদে বাড়িতে আসার সময় সোমবার সকালে পদ্মায় বাল্কহেড ও স্পিডবোটের সংর্ঘষে মারা যান তিনি।

শাহাদাত হোসেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খণ্ড ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামের বাসিন্দা।

পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খণ্ড ইউনিয়নের আদম আলী মোল্লার ছয় ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে সবার ছোট শাহাদাত হোসেন। ছোট হওয়ায় তার পড়াশুনার দিকে পরিবারের সবার নজর বেশি ছিল। আর শাহাদাতও মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন প্রতিটি ক্লাসে।

আল-বাইতুল মামুর সিনিয়র মাদরাসা থেকে দাখিল ও শিবচর উপজেলার বহরামগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচ এস সি পাস করে শাহাদাত ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন শাহাদাত। শিক্ষা জীবন শেষ করে সরকারি চাকরির জন্যে বিভিন্ন দফতরে আবেদনও করেছিলেন।

ঘটনার দিন ঈদ করতে বাড়িতে আসছিল শাহাদাত হোসেন। বাড়িতে আসা আর হলো না শাহাদাতের। সোমবারের বাল্কহেড আর স্পিডবোটের সংর্ঘষে মারা যান শাহাদাত। তার মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না পরিবার। শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো এলাকায়।

শাহাদাতের বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সব আশা-ভরসা শেষ হইয়া গেলো। আমরা আর ভাই-বোন বেশি পড়াশুনা করতে পারি নাই। আমাদের ছোট ভাই কলিজার টুকরাকে পড়াশুনা করাইছি। সে বড় চাকরি করে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে। সেটা আর হলো না। এখন আমরা কি নিয়া বাচুম।’

শাহাদাতের বন্ধু শাহিন মিয়া জানান, ‘ছোট থেকেই শাহাদাত আর আমি বড় হইছি। ও অনেক মেধাবী ছিল। জগন্নাথ থেকে প্রথম শ্রেণীতে পাস করেছে। এখন সরকারি চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করছে। হয়ত করোনা না থাকলে এত দিন চাকরি হয়েও যেত।’

উল্লেখ্য, সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা একটি স্পিডবোটের সাথে কাঠালবাড়ী এলাকায় বাল্কহেডের সাথে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ২৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। গুরুতর আহত উদ্ধার হয় আরো পাঁচজন যাত্রী।


আরো সংবাদ



premium cement